ETV Bharat / city

নতুন জীবন পেয়েছে আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত কলকাতার 285টি গাছ

author img

By

Published : Oct 4, 2020, 5:50 PM IST

আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত কলকাতা শহরের প্রায় 1600টি গাছ । এরমধ্যে প্রায় 300টি গাছকে পুনঃস্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছিল কলকাতা পৌরনিগম । যার মধ্যে পুনর্জীবন পেয়েছে 285টি গাছ ।

কলকাতা গাছ
কলকাতায় পুনর্জীবন 285টি গাছের

কলকাতা, 4 অক্টোবর : দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুরে নর্দান পার্কে 100 বছরের পুরোনো বটগাছটি বহু ঘটনার সাক্ষী । বটগাছটিকে ঘিরে রয়েছে স্থানীয় মানুষের আবেগ । এলাকার বহু প্রজন্মের স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে বটগাছটিকে ঘিরে । ছোটোরা এই গাছের চারধারে খেলে বেড়িয়েছে । প্রবীণ নাগরিকরা বিকেলে এই গাছের তলায় বসে সময় কাটিয়েছেন । 20 মে ঘূর্ণিঝড় আমফানের দাপটে তছনছ হয়ে গেছিল কলকাতা শহর । ঝড়ের দাপটে সেই রাতে মাটি থেকে উপরে পড়ে 100 বছরের বটগাছটিও । এলাকার মানুষ পরিজন বিয়োগের শোকাচ্ছন্ন হয়ে পড়েন । প্রাণ বাঁচাতে পুনঃস্থাপন করা হয় গাছটিকে । বহু চেষ্টার পর ক্রমশ নতুনরূপে প্রাণ ফিরে পেয়েছে 100 বছরের সেই বটগাছটি । এইরকমই প্রায় 1600 গাছ আমফানের দাপটে ভেঙে পড়েছিল শহরে । এরমধ্যে অনেক পুরোনো গাছ রয়েছে যেগুলো 25 বছরের বেশি বয়স । বট, অশ্বত্থ, কৃষ্ণচূড়া, বকুল বিভিন্ন প্রজাতির গাছ ভেঙে পড়েছিল সেই ভয়ংকর ঝড়ের দাপটে । কলকাতার ভূগর্ভস্থে বিভিন্ন নিকাশি নালা, জলের পাইপ, বৈদ্যুতিন তার গেছে । ফলে গভীরে শিকড় না যেতে পেরে গাছের গোড়া দুর্বল হয়ে যাচ্ছে ।

কলকাতা পৌরনিগম সিদ্ধান্ত নেয় 25 বছরের পুরোনো যেসব গাছ গোড়া থেকে উপড়ে পড়েছে সেইসব গাছগুলিকে পুনঃস্থাপন করা হবে । এরপর শহরে প্রায় 300টি গাছকে পুনঃস্থাপন করা হয় যার মধ্যে 285টি গাছকে নতুন জীবন ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছে । 70 নম্বর ওয়ার্ড ভবানীপুর এলাকায় সবথেকে বেশি সংখ্যক গাছ পুনঃস্থাপন করা হয়েছে । এই ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর অসীম বসু কুড়িটি বৃক্ষকে পুনঃস্থাপন করেন । সেই কুড়িটি গাছই ফিরে পেয়েছে তাদের নতুন জীবন । নর্দান পার্ক, রয় স্ট্রিট, জাস্টিস চন্দ্র মাধবপুর রোড, চক্রবেরিয়া রোড, রবীন্দ্র সরোবর, সুভাষ সরোবর এলাকায় গোড়া থেকে উপড়ে পড়া বৃক্ষগুলিকে পুনঃস্থাপন করা হয় । সুভাষ সরোবরে 37টি বৃক্ষকে পুনঃস্থাপন করা হয় তার মধ্যে 33টি গাছ নতুন করে জীবন ফিরে পেয়েছে । রবীন্দ্র সরোবরে 144টি গাছকে পুনঃস্থাপন করা হয় তার মধ্যে 111টি পুনর্জীবন পেয়েছে । যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ 65টি বৃক্ষকে পুনঃস্থাপন করেছে । তার মধ্যে 65টি পুনর্জীবন পেয়েছে ।

কলকাতা পৌরনিগমের মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, "সঠিক সময়ে গাছগুলিকে পুনঃস্থাপন করা গেছে । সঠিক পরিচর্যায়ে গাছগুলি নতুন জীবন ফিরে পেয়েছে । প্রকৃতিও সাহায্য করেছে গাছগুলিকে জীবন ফিরিয়ে দিতে । এবছর ভালো বৃষ্টি হয়েছে । বৃষ্টি ভালো হওয়ায় গাছের গোড়া মজবুত হয়েছে । নিয়মিত যত্ন নেওয়া হয়েছে এই বৃক্ষগুলির । এটা খুবই আনন্দের কথা শহরবাসীর কাছে যে, পুরানো বৃক্ষগুলি জীবন ফিরে পেয়েছি । আগামী দিনে আরো গাছকে পুনঃস্থাপন করা হবে ।" পুনঃস্থাপন গাছগুলি যাতে সঠিকভাবে বেড়ে ওঠে তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে কলকাতা পৌরনিগম । পুরোনো মহীরুহগুলো যখন ভেঙে পড়ে পুনঃস্থাপন করার জন্য কাজগুলির ডালপালা কেটে ছোটো করা হয় । তারপর ক্রেনের সাহায্যে মাটি থেকে তুলে নিয়ে অন্য জায়গায় স্থাপন করা হয় এই গাছগুলিকে। যেসব অংশে ডালপালা কেটে দেওয়া হয়েছে গাছগুলিতে সেই সব জায়গায় ক্ষত তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে । ডালপালা ছাঁটা জায়গাগুলিতে ছত্রাক তৈরি সম্ভাবনা থাকে । তাই 15 দিন পর পর এই বৃক্ষগুলিকে চিকিৎসকরা পরীক্ষা করেন । প্রয়োজনীয় জৈবসার, জল, খাদ্যসামগ্রী ওষুধ দেওয়া হয় । যাতে কোনওমতে পুষ্টির অভাব না হয় ।

কলকাতায় পুনর্জীবন পেয়েছে 285টি গাছ

কলকাতা পৌরনিগমের প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য ও উত্তর বিভাগের প্রধান দেবাশিস কুমার জানিয়েছেন, "একটি 20-25 বছরের পুরোনো গাছ যে পরিমাণে অক্সিজেন তৈরি করে ও কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে, একটা নতুন চারা গাছ সেই পরিমাণে কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে অক্সিজেন তৈরি করতে পারে না । বৃক্ষরোপণ করলেই অক্সিজেনের মাত্রা বেড়ে যাবে ও কার্বন ডাই অক্সাইড মাত্রা কমবে এমন কিন্তু নয় । বাতাসে অক্সিজেনের মাত্রা ঠিক রাখার জন্য পুরোনো গাছকে বাঁচিয়ে রেখে আরো বেশি করে নতুন বৃক্ষরোপণ করতে হবে । তবেই দূষণের মাত্রা কমবে । ঘূর্ণিঝড় আমফানের দাপটে গাছ নষ্ট হওয়ায় বাতাসে অক্সিজেনের ঘাটতি হয়েছে । ফলে শহরে দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে । দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে আদিম ও পুরোনো গাছগুলিকে যেমন সংরক্ষণ করতে হবে সেই সঙ্গেই বাড়াতে হবে নতুন গাছের সংখ্যা । তাই শহরজুড়ে ব্যাপক ভাবে বৃক্ষরোপণ করা হচ্ছে । এমন একটি সংস্থাতে নিয়োগ করা হয়েছে যারা আগামী দু-বছর এই বৃক্ষগুলিকে পরিচর্যা করবে ।"

70 নম্বর ওয়ার্ডের (কাউন্সিলর) ওর্য়াড কো-অডিনেটর অসীম বসু জানিয়েছেন, "এলাকার মানুষের আবেগের সঙ্গে জড়িয়ে আছে 100 বছরের পুরোনো বটবৃক্ষটি। এই গাছটিকে বাঁচাতে পেরে সত্যিই ভালো লাগছে । এলাকার মানুষের আবেগের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এই গাছটি । নিয়মিতভাবে গাছগুলিকে দেখভাল করা হয় । প্রয়োজনীয় সার, মাটি, জল, ওষুধ দেওয়া হচ্ছে এই গাছগুলিতে । ঝড়ের চার মাস পর গাছগুলি ছোটো ছোটো সবুজ পাতায় ভরে উঠেছে ।"

কলকাতা, 4 অক্টোবর : দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুরে নর্দান পার্কে 100 বছরের পুরোনো বটগাছটি বহু ঘটনার সাক্ষী । বটগাছটিকে ঘিরে রয়েছে স্থানীয় মানুষের আবেগ । এলাকার বহু প্রজন্মের স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে বটগাছটিকে ঘিরে । ছোটোরা এই গাছের চারধারে খেলে বেড়িয়েছে । প্রবীণ নাগরিকরা বিকেলে এই গাছের তলায় বসে সময় কাটিয়েছেন । 20 মে ঘূর্ণিঝড় আমফানের দাপটে তছনছ হয়ে গেছিল কলকাতা শহর । ঝড়ের দাপটে সেই রাতে মাটি থেকে উপরে পড়ে 100 বছরের বটগাছটিও । এলাকার মানুষ পরিজন বিয়োগের শোকাচ্ছন্ন হয়ে পড়েন । প্রাণ বাঁচাতে পুনঃস্থাপন করা হয় গাছটিকে । বহু চেষ্টার পর ক্রমশ নতুনরূপে প্রাণ ফিরে পেয়েছে 100 বছরের সেই বটগাছটি । এইরকমই প্রায় 1600 গাছ আমফানের দাপটে ভেঙে পড়েছিল শহরে । এরমধ্যে অনেক পুরোনো গাছ রয়েছে যেগুলো 25 বছরের বেশি বয়স । বট, অশ্বত্থ, কৃষ্ণচূড়া, বকুল বিভিন্ন প্রজাতির গাছ ভেঙে পড়েছিল সেই ভয়ংকর ঝড়ের দাপটে । কলকাতার ভূগর্ভস্থে বিভিন্ন নিকাশি নালা, জলের পাইপ, বৈদ্যুতিন তার গেছে । ফলে গভীরে শিকড় না যেতে পেরে গাছের গোড়া দুর্বল হয়ে যাচ্ছে ।

কলকাতা পৌরনিগম সিদ্ধান্ত নেয় 25 বছরের পুরোনো যেসব গাছ গোড়া থেকে উপড়ে পড়েছে সেইসব গাছগুলিকে পুনঃস্থাপন করা হবে । এরপর শহরে প্রায় 300টি গাছকে পুনঃস্থাপন করা হয় যার মধ্যে 285টি গাছকে নতুন জীবন ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছে । 70 নম্বর ওয়ার্ড ভবানীপুর এলাকায় সবথেকে বেশি সংখ্যক গাছ পুনঃস্থাপন করা হয়েছে । এই ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর অসীম বসু কুড়িটি বৃক্ষকে পুনঃস্থাপন করেন । সেই কুড়িটি গাছই ফিরে পেয়েছে তাদের নতুন জীবন । নর্দান পার্ক, রয় স্ট্রিট, জাস্টিস চন্দ্র মাধবপুর রোড, চক্রবেরিয়া রোড, রবীন্দ্র সরোবর, সুভাষ সরোবর এলাকায় গোড়া থেকে উপড়ে পড়া বৃক্ষগুলিকে পুনঃস্থাপন করা হয় । সুভাষ সরোবরে 37টি বৃক্ষকে পুনঃস্থাপন করা হয় তার মধ্যে 33টি গাছ নতুন করে জীবন ফিরে পেয়েছে । রবীন্দ্র সরোবরে 144টি গাছকে পুনঃস্থাপন করা হয় তার মধ্যে 111টি পুনর্জীবন পেয়েছে । যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ 65টি বৃক্ষকে পুনঃস্থাপন করেছে । তার মধ্যে 65টি পুনর্জীবন পেয়েছে ।

কলকাতা পৌরনিগমের মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, "সঠিক সময়ে গাছগুলিকে পুনঃস্থাপন করা গেছে । সঠিক পরিচর্যায়ে গাছগুলি নতুন জীবন ফিরে পেয়েছে । প্রকৃতিও সাহায্য করেছে গাছগুলিকে জীবন ফিরিয়ে দিতে । এবছর ভালো বৃষ্টি হয়েছে । বৃষ্টি ভালো হওয়ায় গাছের গোড়া মজবুত হয়েছে । নিয়মিত যত্ন নেওয়া হয়েছে এই বৃক্ষগুলির । এটা খুবই আনন্দের কথা শহরবাসীর কাছে যে, পুরানো বৃক্ষগুলি জীবন ফিরে পেয়েছি । আগামী দিনে আরো গাছকে পুনঃস্থাপন করা হবে ।" পুনঃস্থাপন গাছগুলি যাতে সঠিকভাবে বেড়ে ওঠে তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে কলকাতা পৌরনিগম । পুরোনো মহীরুহগুলো যখন ভেঙে পড়ে পুনঃস্থাপন করার জন্য কাজগুলির ডালপালা কেটে ছোটো করা হয় । তারপর ক্রেনের সাহায্যে মাটি থেকে তুলে নিয়ে অন্য জায়গায় স্থাপন করা হয় এই গাছগুলিকে। যেসব অংশে ডালপালা কেটে দেওয়া হয়েছে গাছগুলিতে সেই সব জায়গায় ক্ষত তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে । ডালপালা ছাঁটা জায়গাগুলিতে ছত্রাক তৈরি সম্ভাবনা থাকে । তাই 15 দিন পর পর এই বৃক্ষগুলিকে চিকিৎসকরা পরীক্ষা করেন । প্রয়োজনীয় জৈবসার, জল, খাদ্যসামগ্রী ওষুধ দেওয়া হয় । যাতে কোনওমতে পুষ্টির অভাব না হয় ।

কলকাতায় পুনর্জীবন পেয়েছে 285টি গাছ

কলকাতা পৌরনিগমের প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য ও উত্তর বিভাগের প্রধান দেবাশিস কুমার জানিয়েছেন, "একটি 20-25 বছরের পুরোনো গাছ যে পরিমাণে অক্সিজেন তৈরি করে ও কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে, একটা নতুন চারা গাছ সেই পরিমাণে কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে অক্সিজেন তৈরি করতে পারে না । বৃক্ষরোপণ করলেই অক্সিজেনের মাত্রা বেড়ে যাবে ও কার্বন ডাই অক্সাইড মাত্রা কমবে এমন কিন্তু নয় । বাতাসে অক্সিজেনের মাত্রা ঠিক রাখার জন্য পুরোনো গাছকে বাঁচিয়ে রেখে আরো বেশি করে নতুন বৃক্ষরোপণ করতে হবে । তবেই দূষণের মাত্রা কমবে । ঘূর্ণিঝড় আমফানের দাপটে গাছ নষ্ট হওয়ায় বাতাসে অক্সিজেনের ঘাটতি হয়েছে । ফলে শহরে দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে । দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে আদিম ও পুরোনো গাছগুলিকে যেমন সংরক্ষণ করতে হবে সেই সঙ্গেই বাড়াতে হবে নতুন গাছের সংখ্যা । তাই শহরজুড়ে ব্যাপক ভাবে বৃক্ষরোপণ করা হচ্ছে । এমন একটি সংস্থাতে নিয়োগ করা হয়েছে যারা আগামী দু-বছর এই বৃক্ষগুলিকে পরিচর্যা করবে ।"

70 নম্বর ওয়ার্ডের (কাউন্সিলর) ওর্য়াড কো-অডিনেটর অসীম বসু জানিয়েছেন, "এলাকার মানুষের আবেগের সঙ্গে জড়িয়ে আছে 100 বছরের পুরোনো বটবৃক্ষটি। এই গাছটিকে বাঁচাতে পেরে সত্যিই ভালো লাগছে । এলাকার মানুষের আবেগের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এই গাছটি । নিয়মিতভাবে গাছগুলিকে দেখভাল করা হয় । প্রয়োজনীয় সার, মাটি, জল, ওষুধ দেওয়া হচ্ছে এই গাছগুলিতে । ঝড়ের চার মাস পর গাছগুলি ছোটো ছোটো সবুজ পাতায় ভরে উঠেছে ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.