হাওড়া, 1 এপ্রিল : প্রসূন ব্যানার্জির সামনেই তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভপ্রকাশ করলেন পাঁচলা বিধানসভা এলাকার তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের একাংশ। গতকাল পাঁচলার হাওলি বাগানে সভার আয়োজন করেছিলেন স্থানীয় বিধায়ক গুলশান মল্লিক। সেখানে ছিলেন হাওড়া জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ রায় এবং প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সভাতেই প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভপ্রকাশ করেন পাঁচলা বিধানসভার কয়েকশো তৃণমূল কংগ্রেস নেতা ও কর্মী।
পাঁচলার বিধায়ক গুলশান মল্লিক প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে বলেন, "আপনি আমাদের প্রিয় নেতা। আপনি যা বলবেন, তা মেনেই আমরা কাজ করব। কিন্তু, এলাকার কিছু মানুষের ক্ষোভ আছে। কেন আছে তা জানতে বাগানবাড়ির ভিতর সভার আয়োজন করেছি। বাইরে করিনি।" এরপর তিনি হাওড়া জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ রায়কে বলেন, "আমাদের বুকের ব্যথাটা আপনি যদি না বোঝেন, নির্বাচন করাটা খুবই কঠিন হয়ে যাবে।"
পাঁচলা বিধানসভার গোবিন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অঞ্চল সভাপতি গোরা মাঝি এরপর সকলের সামনেই অভিযোগ করেন, "আমরা যারা তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী প্রত্যেকটা নির্বাচনে বন্দুকের নলের সামনে বা বিরোধীপক্ষের লাঠির সামনে দাঁড়িয়ে নির্বাচন করি, আমাদের তো ক্ষোভ
থাকতেই পারে। নির্বাচনের সময় কোনও MLA বা MP কেস খায় না। আমাদের সদস্যরা কেস খায়। বিরোধী দলের লাঠির ঘা আমাদের মতো কর্মীদের উপর পড়ে। কোনও MLA বা MP-র উপর পড়ে না। দলকে জেতানোর জন্য আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেতানোর জন্য আমরা জীবন বাজি রাখি। কিন্তু, আমরা আমাদের প্রয়োজনে MP সাহেবকে পাই না। সাত বছরে তিনবার ওঁনাকে এলাকায় দেখা গেছে, তাও আবার খেলার মাঠে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় আমরা একটা ব্যানার বা ফেস্টুনও পাইনি। এর থেকে দুঃখের আর কী হতে পারে? সাংসদ বলেছিলেন, মাসে 2 বার পাঁচলার মাটিতে পা রাখবেন। এখানে একটি অফিসও হবে। কিন্তু, আজও আমাদের সাংসদের সঙ্গে দেখা করতে হাওড়ায় যেতে হয়।"
গোরা মাঝি আরও বলেন, "সাংসদের অফিসে গেলেও তাঁর সঙ্গে দেখা হয় না। তিনি দেখা করতে চান না।
সবসময়ই ব্যস্ত থাকেন। অথচ বিধায়ক আমাদের নানাভাবে সাহায্য করেন। আমরা সবাই তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী। আমাদের সিম্বল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই, এসব কথা বলতে খারাপ লাগছে। কিন্তু, বিষয়গুলি তুলে ধরা প্রয়োজন।"
এরপর হাওড়া জেলা তৃণমূল সভাপতি কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, "আপনাদের দুঃখে আমি সমব্যথী। আমি প্রসূন ব্যানার্জির পক্ষ থেকে বলব, যে সব অঞ্চলে উন্নয়ন কম হয়েছে, সেখানে MLA-র রেকমেন্ডেশন অনুযায়ী MP কাজ করবেন। এছাড়াও আমি তাঁকে অনুরোধ করব, হাওড়ার সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের ক্ষেত্রেই যেন MLA-র রেকমেন্ডেশন অনুযায়ী MP টাকা বরাদ্দ করেন। আমি আরও বলব, পরবর্তীকালে আমরা এনিয়ে সব বিধায়কদের সঙ্গে আলোচনায় বসব এবং এই এলাকাগুলির উপর বেশি গুরুত্ব দেব এই অঙ্গীকার করলাম।"
ETV ভারতের তরফে মন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করে এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, "সামান্য সমস্যা হয়েছিল। তা আলোচনার মাধ্যমে মিটে গেছে।"