হাওড়া,13 অগাস্ট : দলীয় নেতাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল । গতকাল হাওড়ার পাঁচলা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মুজিবর রহমানের বাড়িতে ভাঙচুর চালায় একদল দুষ্কৃতী । তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে ।
আমফান ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় 80 শতাংশ নাম ভুয়ো, এই মর্মে জেলাশাসকের দপ্তরে একটি চিঠি দেন পাঁচলা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মুজিবর রহমান। আর তার কয়েকদিন পর তাঁর বাড়িতে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ । বাড়িতে ভাঙচুর করা হয় । সোনার গয়নাও দুষ্কৃতীরা লুট করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ ।
কয়েকদিন আগে কয়েকজন স্থানীয় তৃণমূল নেতা ওই পঞ্চায়েত প্রধানের বিষয়ে একটি বৈঠক করে বলে জানা যায় । ওই বৈঠকে তাঁর সমালোচনাও করা হয় ৷ ওই বৈঠক থেকে তাঁকে রীতিমতো শাসানো হয় বলেও অভিযোগ । এরপর দীর্ঘদিন ধরেই তিনি নাকি এলাকা ছাড়া । অভিযোগ, তিনি এলাকায় ফিরতে চলেছেন, একথা শোনার পরই গতকাল তাঁর বাড়িতে ভাঙচুর চালায় একদল দুষ্কৃতী।
এই প্রসঙ্গে পঞ্চায়েত প্রধান বলেন, মঙ্গলবার পাঁচলার বিধায়ক গুলশান মল্লিকের বাহিনী একটি বৈঠক করে। সেই বৈঠকে তাঁকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তিনি আরও দাবি করেন গত 2 বছর ধরে তিনি বাড়ি ছাড়া। তাঁকে পাঁচলার বিধায়ক গুলশান মল্লিক বারবার চাপ দিচ্ছেন যাতে তিনি প্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দেন। তাঁর আরও দাবি, তিনি জন্মলগ্ন থেকে তৃণমূলের সঙ্গে আছে। কিন্তু স্থানীয় বিধায়ক যাঁকে অঞ্চল সভাপতি করেছে সেই মেমবুব আলম 2013 সাল অবদি CPI(M) করত। যাঁরা পুরানো তৃণমূল তাঁদের বের করে দেওয়ার একটা চক্রান্ত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, তাঁর বাড়ি ফেরার আগে এলাকায় একটা সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরির জন্যই এই হামলা করা হয়েছে। 15 অগাস্টের দিন তিনি বাড়ি ফিরবেন শুনে এই ঘটনা ঘটানো হয়। এই ঘটনার বিষয়ে জেলা সভাপতি লক্ষ্মীরতন শুক্লা ও দলের জেলার কো- অর্ডিনেটর রাজীব ব্যানার্জিকেও জানিয়েছেন তিনি ।
প্রধানের স্ত্রী আবিরা বেগম জানান, গতকাল স্থানীয় তৃণমূলের গুন্ডারা এসে বাড়ি ভাঙচুর করে। তাঁর স্বামী গত দু'বছর ধরে এলাকা ছাড়া ।
যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে অভিযুক্তরা । তাদের দাবি, মুজিবর রহমানের পরিবারের সদস্যরা নিজেরাই নিজেদের বাড়ি ভাঙচুর করে তাঁদের উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে। প্রসঙ্গত হাওড়ার পাঁচলা গ্রাম পঞ্চায়েতে আমফানের ক্ষতিপুরণের টাকা নিয়ে দুনীতির অভিযোগে সরব হয়েছিলেন পঞ্চায়েত প্রধান নিজেই। তিনি অভিযোগ জানিয়েছিলেন, আমফানের ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য তৈরি গ্রাম পঞ্চায়েতের তালিকায় 80 শতাংশ দুর্নীতি হয়েছে।