হাওড়া, 6 জুলাই : দার্জিলিং চা স্বাদে আর গন্ধে অতুলনীয় ৷ কিন্তু বেশি পরিমাণে উৎপাদন হয় অসম চা । বিশ্বে চায়ের বাজারে ভারতের আধিপত্য আজও অটুট ৷ কিন্তু ভারতে এই চা কাহিনীর শুরু হয়েছিল হাওড়ার বোটানিক্যাল গার্ডেনে ৷ চিনা আধিপত্য হটাতে এই চায়ের চাষ শুরু হয়৷
সুগন্ধি পানীয় হিসেবে চায়ের জুড়ি মেলা ভার ৷ চায়ের একাধিক উপকারিতাও আছে ৷ বিশ্ববাজারে চা যে মুনাফা এনে দেবে তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি ইংরেজদের ৷ বিশ্বে তখন চা রপ্তানিতে সবার উপরে ছিল চিন ৷ চায়ের বাজারে চিনা আধিপত্য হটাতে ভারতকেই বেছে নেন ব্রিটিশরা ৷ চা উৎপাদনের জন্য হাওড়ার বোটানিক্যাল গার্ডেনকেই বেছে নেয় তারা ৷
পরীক্ষামূলকভাবে 1823 সালে প্রথম চায়ের চাষ শুরু হয় বোটানিক্যাল গার্ডেনে ৷ মূলত এই বাগানটি ব্রিটিশরা তৈরি করেছিল অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ গাছের পরীক্ষামূলক চাষ করার জন্য ৷ সেই সব গাছের সঙ্গেই চায়ের চাষ শুরু করে ব্রিটিশরা ৷ কিন্তু হাওড়ার আবহওয়া চা চাষের উপষুক্ত ছিল না ৷ তাই সেভাবে সুস্বাদু চায়ের উৎপাদন করা যায়নি হাওড়ায় ৷ বিকল্প হিসেবে দার্জিলিং ও অসমকে বেছে নেওয়া হয় । 1834 সাল পর্যন্ত হাওড়ার বোটানিক্যাল গার্ডেনে এই চায়ের চাষ চলে ৷
বর্তমানে ভারত সহ গোটা বিশ্বে বিভিন্ন রকমের চা পাওয়া যায় ৷ ফ্লেভার চায়ের সঙ্গে দার্জিলিং ও অসম চাও সমানভাবে সমাদৃত ৷ বিশ্বের বাজারে চায়ের রপ্তানীতে ভারতের স্থান বর্তমানে এক নম্বরে ৷ চায়ের স্বাদে, গন্ধে দার্জিলিং চায়ের তুলনাই চলে না ৷ বিশ্ব বাজারে আধিপত্য বিস্তার করা ভারতীয় চায়ের পথ চলা শুরু হয়েছিল এই বোটানিক্যাল গার্ডেনেই ৷ তবে শুধু চা নয়, দেশে কফিরও প্রথম চাষ শুরু হয় এই বোটানিক্যাল গার্ডেনেই ৷
এই বিষয়ে বোটানিক্যাল গার্ডেনের বোটানিক্যাল অ্যাসিস্টেন্ট ডক্টর বসন্ত সিং বলেন, ‘‘এই বোটানিক্যাল গার্ডেন দেশের সবথেকে পুরোনো ৷ 1787 সালে কর্নেল কিড এই বগানের প্রতিষ্ঠা করেন ৷ এই বাগানটি প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্য ছিল অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিদেশি গাছ পরীক্ষামূলকভাবে রোপন করা ৷ এভাবে মেহগনি, সিঙ্কোনা, জয়ত্রী, জায়ফলের মতোই চায়ের চাষ শুরু হয় বোটানিক্যাল গার্ডেনে ৷ কিন্তু যেহেতু চা চাষের জন্য আমাদের আবহওয়া যথাযথ নয় তাই পরবর্তী কালে দার্জিলিং ও অসমে চাষ করা হয় ৷’’