কলকাতা, 25 মার্চ : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Bengal CM Mamata Banerjee) নির্দেশে রাজ্যজুড়ে 10 দিনের স্পেশাল ড্রাইভ শুরু করেছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ৷ লক্ষ্য রাজ্যে মজুত থাকা বেআইনি অস্ত্র, বোমা উদ্ধার (Special Drive of West Bengal Police to Recover Illegal Arms) ৷ তারপরই হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের অধীনে সমস্ত থানা থেকেই বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারের জন্য বিশেষ অভিযান চালানো হয় ।
গত 24 ঘণ্টায় 3টি বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার করেছে সিটি পুলিশ (Howrah City Police Recovered Few Illegal Arms) । যার মধ্যে 2টি শিবপুর থানা এলাকা ও আরেকটি সাঁকরাইল থানা এলাকা থেকে উদ্ধার করে সিটি পুলিশ । বিভিন্ন এলাকায় যাঁরা পুলিশের সোর্স হিসাবে কাজ করেন, মূলত তাঁদের থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই এই রেড করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে ৷
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে সমস্ত পুলিশ সুপার এবং পুলিশ কমিশনারকে (কলকাতা বাদে) ডিজি-র নির্দেশ, অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি, বোমা উদ্ধারে অভিযান চালাতে হবে । বিভিন্ন রেঞ্জের ডিআইজি, জোনাল আইজি-এডিজিরাও জেলায় জেলায় ওই অভিযানের তত্ত্বাবধান করবেন । তার তথ্য পৃথক ভাবে জানাতেও হবে ।
ডিজি-র আরও নির্দেশ ছিল, রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে সংঘর্ষ অথবা রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠী সংঘর্ষ ঠেকাতে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগকে আরও বেশি তৎপর হতে হবে । প্রতিটি থানা এলাকায় চিহ্নিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে হবে। দু’দিনের মধ্যে করতে হবে ‘রাফ-রেজিস্টারের’ পরিমার্জন । বিভিন্ন রেঞ্জের ডিআইজি, জোনাল আইজি-এডিজিরা অপরাধ তত্ত্বাবধানের নথি তৈরি করবেন । আগামী 10 দিন ওই সব অপরাধ এবং পদক্ষেপের তথ্য রিপোর্ট আকারে তৈরি করতে হবে ।
এছাড়াও গোয়েন্দা তথ্য জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন । সেখানে বলা হয়েছে, এলাকার স্পর্শকাতরতার উপরে নির্ভর করে ওয়ার্ড এবং গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির সম্পর্কে তথ্য তৈরি করতে হবে এবং সেই অনুসারে জেলা পুলিশ সুপার, ওসিদের মাধ্যমে পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে । সিনিয়র অফিসারদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে । নবান্নের নির্দেশ, কলকাতার নিকটবর্তী জেলা এবং কমিশনারেটের আওতায় থাকা পদস্থ পুলিশ কর্তারা বিনা অনুমতিতে এলাকা ছাড়তে পারবেন ।
রাজ্য পুলিশ সূত্রের দাবি, বৃহস্পতিবার থেকে রাজ্যের থানাগুলিকে নিজের এলাকার দুষ্কৃতীদের তালিকা (রাফ রেজিস্টার) তৈরি করতে বলা হয়েছে । তাদের বর্তমান ঠিকানা লিখে রাখতে হবে । ওই রাফ রেজিস্টার থানাগুলি মানছে কি না, তা এসপিদের দেখতে বলা হয়েছে । এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে দুষ্কৃতীদের কাছ থেকে মুচলেকা লিখিয়ে নিতেও বলা হয়েছে । ভোটের আগে এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে অনেক সময়ে যা করা হয় ।
রাজ্য পুলিশের একটি অংশের মতে, আগে জেলাগুলির সঙ্গে সিআইডি রাজ্যজুড়ে বেআইনি অস্ত্রের বিরুদ্ধে অভিযান চালাত । ফলে রাজ্যজুড়ে নিয়মিত বেআইনি অস্ত্র ধরা পড়ত । অভিযোগ, সিআইডি এখন ওই অভিযান নিয়মিত করে না । রাজ্য পুলিশের এসটিএফ মাঝেমধ্যে অস্ত্রের বিরুদ্ধে অভিযান করলেও, সাধারণ দুষ্কৃতীদের হাতে পৌঁছে যাওয়া অস্ত্র উদ্ধার মূলত জেলা পুলিশ করে । উত্তরবঙ্গের এক পুলিশ অফিসারের কথায়, সময়ের সঙ্গে দুষ্কৃতীদের সঙ্গে রাজনৈতিক যোগ বেড়েছে । আর এর জেরেই পুলিশের একটি অংশের সক্রিয়তা কমে গিয়েছে ।
আরও পড়ুন : WB Police Special Operation : মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বাংলাকে বেআইনি অস্ত্র ও বোমা মুক্ত করতে নামছে পুলিশ