আসানসোল, 3 মার্চ : ছোটো থেকে বাঁশি বাজানোর শখ আসানসোলের জিতেন লুই দত্তর ৷ কিন্তু অর্থের অভাবে বাঁশি কেনার শখ পূরণ করতে পারেননি ৷ তাই প্লাস্টিকের পাইপ দিয়েই বানিয়ে ফেললেন বাঁশি ৷
তাঁর বাঁশির সুরে মুগ্ধ হতে হয় ৷ পুরনো দিনের গান যখন তাঁর বাঁশিতে বাজে তখন পথচলতি মানুষ একটু থমকে যান ৷ ইট-কাঠ-পাথরের আসানসোল শহরে পৌরনিগমের অস্থায়ী কর্মী জিতেন লুই দত্তর শখ একটাই, বাঁশি বাজানো ৷ ছোটো থেকে স্বপ্ন দেখতেন বাঁশি বাদক হওয়ার ৷ কিন্তু বাঁশের বাঁশির যে অনেক দাম ৷ অভাব-অনটনের সংসারে এমন শখ মনের কোণাতেই থেকে যায় ৷ জিতেনবাবুর ক্ষেত্রেও তাই হতে পারত ৷ কিন্তু তিনি 12 বছর ধরে খেলনা বাঁশি বাজিয়ে নিজের শখ জিইয়ে রেখেছিলেন ৷
সংসার চালাতে আসানসোল পৌরনিগমে অস্থায়ী কর্মীর পদে চাকরি নেন জিতেনবাবু ৷ মাস মাইনে আট হাজার টাকা ৷ এই টাকায় সংসার চলে না তাঁর ৷ তাই অন্যান্য কাজ করে অতিরিক্ত রোজগার করেন ৷ এই অবস্থায় ছ’হাজার টাকা দিয়ে বাঁশের বাঁশি কেনা জিতেনবাবুর কাছে স্বপ্ন ৷ খেলনা বাঁশি বাজালেও বড় বাঁশি বাজানোর শখ ছিল বরাবর ৷ আসানসোলের রবীন্দ্রভবন সংস্কারের কাজ শুরু হয় কিছুদিন আগে ৷ সেখানে জলের সংযোগের জন্য PVC পাইপ ব্যবহার করা হয় ৷ সেইসব পাইপের টুকরো একটু একটু করে জমা করতে থাকেন জিতেনবাবু ৷ আর তাই দিয়েই তৈরি করে ফেলেছেন বাঁশি ৷ PVC পাইপের বাঁশির সুর কোনও অংশেই বাঁশের বাঁশির থেকে কম মধুর নয় ৷ রবীন্দ্রভবনে কাজের অবসরে সেই বাঁশিই বাজান তিনি ৷ রাস্তা দিয়ে যাতায়াতের সময় সাধারণ মানুষও জিতেন লুইয়ের বাঁশি শুনে থমকে দাঁড়ান ৷ শখপূরণ হয় জিতেনবাবুর ৷