দুর্গাপুর, 13 জুন: রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার (Bengal Post Poll Violence) অভিযোগের তদন্তে নেমে এ বার এক গৃহবধূকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করল সিবিআই (CBI) ৷ বীরভূমের (BirBhum) দুবরাজপুর পৌরসভার (Dubrajpur Municipality) 11 নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ওই গৃহবধূর নাম রুবিনা বিবি (Rubina Bibi) ৷ সোমবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান, পৌরভোটের টিকিট চাওয়াই তাঁর কাল হল ! রুবিনার দাবি, বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mandal) ওরফে 'কেষ্টদা'র কাছে টিকিট চেয়ে ফোন করেছিলেন রুবিনা ৷ আর সেই সূত্র ধরেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এ দিন ডেকে পাঠায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ৷
সোমবার দুর্গাপুরে সিবিআই-এর আধিকারিকদের কাছে হাজিরা দিতে আসেন রুবিনা ৷ সঙ্গে ছিলেন তাঁর দাদা ৷ সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানিয়েছেন, 2021 সালে প্রথমবার অনুব্রত মণ্ডলকে ফোন করেন তিনি ৷ সেই সময় 'কেষ্টদা'র সঙ্গে তাঁর কথাও হয়েছিল ৷ তৃণমূল জেলা সভাপতিকে রুবিনা জানিয়েছিলেন, পরবর্তী পৌর নির্বাচনে তিনি দুবরাজপুর থেকে শাসক দলের প্রার্থী হতে চান ৷ জবাবে অনুব্রত তাঁকে বলেন, মন দিয়ে ওয়ার্ডের কাজ করতে হবে ৷ মানুষ যদি তাঁকে প্রার্থী হিসাবে পেতে চায়, তাহলে অবশ্যই ভোটের টিকিট পাবেন রুবিনা ৷ তাঁর দাবি, এরপর তিনি নিজের ওয়ার্ডে মানুষের কাজে মন দেন ৷ কিন্তু, তারপরও নির্বাচনের টিকিট তিনি পাননি ৷ অনুব্রত অন্য এক মহিলাকে প্রার্থী করেন ৷ তাঁর বিরুদ্ধে নির্দল হিসাবে ভোটে লড়লেও হেরে যান রুবিনা ৷
আরও পড়ুন: Post Poll Violence Case: সিবিআই দফতরে হাজিরা বিজেপি নেতার, হিংসার ঘটনায় রাজ্য নেতৃত্বকে তোপ
রুবিনার বক্তব্য, তিনি একজন সাধারণ গৃহবধূ ৷ কিন্তু, কাউন্সিলর হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন ৷ আর সেই কারণেই অনুব্রতর মোবাইলে কয়েকবার ফোন করেছিলেন তিনি ৷ তবে, অনুব্রতর মোবাইলে ফোন করলেও তাঁর সঙ্গে রুবিনার খুব একটা কথা হত না ৷ অধিকাংশ সময়েই অনুব্রতর কোনও সহযোগী ফোন ধরতেন ৷ এ দিকে, রুবিনা যে নম্বর থেকে অনুব্রতকে ফোন করতেন, সেই সিম কার্ডের সংযোগটি নেওয়া রয়েছে রুবিনার দাদার নামে ৷ দিন কয়েক আগে রুবিনার দাদার সঙ্গে সিবিআই যোগাযোগ করে ৷ তারা অনুব্রতর সঙ্গে তাঁর কী সম্পর্ক রয়েছে, সে কথা জানতে চায় ৷ রুবিনার দাদা কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের জানান, তাঁর সঙ্গে অনুব্রতর কোনও সম্পর্কই নেই ৷ আর যে মোবাইল নম্বরের কথা বলা হচ্ছে, সেটি তাঁর নামে থাকলেও আসলে সেই সিমটি ব্যবহার করেন তাঁর বোন রুবিনা ৷
এরপরই সিবিআই-এর নির্দেশ মাফিক সোমবার রুবিনা বিবি ও তাঁর দাদা দুর্গাপুরে সিবিআই-এর দফতরে এসে দেখা করে যান ৷ গোটা ঘটনায় রীতিমতো বিরক্ত ওই গৃহবধূ ৷ রুবিনার দাবি, কাউন্সিলর হওয়ার স্বপ্নই কাল হল তাঁর ৷ ভোটের টিকিট পাওয়ার জন্য তিনি যদি অনুব্রতকে ফোন না করতেন, তাহলে আজ তাঁর এই হয়রানি হত না !