আসানসোল, 11 জুলাই : করোনার বিধিনিষেধের জেরে বন্ধ স্কুল ৷ তাই, ক্লাসে গিয়ে ছাত্রদের পড়াতে হয় না ৷ এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোলড হন সরকারি স্কুলের শিক্ষকরা । কাজ নেই, বসে বসেই নাকি সরকারি বেতন পাচ্ছেন তাঁরা । অথচ প্রচারের আলোর আড়ালে সমাজের জন্য কত কিছুই করে চলেছেন কত শিক্ষক, তার খোঁজ কে রাখে ? তেমনই দু'জন হলেন আসানসোলের পিনাকীরঞ্জন চক্রবর্তী এবং সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় ৷
রানিগঞ্জ হাইস্কুলের শিক্ষক পিনাকীরঞ্জন চক্রবর্তী এবং বারাবনি জামগ্রাম রাসবিহারী অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় । দু'জনে অনেক দিনের বন্ধু । লকডাউনে নিয়মিত স্কুল নেই । অনলাইন ক্লাস বা অন্যান্য কাজ সেরে হাতে যথেষ্ট সময় । আর এই সময়ে মানুষের কথা ভেবেছেন এই দুই শিক্ষক বন্ধু । নিজেরাই রান্না ক'রে দুপুরের পুষ্টিকর খাবার তুলে দিচ্ছেন ফুটপাথবাসী, নিরন্ন মানুষের মুখে । এক-দু'দিন নয়, দ্বিতীয় পর্যায়ে লকডাউন শুরুর পর থেকেই এই কাজটা করে আসছেন এই দুই শিক্ষক বন্ধু । পাশে পেয়েছেন পরিবারের সদস্যদেরও। তাঁরাও বিভিন্নভাবে সাহায্য করছেন শিক্ষক বন্ধুদের ।
সকাল থেকেই শুরু হয় রান্নার তোড়জোড় । নিজেরাই রান্না করে, খাবার প্যাকেটে ভরে বেরিয়ে পড়া । রাস্তায় চোখের সামনে যে মানুষটিকে অসহায় মনে হয়, তাঁর হাতেই তুলে দেওয়া খাবারের প্যাকেট । তবে শুধু খাবার দেওয়াই নয়, অতীতেও নানা সমাজসেবামূলক কাজ করেছেন এই দুই শিক্ষক বন্ধু । তাঁদের দাবি, সোশ্যাল মিডিয়ায় শিক্ষকদের নিয়ে যতই ট্রোলড হোক না কেন, সব কাজে শিক্ষকরাই এগিয়ে আসেন ।
শুধু এবারে লকডাউনেই নয়, শুরু থেকেই মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন পিনাকী এবং সোমনাথ ৷ বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করার চেষ্টা করেছেন তাঁরা ৷ দ্বিতীয়বারের লকডাউনে রান্না করা খাবার দুস্থ মানুষের হাতে পৌঁছে দিচ্ছেন তাঁরা ৷ এর আগের লকডাউনে তাঁরা চাল-ডাল তুলে দিয়েছিলেন এমনই কিছু মানুষের হাতে ৷ পিনাকী এবং সোমনাথ মনে করেন, তাঁদের যখন স্কুল বন্ধ থাকছে সরকার তাঁদের পাশে রয়েছে ৷ তাই তাঁদেরও অন্য মানুষের পাশে থাকা উচিত ৷ আগামীতেও থাকবেন ৷
আরও পড়ুন : বেহালায় সুরের মূর্ছনা ছড়ানো ভগবানের পাশে দাঁড়ালেন রাজ