আসানসোল,19 জানুয়ারি : মার্চ মাস থেকে ছিল লকডাউন। আর এই লকডাউনের কারণে আসানসোল শহর জুড়ে প্রচুর বেআইনি হোডিংয়ের হদিস পেয়েছে আসানসোল পৌরনিগম। কার্যত লকডাউনের সুযোগ নিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এই বেআইনি হোডিং ও ব্যানার শহরের বিভিন্ন জায়গায় লাগিয়েছিল। অভিযান চালিয়ে সেগুলিকে সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পৌরনিগম। তবে এই লকডাউনের কারণে সঠিকভাবে টাকা আদায় না হওয়ার কারণে রাজস্বে ঘাটতি পরেছে আসানসোল পৌরনিগমের। বিপুল পরিমাণ টাকা এখনও বাইরে পড়ে আছে।
পৌরনিগম সূত্রে জানা গেছে, আসানসোল জুড়ে চারটি জোনে় হোডিং লাগানো হয়। কার্যত জিটি রোড ধরে কালিপাহাড়ি অঞ্চল থেকে বরাকর পর্যন্ত এই জো়নগুলিকে ভাগ করা হয়েছে। বৃহত্তর পৌরনিগমের ক্ষেত্রে রানিগঞ্জ এবং জামুড়িয়ার বিষয়টি আলাদা। আসানসোল পৌরনিগমের কাছে মোট 186 টি হোডিংয়ের হদিস রয়েছে। এই 186 টি হোডিংয়ের থেকে রাজস্ব পায় আসানসোল পৌরনিগম। যার মধ্যে 160 টি হোডিং রয়েছে বিভিন্ন এজেন্সি দ্বারা পরিচালিত। আর 26টি হোডিং পৌরনিগমের নিজস্ব। যদিও এই সংখ্যা আরও বেশি বলেই মনে করছে পৌরনিগম। আর যার রাজস্ব ঠিকঠাক ভাব আসছে না। এমনই অনুমান ক'রে পৌর কমিশনার নিতীন সিংঘানিয়ার নেতৃত্বে অভিযান চালানো শুরু হয়েছে। তার দাবি মাসখানেকের মধ্যেই গোটা বিষয়টিকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা যাবে।
আরও পড়ুন : শুধু ভবানীপুরকেই নয়, সারা রাজ্যের মানুষকে বঞ্চিত করেছেন; মমতাকে কটাক্ষ খগেনের
এখনও পর্যন্ত মোট দশটি এজেন্সি রয়েছে যারা পৌরনিগমের বিভিন্ন স্থানে হোডিং লাগায়। এরাই মূলত রাজস্ব দেয় পৌরনিগমকে। এছাড়া বহুতল আবাসন বা অন্যান্য ব্যক্তিগত আবাসনের ছাদে যে সমস্ত হোডিং রয়েছে তাদের কাছ থেকেও ডিসপ্লে ট্যাক্স আদায় করে পৌরনিগম। বছরে প্রায় দেড় কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হত বলে জানা গেছে। কিন্তু চলতি আর্থিক বছরে এখনও 80 লাখ টাকা বকেয়া পরে আছে। পৌরকমিশনার নিতীন সিংঘানিয়া জানিয়েছেন, "আমরা ইতিমধ্যেই এজেন্সিগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছি এবং লকডাউন চলাকালীন বিশেষ ছাড় দেওয়া হয়েছে। আশা করছি বকেয়া টাকা উঠে আসবে। এছাড়াও বেআইনি হোডিংয়ের ক্ষেত্রে অভিযান চালানো হচ্ছে। যদি তারা রাজস্ব দিতে ইচ্ছুক হয় তাহলে তাদের নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসা হবে। যদি তারা রাজস্ব দিতে অস্বীকার করে তাহলে সেই সমস্ত হোডিং সরিয়ে ফেলা হবে।" আসানসোল পৌরনিগমের মুখ্য প্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, " আমরা খবর পেয়েছি, বেআইনি হোডিং বেশ কিছু রয়েছে পৌরনিগম এলাকায়। অনেকেই ভিড়ের মধ্যে সুযোগ নিতে চায়। সেই সুযোগ সন্ধানীদের আমরা খুঁজছি। বেআইনি হোডিং সমস্ত সরিয়ে ফেলা হবে এবং যে রাজস্ব বকেয়া পড়ে রয়েছে তা দ্রুত আদায় করার চেষ্টা চলছে।" যদিও হোডিং নিয়ে আসানসোল পৌরনিগমের পূর্ববর্তী বোর্ড উদাসীন ছিল বলেই বেআইনি হোডিং ব্যবসায়ীদের বাড়বাড়ন্ত বেড়েছে বলেই অভিযোগ। বর্তমানে অভিযান চালিয়ে পুরো বিষয়টিকে নিয়ন্ত্রনে আনে যায় কি না সেটাই এখন দেখার।