আসানসোল, 3 অক্টোবর : বুক ফাটা কান্নাই এখন তাঁদের সম্বল ৷ সবটুকু খুইয়ে সর্বহারা তাঁরা । যা চলে গিয়েছে কিছুই ফিরবে না ৷ আসানসোলের কালীপাহাড়ি এজেন্ট বাংলো এলাকায় পরিত্যক্ত ইসিএল আবাসন এলাকার বাসিন্দারা আজ অসহায় ৷ নুনিয়া বুড়ি নদীর ভাঙনের জেরে সব ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে ৷ কোনওদিন এমনটা হতে পারে তা কেউ ভাবেননি ৷ অনান্য দিনের মত গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলেন সবাই ৷ হঠাৎই অনুভব করেন জলের মধ্যে ভাসছেন ৷ তড়িঘড়ি ঘুম থেকে উঠে দেখেন, ঘরে বুক সমান জল ৷ আর আশেপাশের বাড়ি থেকে প্রতিবেশীদের আর্তনাদ ভেসে আসছে ৷
মাত্র দেড় ঘণ্টার মধ্যে নুনিয়া বুড়ি নদীর ভাঙনে লোকালয়ের বুক সমান জল জমে যায় ৷ কেউ ছাদে উঠে, কেউ বা উঁচু জায়গায় চড়ে প্রাণ বাঁচান ৷ আগে এমন কোনও অভিজ্ঞতা ছিল না কালীপাহাড়ি এজেন্ট বাংলো এলাকায় পরিত্যক্ত ইসিএল আবাসনের বাসিন্দাদের ৷ তাই বাড়ির কোনও জিনিসপত্র বাঁচানো যায়নি ৷ সবকিছু ভেসে গিয়েছে ৷ আসবাবপত্র, নথি, বাড়িতে থাকা টাকাপয়সা, চাল, ডাল এবং অন্যান্য সবজি সব জলে ভেসে গিয়েছে ৷ ওই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তরফে লোকজন উদ্ধার কাজ শুরু করেন ৷ তার জেরে প্রাণে বাঁচেন তাঁরা ৷ কমিউনিটি কিচেন খুলে খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে ৷ কিন্তু, এভাবে আর কতদিন ?
আরও পড়ুন :Ganga Erosion : সামশেরগঞ্জে ভয়াবহ গঙ্গা ভাঙন, নদীগর্ভে কয়েক বিঘা কৃষি জমি
বন্যায় সব কিছু হারানো স্থানীয় বাসিন্দা পুজা কুমারী বলেন, “কখনও এমন অবস্থা হবে, স্বপ্নেও ভাবিনি ৷ সব ভেসে গিয়েছে, আসবাবপত্র, টিভি, ফ্রিজ, প্রয়োজনীয় নথি সব ৷ কী হবে ভবিষ্যতে জানি না ৷’’ আরেক বাসিন্দা কুসুম কুমারী বলেন, “আমাদের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ ৷ খাওয়ার কিছু নেই, শোওয়ার বিছানা নেই ৷ নেই পরার পোশাক ৷’’ পুজো আসছে, পুজোর আনন্দ ছুঁয়েছে শহর ও শহরতলিতে, কিন্তু কালীপাহাড়ির এই পরিত্যক্ত ইসিএল আবাসন এলাকায় পুজোর কোনও আনন্দ নেই ৷ তাঁরা আগামীর ভবিষ্যত কী হবে, তা ভেবেই আকুল সকলে ৷ বিধায়ক থেকে শুরু করে রাজনৈতিক নেতারা এসে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ৷ কিন্তু সে আশ্বাসেও কোনও কাজ হবে কি না সেটা সময় বলবে ৷
আরও পড়ুন : Chandrakona Flood : বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গিয়েও বাঁধ পরিদর্শনে গেলেন না মন্ত্রী, হতাশ এলাকাবাসী