আসানসোল, 18 সেপ্টেম্বর : বাতাসে শিউলির সুবাস, কাশফুলের দোলা, রেডিয়োতে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের স্তোত্রে যখন বাঙালির দুর্গাপুজোর আমেজ শুরু হয় ৷ তখনই দুর্গাপুজো শেষ হয়ে যায় আসানসোলের হীরাপুরের ধেনুয়াগ্রামে । আবাহনেই যেন বিসর্জন । মহালয়াতেই আগমনী দুর্গা হিসেবে পুজো করে প্রতিমার ভাসান দিয়ে দেওয়া হয় । আর এই একদিনের দুর্গাপুজোয় মেতে ওঠে ধেনুয়া-সহ আশেপাশের গ্রামের মানুষজন ।
হীরাপুরের ধেনুয়া গ্রামে কালিকৃষ্ণ আশ্রম । দামোদরের ধারে এই মনোরম আশ্রমেই আয়োজন হয় আগমনী দুর্গাপুজোর । মন্দিরের সেবাইতরাই জানান, আনুমানিক 1937 সাল থেকেই এই পুজো হয়ে আসছে । মায়ের স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই পুজোর প্রচলন হয়েছিল । মহালয়ার আগের রাতে অমাবস্যা লাগলে প্রথমে কালিপুজো করা হয় । কালিপুজোর শেষে ভোরবেলা নবপত্রিকাকে স্নান করিয়ে নিয়ে আসা হয় স্থানীয় পুকুরে । নিয়ে আসা হয় মায়ের ঘট । এরপর মহালয়ায় দেবীপক্ষের সূচনায় শুরু হয় মা দুর্গার পুজো । একদিনেই নিয়ম করে সপ্তমী, অষ্টমী, নবনী ও দশমীর পুজো-অর্চনা করা হয় । তারপরে প্রতিমার ভাসান দিয়ে দেওয়া হয় সেদিনই । পিতৃপক্ষে বোধন হয় আর দেবীপক্ষে বিসর্জন ।
কালীকৃষ্ণ আশ্রমের মা দুর্গার রূপেও পরিবর্তন রয়েছে । যেহেতু দেবী এখানে কুমারী মা, তাই দেবীর সাথে গনেশ, কার্তিক, লক্ষ্মী, সরস্বতীকে দেখা যায় না । তার বদলে জয়া ও বিজয়া দুই সখীকে দেখা যায় মা দুর্গার সাথে । অন্যদিকে, মা দুর্গার সাথে নেই মহিষাসুরও । তাই এখানে মায়ের মুখে কোনও ক্রুব্ধ ভাব থাকে না । বরং মৃন্ময়ী মূর্তির মুখে প্রশান্তির ছাপ ।