ETV Bharat / city

Burnpur Tea Seller Story : বার্নপুর বাসস্ট্যান্ডের ‘চা কাকু’র ঠিকানা সাড়ে 6 ফুট বাই সাড়ে 3 ফুটের বাক্স

আসানসোলের বার্নপুর বাসস্ট্যান্ডের কাকার চায়ের দোকান ৷ তাঁর পরিচয়, গৌরীশংকর জয়সওয়াল ৷ তবে, সেটা নামেই দোকান ৷ মাত্র সাড়ে 6 ফুট বাই সাড়ে 3 তিন ফুটের একটি বাক্সই তাঁর দোকান ও থাকা-খাওয়ার জায়গা (Burnpur Tea Seller Gauri Shankar Jaiswal Lives in A Box) ৷

Burnpur Tea Seller Gauri Shankar Jaiswal Lives in A Box
Burnpur Tea Seller Gauri Shankar Jaiswal Lives in A Box
author img

By

Published : Apr 23, 2022, 2:31 PM IST

আসানসোল, 23 এপ্রিল : ‘যদিও বাঁচার আসল ঠিকানা দশ ফুট বাই দশ ফুট’ ! নব্বইয়ের দশকে এই গান বাঙালির বৈঠকখানায় শোরগোল ফেলে দিয়েছিল ৷ ছাপোষা নিম্ন মধ্যবিত্ত বাঙালির দৈনিক লড়াইয়ের কথা উঠে এসেছিল এই গানে ৷ কিন্তু, বাস্তবের লড়াই আরও কঠিন ৷ সেখানে বাঁচার ঠিকানা মাত্র সাড়ে 6 ফুট বাই সাড়ে 3 তিন ফুটের একটি বাক্স ৷ হ্যাঁ, আসানসোলের বার্নপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন একটি চায়ের দোকানই গৌরীশংকর জয়সওয়ালের ঠিকানা ৷

আশ্চর্য হলেও সত্যি ৷ সাড়ে 6 ফুট বাই সাড়ে 3 তিন ফুটের জায়গায় গৌরীশংকর জয়সওয়ালের সংসার (Burnpur Tea Seller Gauri Shankar Jaiswal Lives in A Box) ৷ সেখানেই খাওয়া দাওয়া, জিনিসপত্র রাখা ৷ প্রায় ৪০ বছর তিনি বার্নপুর শিল্পশহরে বাস করছেন ৷ অথচ আজও এ শহরে তাঁর নিজস্ব কোনও স্থায়ী ঠিকানা বা বাসস্থান নেই ৷ ঠিকানা বলতে ওই টিনের বাক্স ৷

পৈতৃক বাড়ি উত্তরপ্রদেশের গোরখপুর ৷ কুড়ি বছর বয়সে 1978 সালে উপার্জনের আশায় বাড়ি ছেড়ে ছিলেন ৷ চলে এসেছিলেন শিল্পশহর বার্নপুরে ৷ প্রথমে এদিক-ওদিক দোকানে কাজ করতেন ৷ পরবর্তীকালে বার্নপুর বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় নিজেই চায়ের দোকান দিয়েছিলেন ৷ তখন গুমটি ছিল বড় ৷ নিজে আর ভাড়া বাড়ি বা থাকার আস্তানা খোঁজেননি ৷ থাকতেন, খেতেন ওই গুমটিতেই ৷ কিন্তু, বিপদ হল 2001 সালে ৷ বার্নপুর বাসস্ট্যান্ডের সংস্কার করা হয় ৷ সেই সময় সব গুমটি, দোকান ঘর ভেঙে দেওয়া হয় ৷ তবে, অবশ্যই নিরাশ করা হয়নি ব্যবসায়ীদের ৷

আরও পড়ুন : Wooden Handicrafts : প্রাণহীন কাঠও যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে সন্দীপের শিল্পগুণে

ইস্কো কোম্পানি থেকে গৌরীশংকর জয়সওয়ালকে ভাড়ায় 8 ফুট বাই 8 ফুটের একটি জায়গা দেওয়া হয় ৷ তাতেই তার দোকান করে নিতে বলা হয় তাঁকে ৷ কিন্তু ওইটুকু জায়গায় গুমটি বসানো যায় না ৷ আর তাই নিজের জন্য একটা সাড়ে 6 ফুট বাই সাড়ে 3 ফুটের বাক্স তৈরি করেন গৌরীশংকরবাবু ৷ বাইরে খোলা জায়গায় চায়ের দোকান, আর সংসার ওই বাক্সের মধ্যেই ৷ সেখানেই তাঁর যাবতীয় জিনিসপত্র রাখা, সেখানেই রান্না করা, খাওয়া-দাওয়া সবকিছু ৷ এতদিন পর্যন্ত ওই বাক্সের মধ্যে রাতে শুতেন তিনি ৷ কিন্তু, এলাকার মানুষজন তাঁর বয়স হয়েছে দেখে প্রচন্ড গরমের কারণে স্থানীয় একটি গুদামঘরে শুধু রাতে শোয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছে ৷ ভোর চারটে থেকে রাত দশটা পর্যন্ত চলে গৌরীশংকর জয়সওয়ালের চায়ের দোকান ৷ আর তারই মাঝে সারাদিন ওই বাক্সের মধ্যেই তাঁর দিনযাপন ৷

আরও পড়ুন : Asansol : পাল্টেছে সময়, চিনা সামগ্রী বন্ধের পর ঘুরবে কি কুমোরপাড়ার ভাগ্য ?

বার্নপুর শহরে নিজের কোনও স্থায়ী, অস্থায়ী ঠিকানা করার প্রয়োজনীয়তাই মনে করেননি গৌরীশংকরবাবু ৷ তিনি জানিয়েছেন, ‘‘মাঝেমধ্যেই বাড়ি চলে যাই ৷ বাড়িতে পরিবারের সব লোকজন আছেন ৷ আবার ফিরে আসি উপার্জনের জন্য ৷ এভাবেই চলছে ৷’’ কিন্তু, এভাবে আর কতদিন ? গৌরীশংকর বাবুর কথায় ‘‘শরীর যেদিন চলবে না, সেদিন ফিরে যাব ৷’’ অর্থাৎ, আসানসোল শহরে 40 বছরের বেশি সময় কাটালেও বাসিন্দা হননি গৌরীশংকর জয়সওয়াল ৷ অনেকটা গুলাম আলির গজলের মতই, ‘হাম তেরে শহর মে আয়ে হ্যায় মুসাফির কি তরাহা’ ৷

আসানসোল, 23 এপ্রিল : ‘যদিও বাঁচার আসল ঠিকানা দশ ফুট বাই দশ ফুট’ ! নব্বইয়ের দশকে এই গান বাঙালির বৈঠকখানায় শোরগোল ফেলে দিয়েছিল ৷ ছাপোষা নিম্ন মধ্যবিত্ত বাঙালির দৈনিক লড়াইয়ের কথা উঠে এসেছিল এই গানে ৷ কিন্তু, বাস্তবের লড়াই আরও কঠিন ৷ সেখানে বাঁচার ঠিকানা মাত্র সাড়ে 6 ফুট বাই সাড়ে 3 তিন ফুটের একটি বাক্স ৷ হ্যাঁ, আসানসোলের বার্নপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন একটি চায়ের দোকানই গৌরীশংকর জয়সওয়ালের ঠিকানা ৷

আশ্চর্য হলেও সত্যি ৷ সাড়ে 6 ফুট বাই সাড়ে 3 তিন ফুটের জায়গায় গৌরীশংকর জয়সওয়ালের সংসার (Burnpur Tea Seller Gauri Shankar Jaiswal Lives in A Box) ৷ সেখানেই খাওয়া দাওয়া, জিনিসপত্র রাখা ৷ প্রায় ৪০ বছর তিনি বার্নপুর শিল্পশহরে বাস করছেন ৷ অথচ আজও এ শহরে তাঁর নিজস্ব কোনও স্থায়ী ঠিকানা বা বাসস্থান নেই ৷ ঠিকানা বলতে ওই টিনের বাক্স ৷

পৈতৃক বাড়ি উত্তরপ্রদেশের গোরখপুর ৷ কুড়ি বছর বয়সে 1978 সালে উপার্জনের আশায় বাড়ি ছেড়ে ছিলেন ৷ চলে এসেছিলেন শিল্পশহর বার্নপুরে ৷ প্রথমে এদিক-ওদিক দোকানে কাজ করতেন ৷ পরবর্তীকালে বার্নপুর বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় নিজেই চায়ের দোকান দিয়েছিলেন ৷ তখন গুমটি ছিল বড় ৷ নিজে আর ভাড়া বাড়ি বা থাকার আস্তানা খোঁজেননি ৷ থাকতেন, খেতেন ওই গুমটিতেই ৷ কিন্তু, বিপদ হল 2001 সালে ৷ বার্নপুর বাসস্ট্যান্ডের সংস্কার করা হয় ৷ সেই সময় সব গুমটি, দোকান ঘর ভেঙে দেওয়া হয় ৷ তবে, অবশ্যই নিরাশ করা হয়নি ব্যবসায়ীদের ৷

আরও পড়ুন : Wooden Handicrafts : প্রাণহীন কাঠও যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে সন্দীপের শিল্পগুণে

ইস্কো কোম্পানি থেকে গৌরীশংকর জয়সওয়ালকে ভাড়ায় 8 ফুট বাই 8 ফুটের একটি জায়গা দেওয়া হয় ৷ তাতেই তার দোকান করে নিতে বলা হয় তাঁকে ৷ কিন্তু ওইটুকু জায়গায় গুমটি বসানো যায় না ৷ আর তাই নিজের জন্য একটা সাড়ে 6 ফুট বাই সাড়ে 3 ফুটের বাক্স তৈরি করেন গৌরীশংকরবাবু ৷ বাইরে খোলা জায়গায় চায়ের দোকান, আর সংসার ওই বাক্সের মধ্যেই ৷ সেখানেই তাঁর যাবতীয় জিনিসপত্র রাখা, সেখানেই রান্না করা, খাওয়া-দাওয়া সবকিছু ৷ এতদিন পর্যন্ত ওই বাক্সের মধ্যে রাতে শুতেন তিনি ৷ কিন্তু, এলাকার মানুষজন তাঁর বয়স হয়েছে দেখে প্রচন্ড গরমের কারণে স্থানীয় একটি গুদামঘরে শুধু রাতে শোয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছে ৷ ভোর চারটে থেকে রাত দশটা পর্যন্ত চলে গৌরীশংকর জয়সওয়ালের চায়ের দোকান ৷ আর তারই মাঝে সারাদিন ওই বাক্সের মধ্যেই তাঁর দিনযাপন ৷

আরও পড়ুন : Asansol : পাল্টেছে সময়, চিনা সামগ্রী বন্ধের পর ঘুরবে কি কুমোরপাড়ার ভাগ্য ?

বার্নপুর শহরে নিজের কোনও স্থায়ী, অস্থায়ী ঠিকানা করার প্রয়োজনীয়তাই মনে করেননি গৌরীশংকরবাবু ৷ তিনি জানিয়েছেন, ‘‘মাঝেমধ্যেই বাড়ি চলে যাই ৷ বাড়িতে পরিবারের সব লোকজন আছেন ৷ আবার ফিরে আসি উপার্জনের জন্য ৷ এভাবেই চলছে ৷’’ কিন্তু, এভাবে আর কতদিন ? গৌরীশংকর বাবুর কথায় ‘‘শরীর যেদিন চলবে না, সেদিন ফিরে যাব ৷’’ অর্থাৎ, আসানসোল শহরে 40 বছরের বেশি সময় কাটালেও বাসিন্দা হননি গৌরীশংকর জয়সওয়াল ৷ অনেকটা গুলাম আলির গজলের মতই, ‘হাম তেরে শহর মে আয়ে হ্যায় মুসাফির কি তরাহা’ ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.