হায়দরাবাদ, 21 ডিসেম্বর: সব কিছু ঘটে কোনও না-কোনও কারণে । আর এটা আপনাকে বুঝতে হবে ৷ শেয়ারবাজার বেড়েই চলেছে (Stock market indices soaring) এবং তার সঙ্গে সুদের হারও বাড়ছে (Interest rates going up) । বিশেষজ্ঞরা মতে, মন্দার প্রভাবে ভারতে খুব বেশি পড়বে না (Recession impact not on India) ৷ যার প্রভাব ইতিমধ্যে বেশ কিছু দেশে পড়েছে । তাই এর জন্য অবশ্যই আপনার আর্থিক পরিকল্পনা করতে হবে ৷ আর তা করতে হবে আগের থেকে অনেক বেশি যত্ন সহকারে । এক্ষেত্রে সঠিক আর্থিক লক্ষ্য নির্ধারণ করতে পারেন ৷ এছাড়া আপনি সঠিক বিনিয়োগ করতে পারেন ৷ যা দীর্ঘমেয়াদে আরও বেশি ভালো ফল দেবে ।
সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুসারে, যারা দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের পথ বেছে নিচ্ছেন, তারা মিউচুয়াল ফান্ডের দিকে ঝুঁকছেন । কিছু কারণ এখানে বিবেচনা করা উচিত ৷ আর্থিক পরিকল্পনা এবং বিনিয়োগ এক জিনিস নয় । বিনিয়োগ আর্থিক পরিকল্পনার একটি অংশ । আমাদের জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে প্রয়োজনীয় তহবিল কীভাবে অর্জন করা যায়, তা একটি ঠিকঠাক পরিকল্পনা । কিন্তু কোন ধরনের বিনিয়োগ বেছে নিতে হবে, তা ভালো করে জানতে হবে । এটি স্বল্প-মাঝারি-দীর্ঘ মেয়াদে লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করে ।
সঠিক পরিকল্পনার অভাবে আয়, ব্যয়, বিনিয়োগ ইত্যাদির ওপর আমাদের কোনও নিয়ন্ত্রণ থাকবে না । প্রথমে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক লক্ষ্যগুলো চিহ্নিত করুন (Prioritise financial goals) । একটি বাড়ি কেনা, বাচ্চাদের উচ্চশিক্ষা, তাদের বিয়ে এবং আপনার অবসরের পরিকল্পনা । লক্ষ্য নির্ধারণ এবং তাদের জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণে টাকা খরচের অনুমান করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ । এসব বিষয়ে আগে থেকেই খেয়াল রাখুন । এটি যখন সময় আসে তখন কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জনে সহায়তা করবে ।
আপনার লক্ষ্যগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া এক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ৷ এর জন্য কী পথ অবিলম্বে অনুসরণ করা যেতে পারে এবং কী স্থগিত করা উচিত? আপনি আপনার বর্তমান সম্পদ এবং ভবিষ্যতের বিনিয়োগের উপর ভিত্তি করে এটি সম্পর্কে চিন্তা করতে পারেন । সব গোলের সময়কাল একই থাকে না । কেউ কেউ হয়তো 3-5 বছরের মধ্যে বাড়ি কেনার কথা ভাবছেন । অন্যদের ক্ষেত্রে শিশুদের শিক্ষার খরচ 10-15 বছর পরে আসতে পারে । অবসরের জন্য আরও 30 বছর থাকতে পারে । স্বল্পমেয়াদি লক্ষ্যের জন্য দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করা বন্ধ করবেন না । উদাহরণস্বরূপ, শিশুদের শিক্ষার খরচের (Children education) কারণে অবসর গ্রহণের পরের জন্য বিনিয়োগ না করা একটি ভুল (Retirement plans) ।
ইক্যুইটিগুলি দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ যা মুদ্রাস্ফীতি অতিক্রম করে রিটার্ন দেয় । দীর্ঘদিন বাজারে টিকে থাকার জন্য এগুলি বেছে নিতে হবে । শেয়ারে সরাসরি বিনিয়োগ বা ইক্যুইটি ফান্ডের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে বাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য । স্বল্প ও মধ্যমেয়াদি লক্ষ্যের জন্য ব্যাঙ্ক ফিক্সড ডিপোজিট, পোস্ট অফিস সঞ্চয় স্কিম, বন্ড এবং ঋণ প্রকল্পের মতো কম ঝুঁকিপূর্ণ স্কিম বেছে নেওয়া উচিত । বিনিয়োগ করার সময় ক্যাশবিলিটি, করের বোঝা ও মেয়াদ ইত্যাদি বিবেচনা করুন (Financial Investment Plan) ।
আরও পড়ুন: ক্রেডিট কার্ডে ঋণ নিয়েছেন ? আজই এই বিষয়গুলি নিয়ে সতর্ক হন
প্রথমে সঠিক লক্ষ্য নির্ধারণ এবং সেগুলিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে ৷ তারপর কোন স্কিমে কত বিনিয়োগ করবেন তা ভাবুন (Long term goals) । মূল্যস্ফীতির সঙ্গে প্রতিটি ব্যয়ের হিসাব করুন । ধরুন আপনার মেয়ের বিয়েতে এখন 25 লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে । 21 বছর পর গড় মূল্যস্ফীতি 5 শতাংশ-সহ 80 লক্ষ টাকা প্রয়োজন । এই খরচ শুধুমাত্র স্কিমগুলিতে বিনিয়োগ করে বহন করা যেতে পারে ৷ যা কমপক্ষে 12 শতাংশ রিটার্ন পায় । প্রতিটি প্রয়োজন এই মতো ভেবেচিন্তে করা উচিত ৷
শেয়ারবাজারে ওঠানামা স্বাভাবিক । দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যের জন্য ইক্যুইটি মিউচুয়াল ফান্ড নির্বাচন করার সময় স্বল্পমেয়াদি বিপর্যয়গুলি উপেক্ষা করুন । নিয়মিত বিনিয়োগ করার জন্য আপনার যা দরকার, তা হল আর্থিক শৃঙ্খলা । বিনিয়োগ করার আগে প্রত্যেক উপার্জনকারীর তাদের বার্ষিক আয় এবং দায়-দায়িত্বের উপর নির্ভর করে একটি উপযুক্ত টাকার পরিমাণের মেয়াদি নীতি গ্রহণ করা আবশ্যক ।
আরও পড়ুন: গৃহঋণে সুদের হার বাড়ছে? রইল তা কমানোর উপায়