ETV Bharat / business

উচ্চ খরচ ও বৃদ্ধির জন্য তিনটি কঠিন চ্যালেঞ্জ

অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে কলম ধরলেন এস মহেন্দ্র দেব ৷ ভাইস চ্যান্সেলর, IGIDR

উচ্চ খরচ ও বৃদ্ধির জন্য তিনটি কঠিন চ্যালেঞ্জ
উচ্চ খরচ ও বৃদ্ধির জন্য তিনটি কঠিন চ্যালেঞ্জ
author img

By

Published : Jan 4, 2020, 1:30 PM IST

Updated : Jan 4, 2020, 1:40 PM IST

গত বছরের জানুয়ারি মাসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম (WEF)-এর ইনসাইট রিপোর্ট অনুযায়ী, ভবিষ্যতে দেশের মধ্যে খরচ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ তিনটি: (a) দক্ষতার মান বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান, (b) গ্রামীণ ভারতের আর্থ-সামাজিক অন্তর্ভুক্তি, (c) একটা সুরক্ষিত ও স্বাস্থ্যকর ভবিষ্যৎ। এক বছর আগে প্রকাশিত এই রিপোর্টের ভিত্তিতে আমাদের পর্যবেক্ষণ করে দেখতে হবে, কীভাবে এই তিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়া সম্ভব ।

এই চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে আলোচনা করার আগে আমাদের দেখতে হবে শেষ এক বছরে আমাদের অর্থনীতির কতটা বৃদ্ধি ঘটেছে । 2018-2019-এর প্রথম ত্রৈমাসিকের 8 শতাংশ GDP কমে 2019-2020-এর প্রথম ত্রৈমাসিকে 5 শতাংশ এবং দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে 4.5 শতাংশে এসে পৌঁছেছে ।

WEF-এর রিপোর্ট অনুযায়ী 2019 সালে ভারতের GDP বৃদ্ধি 7.5 শতাংশ হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছিল । ভারত সমগ্র বিশ্বের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান স্তম্ভ । কিন্তু WEF-এর সেই অনুমানকে ভুল প্রমাণ করে মনে করা হচ্ছে 2019-2020 অর্থবর্ষের GDP 5 শতাংশের নীচে থাকবে । বিশ্ব অর্থনীতির বিভিন্ন কারণের সঙ্গে দেশীয় কিছু কারণ যেমন, পণ্য পরিষেবা কর (GST) সংক্রান্ত কিছু বিষয়, ব্যাঙ্কগুলির প্রায় 10 লক্ষ কোটি টাকার অনুৎপাদক সম্পদ, ব্যাঙ্ক নয় এমন অর্থলগ্নি সংস্থাগুলি (NBFCs)-র সঙ্কট, কৃষি ও গ্রামীণ অর্থনীতির বেহাল দশা গত এক বছর ধরে দেশের অর্থনীতির চলতি মন্দার মতো অবস্থার অন্যতম কারণ। কোনও কোনও অর্থনীতিবিদের মতে, ভারতের অর্থনীতি এখন ICU-তে চলে গিয়েছে। তবে এখনই অত দুশ্চিন্তার কিছু নেই, কারণ এটি একটি মন্দার মতো অবস্থা, সামগ্রিক ভাবে মন্দা নয়। অর্থনীতির উন্নতি হতে হয়ত বছরখানেক সময় লাগবে।

এ বার আসা যাক প্রথম চ্যালেঞ্জের কথায়, অর্থাৎ দক্ষতার মান বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের বিষয়ে । 2017-2018 অর্থবর্ষের NSSO-এর রিপোর্ট কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে । 2017-2018 অর্থবর্ষে দেশে বেকারত্বের হার পৌঁছয় 6.1 শতাংশে, যা 45 বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি । একই সময়ে মহিলাদের কাজে যোগ দেওয়ার হার উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে । 2004-2005 অর্থবর্ষে মহিলাদের ক্ষেত্রে কাজে যোগদানের যে হার ছিল 42 শতাংশ, তা 2017-2018 সালে কমে দাঁড়ায় 22 শতাংশে । এই সংখ্যার 85-90 শতাংশ অসংগঠিত ক্ষেত্রে । অতএব, সরকারের উচিত সংগঠিত ক্ষেত্রের বৃদ্ধি ঘটানো এবং একইসঙ্গে অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মক্ষমতা বাড়ানো।

আমরা এটা খুব ভাল করেই জানি যে, বিপুল জনসংখ্যার সুবিধা হিসাবে বিপুল সংখ্যক শ্রমিক কাজে যোগ দেবে। আর এটা এমন একটা সময় হবে, যখন বাকি পৃথিবীর আয়ু ক্রমশ বাড়ছে। কিন্তু বিপুল জনসংখ্যার সুবিধা তখনই পাওয়া যাবে, যখন জনগণকে শিক্ষা, দক্ষতা ও সর্বোপরী চাকরি দেওয়া যাবে। এই জনসংখ্যার ব্যাপ্তি আবার দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্ন রকম। উত্তরের রাজ্যগুলি এই ব্যপারে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে। আর দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে ইতিমধ্যেই বেশি বয়সজনিত সমস্যা শুরু হয়েছে। শ্রমিকদের দক্ষতার সমস্যার বিষয়টা আমরা প্রায় সকলেই জানি। নীতি আয়োগ বলছে, ভারতীয় শ্রমিকদের মধ্যে মাত্র 2.3 শতাংশের সঠিক কর্মদক্ষতা রয়েছে, যেখানে এই হার বিশ্বের বাকি দেশে 70 থেকে 80 শতাংশ। অর্থাৎ বলা যায়, দেশে কর্মদক্ষতার উন্নতির হার অত্যন্ত ধীর।

তবে ভারতের কর্মদক্ষতার মানচিত্রে কিছু পরিবর্তন এসেছে । জাতীয় স্তরে বেশ কিছু প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো তৈরি করা হয়েছে। এই উদ্যোগে শামিল হওয়ার জন্য বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে মিলিত ভাবে কাজ করা হচ্ছে। বিভিন্ন রাজ্যে কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির প্রকল্প নেওয়া হয়েছে । 17 জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কর্মদক্ষতা বাড়ানোর জন্য বিশেষ দায়িত্ব নিয়েছেন। অনেক কিছু করা হলেও কার্যক্ষেত্রে এর সঠিক প্রয়োগ খুবই জরুরি। এর জন্য তৃণমূলস্তরে প্রকল্পগুলির সফল রূপায়ণ খুবই প্রয়োজন। প্রয়োজন এর সঙ্গে যুক্ত সব পক্ষের যোগদানেরও।

কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে চিনের থেকে শিক্ষা নিতে পারে ভারত । 1996 সালে চিনে ভোকেশলান এডুকেশন আইন চালু হয়। চিনে প্রযুক্তি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ (TVET)-এর পক্ষে যা এক যুগান্তকারি পদক্ষেপ। চিনের অর্থনীতির বিশেষ বৈশিষ্ট্য তাদের একেবারে তৃণমূলস্তরে কর্মদক্ষতা বাড়ানোর বিষয়ে উদ্যোগী হতে সাহায্য করেছে।

এই আইনের মাধ্যমে শিক্ষা ও কিছু সংস্থার মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা হয়। পাশাপাশি এই আইনের মাধ্যমে গ্রামীণ এলাকায় অ্যাডাল্ট ট্রেনিং ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হয়। বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে বহু দেশেই নির্দিষ্ট আইন রয়েছে। ভারতেরও কর্মদক্ষতা বাড়ানোর জন্য এমনই এক আইনের প্রয়োজন, যে আইনের মাধ্যমে কেন্দ্র ও রাজ্যের নির্দিষ্ট দায়িত্ব দেওয়া থাকবে। দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া থাকবে বিভিন্ন শিল্প সংস্থারও।

দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশে কর্মদক্ষতা বাড়ানোর সঙ্গে সাধারণের জন্য উচ্চমানের শিক্ষা ব্যবস্থারও প্রচলন রয়েছে। কর্মদক্ষতা বাড়ানোর সঙ্গে আমাদের দেশেও এই রকম উচ্চমানের শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে হবে। দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হল গ্রামীণ ভারতের আর্থ সামাজিক অন্তর্ভুক্তি। শেষ এক বছরে গ্রামীণ ভারতের আয় ও মজুরি কমেছে। গ্রাম, মফস্বল ও শহরের মধ্যে পরিকাঠামো,ডিজিটাইজেশন, আর্থিক বৈষম্য দূর করতে ব্যবস্থা নিতে হবে।

এ ক্ষেত্রে আগামী পাঁচ বছর ধরে পরিকাঠামো খাতে 100 লক্ষ কোটি বিনিয়োগের সরকারি সিদ্ধান্ত খুবই উপযোগী পদক্ষেপ । তবে এই বিষয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা এখনও জানা যায়নি। সরকারের উচিত গ্রাম ও মফস্বলের জন্য এই অর্থের বেশিরভাগ খরচ করা । গত কয়েক বছরে উজ্জ্বলা যোজনার মাধ্যমে LPG সংযোগ দিয়ে সরকার রান্নার গ্যাসের ক্ষেত্রে খুবই ভাল কাজ করেছে।

এ ছাড়া বিদ্যুতের সম্প্রসারণের জন্য সৌভাগ্য যোজনা এবং স্বচ্ছ ভারত অভিযানের ক্ষেত্রেও ভাল কাজ করেছে সরকার। এই ধরনের প্রকল্পে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয়েছেন দেশের মহিলারা। ২০১৯ সালের বাজেটে 2022 সালের মধ্যে দেশের প্রতিটা পরিবারে বিদ্যুৎ ও রান্নার জন্য পরিচ্ছন্ন ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে। আগামী দুই বছরে এই প্রকল্পের অগ্রগতির দিকে নজর থাকবে।

গ্রামীণ ভারতের আর্থ সামাজিক উন্নতিতে আরও একটা বড় অস্ত্র হতে পারে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার। ভারত সরকার ডিজিটাল ইন্ডিয়া প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের নাগরিকদের মধ্যে ডিজিটাল লেনদেন বাড়াতে চাইছে। এই প্রকল্পে গ্রামীণ ভারতকে যুক্ত করতে উচ্চগতির ইন্টারনেট পরিষেবা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। মোবাইল সংযোগের ক্ষেত্রে উন্নতি হলেও বহু গ্রামীণ এলাকায় এখনও ইন্টারনেট সংযোগ একটা বড় সমস্যা।

দেশের আর্থিক অবস্থার উন্নতিতে ভাল কাজ করেছে প্রধানমন্ত্রী জনধন যোজনা । 2019 সালের সেপ্টেম্বরের হিসাব অনুযায়ী PMJDY প্রকল্পে গচ্ছিত আমানতের পরিমাণ বেড়ে এক লক্ষ দুই কোটি টাকা হয়েছে। মোট অ্যকাউন্টের পরিমাণ বেড়েছে 37 কোটি 10 লক্ষ। এই সব অ্যাকাউন্টের মধ্যে 59 শতাংশ রয়েছে গ্রামীণ ও মফস্বল এলাকায় । তবে শেষ দুই বছরে ন্যূনতম ব্যালান্সের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর থেকে এই অ্যকাউন্টের বেশির ভাগের লেনদেন বন্ধ হয়ে গিয়েছে । ফিনান্সিয়াল ইনক্লুশান অ্যাডভাইজা়রি কমিটির তত্ত্বাবধানে 2019-2024-এর জন্য ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজি ফর ফিনান্সিয়াল ইনক্লুশান (NSFI) চালু হয়েছে। আশা করা যায়, এর ফলে গ্রামীণ ভারতের আর্থিক ছবিটা একটু বদলাবে।

তৃতীয় চ্যালেঞ্জ হল সুরক্ষিত ও স্বাস্থকর ভবিষ্যৎ । রাষ্ট্রপুঞ্জের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল (SDG)-এর নিরিখে এই বিষয়টি আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ । অত্যন্ত ঘনবসতি, দূষণ এবং অস্বাস্থ্যকর জনবসতির জন্য শহুরে এলাকায় এই সমস্যটা অনেকটাই বেশি। রিপোর্ট বলছে, অসংক্রামক রোগের হার দেশে দ্রুত বেড়ে চলেছে এবং দেশের মোট মৃত্যুর প্রায় 63 শতাংশ হয় এই সব রোগ থেকে। এই বিষয় সরকার জোর দিচ্ছে প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা (PMJAY)-এর উপর। এই প্রকল্পে 10 কোটি পরিবারকে 5 লক্ষ টাকার স্বাস্থ্য বিমা দেওয়া হচ্ছে। কয়েকটি সমীক্ষা বলছে, এর জন্য এক লক্ষ কোটি টাকার প্রয়োজন। এই বিপুল প্রয়োজনের সামনে PMJAY-এর জন্য বরাদ্দ অর্থের পরিমাণ খুবই কম। এটা ঠিকই যে, স্বাস্থ্য সুরক্ষায় স্বাস্থ্য বিমার খুবই প্রয়োজন। কিন্তু লক্ষ্য হওয়া উচিত জাতীয়
স্বাস্থ্যের উন্নতি। এর জন্য জনস্বাস্থ্যে বিপুল অর্থ বরাদ্দ এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় প্রভূত উন্নতির প্রয়োজন ।

সরকারের উচিত বায়ু ও জল দূষণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং শহরে ঘনবসতির দিকে বেশি করে নজর দেওয়া। ভারতে পরিবেশবাদের ইতিহাস বহু পুরোনো । সেই 1974 সাল থেকে, যখন পরিবেশ আন্দোলনের সে ভাবে জন্ম হয়নি, এ দেশে পরিবেশের জন্য আইন তৈরি হয়েছিল। সম্প্রতি দূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকার একাধিক পদক্ষেপ করেছে। এর মধ্যে সরকারের নমামি গঙ্গে প্রকল্প অন্যতম । পাশাপাশি আমাদের দেশের পরিবেশ আইন অন্য বহু দেশের তুলনায় যথেষ্টই কড়া । তবে এর প্রয়োগ এবং ব্যবহার সে ভাবে হয় না। আর এরই ফল হল জল ও বায়ুর বিপুল মাত্রায় দূষণ। পঞ্জাব ও হরিয়ানায়
ফসলের গোড়া পোড়ানোর জন্য প্রতি বছর দিল্লির বায়ু দূষণ ভয়ঙ্কর মাত্রায় পৌঁছায় । কিন্তু সরকারেরও কৃষকদের বিকল্প ব্যবস্থার খোঁজ দিতে হবে। এর সঙ্গে দিল্লির পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ শিল্পাঞ্চল, গাড়ি ও পরিকাঠামো ক্ষেত্র। এ ক্ষেত্রে বেজিং ও সাংহাইয়ের থেকে বায়ু দূষণ কমানো ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা শেখা উচিত ।

পরিবেশ নিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের ব্যর্থ হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ প্রাতিষ্ঠানিক ব্যর্থতা এবং সাধারণ মানুষের অসচেতনতা । ‘আমার বাড়ি নোংরা না থাকলেই হল’— এই ধরনের মনোভাব পরিবেশ দূষণের অন্যতম প্রধান কারণ । পাশাপাশি কর্তৃপক্ষকে মাথায় রাখতে হবে যে, অসুখের চিকিৎসার চেয়ে তার প্রতিরোধ বেশি জরুরি । সাধারণ মানুষকেও পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে এগিয়ে আসতে হবে।

সবশেষে একটা কথা বলার। শেষ এক বছরে দেশের অর্থনীতির বৃদ্ধি এবং ক্রয়ক্ষমতা নিম্নমুখী । ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক রিপোর্টের তিন চ্যালেঞ্জের অগ্রগতি মিশ্র। বেকারত্ব বাড়লেও গ্রামে LPG সংযোগ দেওয়া, আরও বেশি পরিবারের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া, মুক্ত জায়গায় শৌচের পরিমাণ কমানো— এগুলো উন্নতির দিক । স্বাস্থ্য পরিষেবার দিকে নজরদারি বাড়লেও অসংক্রামক ব্যাধির পরিমাণ বাড়ছে। ফলে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষিত করার প্রয়োজন বাড়ছে। পরিবেশ ও অন্য দূষণের পরিমাণ বাড়লেও এই বিষয়ে জন সচেতনতা বাড়ছে। ভারত একটি বিশাল দেশ এবং এর সমস্যাগুলিও এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে আলাদা। তাই কেন্দ্রীয় স্তর তো বটেই, এই তিন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে রাজ্য সরকারগুলোকেও সচেষ্ট হতে হবে ।

এই সব চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় একটি মধ্যবর্তী পরিকল্পনাও নেওয়া যেতে পারে। অবশ্যই এই তিন চ্যালেঞ্জের সঙ্গে চতুর্থ চ্যালেঞ্জ হিসাবে কৃষির অগ্রগতিকে যোগ করতে হবে যাতে কৃষকদের আয় ও ক্রয়ক্ষমতা বাড়তে পারে ।

গত বছরের জানুয়ারি মাসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম (WEF)-এর ইনসাইট রিপোর্ট অনুযায়ী, ভবিষ্যতে দেশের মধ্যে খরচ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ তিনটি: (a) দক্ষতার মান বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান, (b) গ্রামীণ ভারতের আর্থ-সামাজিক অন্তর্ভুক্তি, (c) একটা সুরক্ষিত ও স্বাস্থ্যকর ভবিষ্যৎ। এক বছর আগে প্রকাশিত এই রিপোর্টের ভিত্তিতে আমাদের পর্যবেক্ষণ করে দেখতে হবে, কীভাবে এই তিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়া সম্ভব ।

এই চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে আলোচনা করার আগে আমাদের দেখতে হবে শেষ এক বছরে আমাদের অর্থনীতির কতটা বৃদ্ধি ঘটেছে । 2018-2019-এর প্রথম ত্রৈমাসিকের 8 শতাংশ GDP কমে 2019-2020-এর প্রথম ত্রৈমাসিকে 5 শতাংশ এবং দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে 4.5 শতাংশে এসে পৌঁছেছে ।

WEF-এর রিপোর্ট অনুযায়ী 2019 সালে ভারতের GDP বৃদ্ধি 7.5 শতাংশ হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছিল । ভারত সমগ্র বিশ্বের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান স্তম্ভ । কিন্তু WEF-এর সেই অনুমানকে ভুল প্রমাণ করে মনে করা হচ্ছে 2019-2020 অর্থবর্ষের GDP 5 শতাংশের নীচে থাকবে । বিশ্ব অর্থনীতির বিভিন্ন কারণের সঙ্গে দেশীয় কিছু কারণ যেমন, পণ্য পরিষেবা কর (GST) সংক্রান্ত কিছু বিষয়, ব্যাঙ্কগুলির প্রায় 10 লক্ষ কোটি টাকার অনুৎপাদক সম্পদ, ব্যাঙ্ক নয় এমন অর্থলগ্নি সংস্থাগুলি (NBFCs)-র সঙ্কট, কৃষি ও গ্রামীণ অর্থনীতির বেহাল দশা গত এক বছর ধরে দেশের অর্থনীতির চলতি মন্দার মতো অবস্থার অন্যতম কারণ। কোনও কোনও অর্থনীতিবিদের মতে, ভারতের অর্থনীতি এখন ICU-তে চলে গিয়েছে। তবে এখনই অত দুশ্চিন্তার কিছু নেই, কারণ এটি একটি মন্দার মতো অবস্থা, সামগ্রিক ভাবে মন্দা নয়। অর্থনীতির উন্নতি হতে হয়ত বছরখানেক সময় লাগবে।

এ বার আসা যাক প্রথম চ্যালেঞ্জের কথায়, অর্থাৎ দক্ষতার মান বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের বিষয়ে । 2017-2018 অর্থবর্ষের NSSO-এর রিপোর্ট কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে । 2017-2018 অর্থবর্ষে দেশে বেকারত্বের হার পৌঁছয় 6.1 শতাংশে, যা 45 বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি । একই সময়ে মহিলাদের কাজে যোগ দেওয়ার হার উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে । 2004-2005 অর্থবর্ষে মহিলাদের ক্ষেত্রে কাজে যোগদানের যে হার ছিল 42 শতাংশ, তা 2017-2018 সালে কমে দাঁড়ায় 22 শতাংশে । এই সংখ্যার 85-90 শতাংশ অসংগঠিত ক্ষেত্রে । অতএব, সরকারের উচিত সংগঠিত ক্ষেত্রের বৃদ্ধি ঘটানো এবং একইসঙ্গে অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মক্ষমতা বাড়ানো।

আমরা এটা খুব ভাল করেই জানি যে, বিপুল জনসংখ্যার সুবিধা হিসাবে বিপুল সংখ্যক শ্রমিক কাজে যোগ দেবে। আর এটা এমন একটা সময় হবে, যখন বাকি পৃথিবীর আয়ু ক্রমশ বাড়ছে। কিন্তু বিপুল জনসংখ্যার সুবিধা তখনই পাওয়া যাবে, যখন জনগণকে শিক্ষা, দক্ষতা ও সর্বোপরী চাকরি দেওয়া যাবে। এই জনসংখ্যার ব্যাপ্তি আবার দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্ন রকম। উত্তরের রাজ্যগুলি এই ব্যপারে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে। আর দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে ইতিমধ্যেই বেশি বয়সজনিত সমস্যা শুরু হয়েছে। শ্রমিকদের দক্ষতার সমস্যার বিষয়টা আমরা প্রায় সকলেই জানি। নীতি আয়োগ বলছে, ভারতীয় শ্রমিকদের মধ্যে মাত্র 2.3 শতাংশের সঠিক কর্মদক্ষতা রয়েছে, যেখানে এই হার বিশ্বের বাকি দেশে 70 থেকে 80 শতাংশ। অর্থাৎ বলা যায়, দেশে কর্মদক্ষতার উন্নতির হার অত্যন্ত ধীর।

তবে ভারতের কর্মদক্ষতার মানচিত্রে কিছু পরিবর্তন এসেছে । জাতীয় স্তরে বেশ কিছু প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো তৈরি করা হয়েছে। এই উদ্যোগে শামিল হওয়ার জন্য বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে মিলিত ভাবে কাজ করা হচ্ছে। বিভিন্ন রাজ্যে কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির প্রকল্প নেওয়া হয়েছে । 17 জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কর্মদক্ষতা বাড়ানোর জন্য বিশেষ দায়িত্ব নিয়েছেন। অনেক কিছু করা হলেও কার্যক্ষেত্রে এর সঠিক প্রয়োগ খুবই জরুরি। এর জন্য তৃণমূলস্তরে প্রকল্পগুলির সফল রূপায়ণ খুবই প্রয়োজন। প্রয়োজন এর সঙ্গে যুক্ত সব পক্ষের যোগদানেরও।

কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে চিনের থেকে শিক্ষা নিতে পারে ভারত । 1996 সালে চিনে ভোকেশলান এডুকেশন আইন চালু হয়। চিনে প্রযুক্তি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ (TVET)-এর পক্ষে যা এক যুগান্তকারি পদক্ষেপ। চিনের অর্থনীতির বিশেষ বৈশিষ্ট্য তাদের একেবারে তৃণমূলস্তরে কর্মদক্ষতা বাড়ানোর বিষয়ে উদ্যোগী হতে সাহায্য করেছে।

এই আইনের মাধ্যমে শিক্ষা ও কিছু সংস্থার মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা হয়। পাশাপাশি এই আইনের মাধ্যমে গ্রামীণ এলাকায় অ্যাডাল্ট ট্রেনিং ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হয়। বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে বহু দেশেই নির্দিষ্ট আইন রয়েছে। ভারতেরও কর্মদক্ষতা বাড়ানোর জন্য এমনই এক আইনের প্রয়োজন, যে আইনের মাধ্যমে কেন্দ্র ও রাজ্যের নির্দিষ্ট দায়িত্ব দেওয়া থাকবে। দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া থাকবে বিভিন্ন শিল্প সংস্থারও।

দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশে কর্মদক্ষতা বাড়ানোর সঙ্গে সাধারণের জন্য উচ্চমানের শিক্ষা ব্যবস্থারও প্রচলন রয়েছে। কর্মদক্ষতা বাড়ানোর সঙ্গে আমাদের দেশেও এই রকম উচ্চমানের শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে হবে। দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হল গ্রামীণ ভারতের আর্থ সামাজিক অন্তর্ভুক্তি। শেষ এক বছরে গ্রামীণ ভারতের আয় ও মজুরি কমেছে। গ্রাম, মফস্বল ও শহরের মধ্যে পরিকাঠামো,ডিজিটাইজেশন, আর্থিক বৈষম্য দূর করতে ব্যবস্থা নিতে হবে।

এ ক্ষেত্রে আগামী পাঁচ বছর ধরে পরিকাঠামো খাতে 100 লক্ষ কোটি বিনিয়োগের সরকারি সিদ্ধান্ত খুবই উপযোগী পদক্ষেপ । তবে এই বিষয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা এখনও জানা যায়নি। সরকারের উচিত গ্রাম ও মফস্বলের জন্য এই অর্থের বেশিরভাগ খরচ করা । গত কয়েক বছরে উজ্জ্বলা যোজনার মাধ্যমে LPG সংযোগ দিয়ে সরকার রান্নার গ্যাসের ক্ষেত্রে খুবই ভাল কাজ করেছে।

এ ছাড়া বিদ্যুতের সম্প্রসারণের জন্য সৌভাগ্য যোজনা এবং স্বচ্ছ ভারত অভিযানের ক্ষেত্রেও ভাল কাজ করেছে সরকার। এই ধরনের প্রকল্পে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয়েছেন দেশের মহিলারা। ২০১৯ সালের বাজেটে 2022 সালের মধ্যে দেশের প্রতিটা পরিবারে বিদ্যুৎ ও রান্নার জন্য পরিচ্ছন্ন ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে। আগামী দুই বছরে এই প্রকল্পের অগ্রগতির দিকে নজর থাকবে।

গ্রামীণ ভারতের আর্থ সামাজিক উন্নতিতে আরও একটা বড় অস্ত্র হতে পারে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার। ভারত সরকার ডিজিটাল ইন্ডিয়া প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের নাগরিকদের মধ্যে ডিজিটাল লেনদেন বাড়াতে চাইছে। এই প্রকল্পে গ্রামীণ ভারতকে যুক্ত করতে উচ্চগতির ইন্টারনেট পরিষেবা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। মোবাইল সংযোগের ক্ষেত্রে উন্নতি হলেও বহু গ্রামীণ এলাকায় এখনও ইন্টারনেট সংযোগ একটা বড় সমস্যা।

দেশের আর্থিক অবস্থার উন্নতিতে ভাল কাজ করেছে প্রধানমন্ত্রী জনধন যোজনা । 2019 সালের সেপ্টেম্বরের হিসাব অনুযায়ী PMJDY প্রকল্পে গচ্ছিত আমানতের পরিমাণ বেড়ে এক লক্ষ দুই কোটি টাকা হয়েছে। মোট অ্যকাউন্টের পরিমাণ বেড়েছে 37 কোটি 10 লক্ষ। এই সব অ্যাকাউন্টের মধ্যে 59 শতাংশ রয়েছে গ্রামীণ ও মফস্বল এলাকায় । তবে শেষ দুই বছরে ন্যূনতম ব্যালান্সের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর থেকে এই অ্যকাউন্টের বেশির ভাগের লেনদেন বন্ধ হয়ে গিয়েছে । ফিনান্সিয়াল ইনক্লুশান অ্যাডভাইজা়রি কমিটির তত্ত্বাবধানে 2019-2024-এর জন্য ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজি ফর ফিনান্সিয়াল ইনক্লুশান (NSFI) চালু হয়েছে। আশা করা যায়, এর ফলে গ্রামীণ ভারতের আর্থিক ছবিটা একটু বদলাবে।

তৃতীয় চ্যালেঞ্জ হল সুরক্ষিত ও স্বাস্থকর ভবিষ্যৎ । রাষ্ট্রপুঞ্জের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল (SDG)-এর নিরিখে এই বিষয়টি আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ । অত্যন্ত ঘনবসতি, দূষণ এবং অস্বাস্থ্যকর জনবসতির জন্য শহুরে এলাকায় এই সমস্যটা অনেকটাই বেশি। রিপোর্ট বলছে, অসংক্রামক রোগের হার দেশে দ্রুত বেড়ে চলেছে এবং দেশের মোট মৃত্যুর প্রায় 63 শতাংশ হয় এই সব রোগ থেকে। এই বিষয় সরকার জোর দিচ্ছে প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা (PMJAY)-এর উপর। এই প্রকল্পে 10 কোটি পরিবারকে 5 লক্ষ টাকার স্বাস্থ্য বিমা দেওয়া হচ্ছে। কয়েকটি সমীক্ষা বলছে, এর জন্য এক লক্ষ কোটি টাকার প্রয়োজন। এই বিপুল প্রয়োজনের সামনে PMJAY-এর জন্য বরাদ্দ অর্থের পরিমাণ খুবই কম। এটা ঠিকই যে, স্বাস্থ্য সুরক্ষায় স্বাস্থ্য বিমার খুবই প্রয়োজন। কিন্তু লক্ষ্য হওয়া উচিত জাতীয়
স্বাস্থ্যের উন্নতি। এর জন্য জনস্বাস্থ্যে বিপুল অর্থ বরাদ্দ এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় প্রভূত উন্নতির প্রয়োজন ।

সরকারের উচিত বায়ু ও জল দূষণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং শহরে ঘনবসতির দিকে বেশি করে নজর দেওয়া। ভারতে পরিবেশবাদের ইতিহাস বহু পুরোনো । সেই 1974 সাল থেকে, যখন পরিবেশ আন্দোলনের সে ভাবে জন্ম হয়নি, এ দেশে পরিবেশের জন্য আইন তৈরি হয়েছিল। সম্প্রতি দূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকার একাধিক পদক্ষেপ করেছে। এর মধ্যে সরকারের নমামি গঙ্গে প্রকল্প অন্যতম । পাশাপাশি আমাদের দেশের পরিবেশ আইন অন্য বহু দেশের তুলনায় যথেষ্টই কড়া । তবে এর প্রয়োগ এবং ব্যবহার সে ভাবে হয় না। আর এরই ফল হল জল ও বায়ুর বিপুল মাত্রায় দূষণ। পঞ্জাব ও হরিয়ানায়
ফসলের গোড়া পোড়ানোর জন্য প্রতি বছর দিল্লির বায়ু দূষণ ভয়ঙ্কর মাত্রায় পৌঁছায় । কিন্তু সরকারেরও কৃষকদের বিকল্প ব্যবস্থার খোঁজ দিতে হবে। এর সঙ্গে দিল্লির পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ শিল্পাঞ্চল, গাড়ি ও পরিকাঠামো ক্ষেত্র। এ ক্ষেত্রে বেজিং ও সাংহাইয়ের থেকে বায়ু দূষণ কমানো ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা শেখা উচিত ।

পরিবেশ নিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের ব্যর্থ হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ প্রাতিষ্ঠানিক ব্যর্থতা এবং সাধারণ মানুষের অসচেতনতা । ‘আমার বাড়ি নোংরা না থাকলেই হল’— এই ধরনের মনোভাব পরিবেশ দূষণের অন্যতম প্রধান কারণ । পাশাপাশি কর্তৃপক্ষকে মাথায় রাখতে হবে যে, অসুখের চিকিৎসার চেয়ে তার প্রতিরোধ বেশি জরুরি । সাধারণ মানুষকেও পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে এগিয়ে আসতে হবে।

সবশেষে একটা কথা বলার। শেষ এক বছরে দেশের অর্থনীতির বৃদ্ধি এবং ক্রয়ক্ষমতা নিম্নমুখী । ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক রিপোর্টের তিন চ্যালেঞ্জের অগ্রগতি মিশ্র। বেকারত্ব বাড়লেও গ্রামে LPG সংযোগ দেওয়া, আরও বেশি পরিবারের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া, মুক্ত জায়গায় শৌচের পরিমাণ কমানো— এগুলো উন্নতির দিক । স্বাস্থ্য পরিষেবার দিকে নজরদারি বাড়লেও অসংক্রামক ব্যাধির পরিমাণ বাড়ছে। ফলে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষিত করার প্রয়োজন বাড়ছে। পরিবেশ ও অন্য দূষণের পরিমাণ বাড়লেও এই বিষয়ে জন সচেতনতা বাড়ছে। ভারত একটি বিশাল দেশ এবং এর সমস্যাগুলিও এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে আলাদা। তাই কেন্দ্রীয় স্তর তো বটেই, এই তিন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে রাজ্য সরকারগুলোকেও সচেষ্ট হতে হবে ।

এই সব চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় একটি মধ্যবর্তী পরিকল্পনাও নেওয়া যেতে পারে। অবশ্যই এই তিন চ্যালেঞ্জের সঙ্গে চতুর্থ চ্যালেঞ্জ হিসাবে কৃষির অগ্রগতিকে যোগ করতে হবে যাতে কৃষকদের আয় ও ক্রয়ক্ষমতা বাড়তে পারে ।

Chandigarh, Jan 04 (ANI): Meet this 94-year-old entrepreneur from Chandigarh who proved that age is no bar to start. Harbhajan Kaur sells delicious home-made 'besan ki barfi' and has launched her own brand - 'Harbhajan's'. Her daughter encouraged her to pursue her passion for preparing dishes. While speaking to ANI, her daughter told, "She expressed one day that she has not earned a single penny from her own and her words struck to my heart a lot. She is so talented and we never went to eat outside even a chocolate as she cooks really well. Our childhood memories are related to 'besan ki barfi' and that's why I encouraged her to make them and sell them as well." Harbhajan Kaur is, indeed an inspiration to all the procrastinators.

Last Updated : Jan 4, 2020, 1:40 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.