কলকাতা, 20 জুন : নীরব মোদি, বিজয় মালিয়ার মতো ঋণখেলাপিরা বহাল তবিয়তে দেশের বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে । বিপুল পরিমাণ টাকা ঋণ নিয়ে শোধ না করেই চলে গেছেন দেশের বাইরে । ব্যাঙ্ক জালিয়াতির ঘটনা দেশে উত্তরোত্তর বেড়ে চলায় সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত । ব্যাঙ্কের উপর থেকে আস্থা হারাচ্ছে দেশের সাধারণ মানুষ ।
সম্প্রতি ব্যাঙ্ক জালিয়াতির ঘটনার জেরে জনস্বার্থ বিঘ্নিত । তারপরও জালনথির ভিত্তিতে অনেকেই বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ঋণ নিচ্ছে । সেই অর্থ ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ । এই জালিয়াতির তদন্ত করতে গিয়ে দেখা গেছে, ব্যাঙ্কগুলো অনেকসময় কম্পানি বা সংস্থার পক্ষ থেকে দেওয়া নথিতে কোনও ত্রুটি থাকার পরও বিশাল অঙ্কের ঋণ মঞ্জুর করছে ।
অন্যদিকে, নির্ধারিত শর্তাবলী অনুসরণ করেও প্রয়োজনে ঋণ পাচ্ছেন না সাধারণ ঋণগ্রহীতা থেকে দেশের কৃষকরা । ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে নির্ধারিত শর্তাবলী পূরণ না করেই বিপুল অর্থের ঋণ পাচ্ছে বড় সংস্থা বা তার মালিকরা । ব্যাঙ্কের পদস্থ আধিকারিকরাই নীরব মোদি, কেতন পারেখ, ভূপেশ জৈনর মতো প্রতারকদের বিপুল পরিমাণ ঋণ পেতে সাহায্য করেছেন । উলটো দিকে, ভারতের কৃষকরা ঋণ পাওয়ার জন্য ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে পারছেন না ।
আরও পড়ুন : কবিগুরুর আদর্শে গড়ে উঠুক নয়া ভারত, চান রাষ্ট্রপতি
RTI-র দায়ের হওয়া একটি পিটিশনের ভিত্তিতে যে পরিসংখ্যান প্রকাশিত হয়েছে, তা রীতিমতো উদ্বেগজনক । গত পাঁচ বছরে 23 হাজার ব্যাঙ্ক জালিয়াতির অভিযোগ দায়ের হয়েছে । তথ্য বলছে, বিগত 11 বছরে 53 হাজার ব্যাঙ্ক জালিয়াতির অভিযোগ দায়ের হয়েছে । পরিসংখ্যান আনুযায়ী, গত বছর জালিয়াতির জেরে ব্যাঙ্কগুলোর ঘাটতি হয়েছে প্রায় 71 হাজার 500 কোটি টাকা । প্রায় 6 হাজার 800টি মামলা দায়ের হয়েছে । বিগত 11 বছরে ব্যাঙ্কের দুই লাখ কোটি টাকা পরিশোধ করেনি ঋণখেলাপিরা ।
আরও পড়ুন : সবদলের নেতাদের ধন্যবাদ, বৈঠক শেষে টুইট মোদির
সুরক্ষার নামে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ যেভাবে ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে কঠিন শর্তারোপ করছে, তাতে সাধারণ ঋণগ্রহীতারা মুশকিলে পড়ছেন । বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে শুরু করে বিভিন্ন বেসরকারি ব্যাঙ্কের কর্মচারীরা সহজেই প্রলোভনের শিকার হচ্ছেন । এর জেরে কৃষকরা বিভ্রান্ত হচ্ছেন । ব্যাঙ্কের উপর থেকে সাধারণ ঋণগ্রহীতাদের ভরসা নষ্ট হচ্ছে ।