ETV Bharat / business

শেষ ত্রৈমাসিকেও বৃদ্ধিতে ধাক্কা, শেষ ঘুরে দাঁড়াবার আশা - ত্রৈমাসিক

এখন এটাই দেখার যে এই সামান্য আশার আলো, এটা কি নতুন করে ভাণ্ডার পূর্ণ করার জন্য, নাকি আরও স্থায়ী কিছুর জন্য । কিন্তু অদূর ভবিষ্যতের সবরকম সম্ভাবনার আলো হঠাৎই অন্ধকার হয়ে গেছে । প্রতিবেদনটি লিখেছেন রেণু কোহলি ৷ তিনি দিল্লির একজন ম্যাক্রোইকোনমিস্ট ।

GDP
GDP
author img

By

Published : Mar 5, 2020, 8:12 PM IST

বহির্বিশ্বের পরিস্থিতি এবং রাজকোষের আরও খারাপ অবস্থার জন্য অস্পষ্টতায় ঘেরা আর্থিক বৃদ্ধির সম্ভাবনা

28 ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত তথ্যে দেখা যাচ্ছে, শেষ ত্রৈমাসিকে GDP বৃদ্ধির হার 4.7 শতাংশ । এটা অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় জল ঢেলে দিয়েছে ৷ যদিও যে সংখ্যাটা ভাবা হয়েছিল, হুবহু সেটাই সামনে এসেছে । মন্দার পরিস্থিতি চলছেই ৷ কারণ গত দুটো ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির হার সংশোধিত হয়েছিল – GDP-র প্রত্যাশিত বৃদ্ধির হার এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে 5.1 শতাংশ থেকে 5.6 শতাংশ এবং জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে 4.5 শতাংশ থেকে 5 শতাংশ হয়েছে । এটা একটা ধাঁধা যে গতবছরের জাতীয় আয়ের নিম্নমুখী মূল্যায়ন দিয়ে এই বছরের GDP বৃদ্ধি মাপা যাবে । 2019-20 সালে বার্ষিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস 5 শতাংশ । এটায় বোঝা যাচ্ছে যে জানুয়ারি থেকে মার্চ বৃদ্ধির হার 4.7 শতাংশই থাকবে । সম্ভবত বৃদ্ধির পূর্বাভাস পরে আবারও পুনর্মূল্যায়ন করা হবে ।

শেষ ত্রৈমাসিকের পারফরম্যান্স জুলাই-সেপ্টেম্বরের থেকেও খারাপ । বেনজিরভাবে খারাপ এই ত্রৈমাসিকে দেখা গেছে ব্যবসা জগতের মনোভাব এবং ক্রেতাদের আত্মবিশ্বাসের অবনমন ৷ গাড়ি বিক্রিতে জোরালো ধাক্কা ৷ কর্পোরেট পারফরম্যান্সে ধাক্কা এবং অন্যান্য বিষয়, যেগুলো ধাঁধায় ফেলে । সংশোধিত তথ্যে দেখা যাচ্ছে, 2019-20 অর্থবর্ষে গ্রাহকদের চাহিদা আরও বেড়েছে । শেষ ত্রৈমাসিকে গ্রাহকদের খরচ করার প্রবণতা ছিল 5.9 শতাংশ । তার আগে দুটো ত্রৈমাসিকে এই প্রবণতা বেড়ে যথাক্রমে 5.6 শতাংশ এবং 5 শতাংশে পৌঁছেছিল ।

বৃদ্ধির বিভিন্ন উপাদানের বদলাতে থাকা গতিশীলতা ক্রমাগত হতাশ করছে । এর সবথেকে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ বিষয় হল, সরকারের খরচ 12 শতাংশ না বাড়লে, GDP 3.5 শতাংশে গিয়ে ঠেকত । আর্থিক বৃদ্ধির সঙ্গে সরকারি খরচের এই সম্পর্ক গোটা অর্থবর্ষ ধরে চোখে পড়েছে । সরকারের দুর্বল আর্থিক অবস্থার প্রেক্ষিতে এটা স্পষ্টতই কাম্য নয় । পাশাপাশি এটা স্বাধীনভাবে বৃদ্ধির ঘাটতিকেই প্রকট করে তুলছে । চাহিদা-ভিত্তিক উপকরণগুলোর ধাক্কা খাওয়ার মধ্যেই এটা চোখে পড়ছে – পর পর দুটো অর্থবর্ষে উৎপাদনশিল্পে সংকোচনের ইঙ্গিত দিয়ে একদিকে আমদানি ও অন্যদিকে বিনিয়োগের পরিমাণ কমেছে । আসলে, কৃষি এবং প্রশাসন বাদ দিলে, প্রায় সমস্ত সরবরাহ-ভিত্তিক উপকরণে মন্দার চিহ্ন চোখে পড়েছে । এখানে অবশ্যই উল্লেখযোগ্য নির্মাণশিল্পে চমকে দেওয়ার মতো পতন । চলতি আর্থিক বছরে এক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার প্রত্যেক ত্রৈমাসিকে 2.6 পার্সেন্টেজ পয়েন্ট পড়েছে ।

গত কয়েক বছরে যা দেখা গেছে, ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যাশা সব সময়েই সেই সময়ের বা তার পরের ত্রৈমাসিকের উপর ভর করে থাকে । যদিও, বহু বিশ্লেষকই অ-কৃষি এবং অ-সরকারি ক্ষেত্রে GDP-র বৃদ্ধি খুঁজে পেতে মন দিয়েছেন, যাতে গত ডিসেম্বরের ত্রৈমাসিক থেকে অবস্থা পরিবর্তনের ইঙ্গিত মেলে । এটা সত্যি, কিন্তু বলা শক্ত যে এই পরিস্থিতি আগামী মাসগুলোতে থাকবে এবং শক্তি সঞ্চয় করবে, নাকি ঘাটতি পূরণের মাধ্যমে চালিত হবে । চিহ্নগুলো অস্পষ্ট এবং আশাবাদী হওয়ার জন্য যথেষ্ট নয় । আশার কথা যেটা, জানুয়ারির শিল্পোৎপাদনের তথ্য এখনও জানা গেলেও, মূল শিল্পগুলো চলতি মাসে উৎপাদনে 2.2 শতাংশ বৃদ্ধি ঘটিয়েছে; এটা অগাস্ট-নভেম্বর 2019-র পতন থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত । তারপর, গত বছরের তুলনায় এই ফেব্রুয়ারিতে GST-র সংগ্রহ 8.03 শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে (টাকার অঙ্কে 1.05 ট্রিলিয়ন) ।

অন্যদিকে, আর্থিক ক্ষেত্রে যে সমস্ত ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে, যেমন, ব্যাঙ্কঋণের বৃদ্ধি, যা দেশের অর্থনীতির ইঞ্জিনে জ্বালানি জোগান দেয়, তার ছবিটাও আশাব্যঞ্জক নয় ৷ জানুয়ারিতে 8.5 শতাংশ বৃদ্ধির পর, ব্যক্তি ও সংস্থাকে দেওয়া ঋণ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথম পনেরো দিনেই কমে দাঁড়িয়েছে 6.3 শতাংশে । আবার, জানুয়ারিতে ব্যক্তিগত ঋণ গ্রহণের হার বেশ ভালোই ছিল (41 শতাংশ পণ্য কেনার ক্ষেত্রে, তার পিছনে ক্রেডিট কার্ড বকেয়া এবং গৃহঋণ) । কিন্তু বিপরীত ইঙ্গিতটা উঠে এল গাড়ি বিক্রির ক্ষেত্রে, যা ফেব্রুয়ারিতে বেশ স্তিমিতই ছিল । তখন নির্মাতারা তাঁদের BS-ফোর বাহনের ভাণ্ডার খালি করতে চাইছিলেন, এবং ক্রেতাদের উৎসাহ সেভাবে দেখা যায়নি । শেষপর্যন্ত, দুর্বল চাহিদা আর উৎপাদনের কারণে ফেব্রুয়ারির ম্যানুফ্যাকচারিং পারচেজ়িং ইনডেক্সে উৎপাদন সূচক এক পয়েন্ট পড়েছে, যদিও তা দৃঢ়ভাবে জায়গা ধরে রেখেছে ।

এখন এটাই দেখার যে এই সামান্য আশার আলো, এটা কি নতুন করে ভাণ্ডার পূর্ণ করার জন্য, নাকি আরও স্থায়ী কিছুর জন্য । কিন্তু অদূর ভবিষ্যতের সবরকম সম্ভাবনার আলো হঠাৎই অন্ধকার হয়ে গেছে । এর মূল কারণ হল, চিনে কোরোনা ভাইরাস সংক্রমণের জেরে তৈরি অপ্রত্যাশিত অনিশ্চয়তা । এই কোভিড-19 আতঙ্ক ইতিমধ্যেই ওষুধ, গাড়ি ও বৈদ্যুতিন যন্ত্র তৈরির শিল্পে কাঁচামালের অভাব এবং সরবরাহে বাধার সৃষ্টি করেছে । এতে বিশ্বজুড়ে উৎপাদন বৃদ্ধি ধাক্কা খেয়েছে ৷ যার প্রভাব নিশ্চিতভাবে পড়েছে ভারতেও । কোরোনা ভাইরাস সংক্রমণের প্রভাব আরও অন্তত কয়েকমাস থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে । এই নির্দিষ্ট ঘটনাকে ঘিরে ভবিষ্যতে গভীর অনিশ্চয়তা রয়েছে; বিশ্বজুড়ে বাজারের প্রতিক্রিয়ায় এটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে ৷ এবং এর ফলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাধা পাচ্ছে ।

বৃদ্ধির পথে দ্বিতীয় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে সরকারি খরচে কাটছাঁট । প্রতিটা অর্থবর্ষের শেষ ত্রৈমাসিকে সব সরকারই এটা করে থাকে, কিন্তু বিপুল রাজস্বের ক্ষতির জন্য এবছর এটা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ । সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, সরকার তার বিভিন্ন দপ্তর এবং মন্ত্রককে বলেছে, মার্চ মাসে 2019-20 সালের বাজেট বরাদ্দের 10 শতাংশের মধ্যে খরচ বেঁধে রাখতে । ডিসেম্বরে এই সীমা ছিল 15 শতাংশের । রাজস্ব ঘাটতি আটকাতে এই পদক্ষেপ ।

সব মিলিয়ে, স্বল্পমেয়াদী বৃদ্ধি এবং ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা এখনও বেশ গুরুতর এবং হতাশাজনক । রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক যে ব্যতিক্রমীভাবে, প্রথাবিরুদ্ধ এবং শিল্পভিত্তিক শিথিলতা দেখিয়েছে, তাতে কিছুটা আশা আছে । কম সুদের হার এবং ঋণের লভ্যতা দিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো না গেলে, সামনে প্রতিকূল পরিস্থিতিই বজায় থাকবে ।

বহির্বিশ্বের পরিস্থিতি এবং রাজকোষের আরও খারাপ অবস্থার জন্য অস্পষ্টতায় ঘেরা আর্থিক বৃদ্ধির সম্ভাবনা

28 ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত তথ্যে দেখা যাচ্ছে, শেষ ত্রৈমাসিকে GDP বৃদ্ধির হার 4.7 শতাংশ । এটা অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় জল ঢেলে দিয়েছে ৷ যদিও যে সংখ্যাটা ভাবা হয়েছিল, হুবহু সেটাই সামনে এসেছে । মন্দার পরিস্থিতি চলছেই ৷ কারণ গত দুটো ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির হার সংশোধিত হয়েছিল – GDP-র প্রত্যাশিত বৃদ্ধির হার এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে 5.1 শতাংশ থেকে 5.6 শতাংশ এবং জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে 4.5 শতাংশ থেকে 5 শতাংশ হয়েছে । এটা একটা ধাঁধা যে গতবছরের জাতীয় আয়ের নিম্নমুখী মূল্যায়ন দিয়ে এই বছরের GDP বৃদ্ধি মাপা যাবে । 2019-20 সালে বার্ষিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস 5 শতাংশ । এটায় বোঝা যাচ্ছে যে জানুয়ারি থেকে মার্চ বৃদ্ধির হার 4.7 শতাংশই থাকবে । সম্ভবত বৃদ্ধির পূর্বাভাস পরে আবারও পুনর্মূল্যায়ন করা হবে ।

শেষ ত্রৈমাসিকের পারফরম্যান্স জুলাই-সেপ্টেম্বরের থেকেও খারাপ । বেনজিরভাবে খারাপ এই ত্রৈমাসিকে দেখা গেছে ব্যবসা জগতের মনোভাব এবং ক্রেতাদের আত্মবিশ্বাসের অবনমন ৷ গাড়ি বিক্রিতে জোরালো ধাক্কা ৷ কর্পোরেট পারফরম্যান্সে ধাক্কা এবং অন্যান্য বিষয়, যেগুলো ধাঁধায় ফেলে । সংশোধিত তথ্যে দেখা যাচ্ছে, 2019-20 অর্থবর্ষে গ্রাহকদের চাহিদা আরও বেড়েছে । শেষ ত্রৈমাসিকে গ্রাহকদের খরচ করার প্রবণতা ছিল 5.9 শতাংশ । তার আগে দুটো ত্রৈমাসিকে এই প্রবণতা বেড়ে যথাক্রমে 5.6 শতাংশ এবং 5 শতাংশে পৌঁছেছিল ।

বৃদ্ধির বিভিন্ন উপাদানের বদলাতে থাকা গতিশীলতা ক্রমাগত হতাশ করছে । এর সবথেকে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ বিষয় হল, সরকারের খরচ 12 শতাংশ না বাড়লে, GDP 3.5 শতাংশে গিয়ে ঠেকত । আর্থিক বৃদ্ধির সঙ্গে সরকারি খরচের এই সম্পর্ক গোটা অর্থবর্ষ ধরে চোখে পড়েছে । সরকারের দুর্বল আর্থিক অবস্থার প্রেক্ষিতে এটা স্পষ্টতই কাম্য নয় । পাশাপাশি এটা স্বাধীনভাবে বৃদ্ধির ঘাটতিকেই প্রকট করে তুলছে । চাহিদা-ভিত্তিক উপকরণগুলোর ধাক্কা খাওয়ার মধ্যেই এটা চোখে পড়ছে – পর পর দুটো অর্থবর্ষে উৎপাদনশিল্পে সংকোচনের ইঙ্গিত দিয়ে একদিকে আমদানি ও অন্যদিকে বিনিয়োগের পরিমাণ কমেছে । আসলে, কৃষি এবং প্রশাসন বাদ দিলে, প্রায় সমস্ত সরবরাহ-ভিত্তিক উপকরণে মন্দার চিহ্ন চোখে পড়েছে । এখানে অবশ্যই উল্লেখযোগ্য নির্মাণশিল্পে চমকে দেওয়ার মতো পতন । চলতি আর্থিক বছরে এক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার প্রত্যেক ত্রৈমাসিকে 2.6 পার্সেন্টেজ পয়েন্ট পড়েছে ।

গত কয়েক বছরে যা দেখা গেছে, ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যাশা সব সময়েই সেই সময়ের বা তার পরের ত্রৈমাসিকের উপর ভর করে থাকে । যদিও, বহু বিশ্লেষকই অ-কৃষি এবং অ-সরকারি ক্ষেত্রে GDP-র বৃদ্ধি খুঁজে পেতে মন দিয়েছেন, যাতে গত ডিসেম্বরের ত্রৈমাসিক থেকে অবস্থা পরিবর্তনের ইঙ্গিত মেলে । এটা সত্যি, কিন্তু বলা শক্ত যে এই পরিস্থিতি আগামী মাসগুলোতে থাকবে এবং শক্তি সঞ্চয় করবে, নাকি ঘাটতি পূরণের মাধ্যমে চালিত হবে । চিহ্নগুলো অস্পষ্ট এবং আশাবাদী হওয়ার জন্য যথেষ্ট নয় । আশার কথা যেটা, জানুয়ারির শিল্পোৎপাদনের তথ্য এখনও জানা গেলেও, মূল শিল্পগুলো চলতি মাসে উৎপাদনে 2.2 শতাংশ বৃদ্ধি ঘটিয়েছে; এটা অগাস্ট-নভেম্বর 2019-র পতন থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত । তারপর, গত বছরের তুলনায় এই ফেব্রুয়ারিতে GST-র সংগ্রহ 8.03 শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে (টাকার অঙ্কে 1.05 ট্রিলিয়ন) ।

অন্যদিকে, আর্থিক ক্ষেত্রে যে সমস্ত ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে, যেমন, ব্যাঙ্কঋণের বৃদ্ধি, যা দেশের অর্থনীতির ইঞ্জিনে জ্বালানি জোগান দেয়, তার ছবিটাও আশাব্যঞ্জক নয় ৷ জানুয়ারিতে 8.5 শতাংশ বৃদ্ধির পর, ব্যক্তি ও সংস্থাকে দেওয়া ঋণ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথম পনেরো দিনেই কমে দাঁড়িয়েছে 6.3 শতাংশে । আবার, জানুয়ারিতে ব্যক্তিগত ঋণ গ্রহণের হার বেশ ভালোই ছিল (41 শতাংশ পণ্য কেনার ক্ষেত্রে, তার পিছনে ক্রেডিট কার্ড বকেয়া এবং গৃহঋণ) । কিন্তু বিপরীত ইঙ্গিতটা উঠে এল গাড়ি বিক্রির ক্ষেত্রে, যা ফেব্রুয়ারিতে বেশ স্তিমিতই ছিল । তখন নির্মাতারা তাঁদের BS-ফোর বাহনের ভাণ্ডার খালি করতে চাইছিলেন, এবং ক্রেতাদের উৎসাহ সেভাবে দেখা যায়নি । শেষপর্যন্ত, দুর্বল চাহিদা আর উৎপাদনের কারণে ফেব্রুয়ারির ম্যানুফ্যাকচারিং পারচেজ়িং ইনডেক্সে উৎপাদন সূচক এক পয়েন্ট পড়েছে, যদিও তা দৃঢ়ভাবে জায়গা ধরে রেখেছে ।

এখন এটাই দেখার যে এই সামান্য আশার আলো, এটা কি নতুন করে ভাণ্ডার পূর্ণ করার জন্য, নাকি আরও স্থায়ী কিছুর জন্য । কিন্তু অদূর ভবিষ্যতের সবরকম সম্ভাবনার আলো হঠাৎই অন্ধকার হয়ে গেছে । এর মূল কারণ হল, চিনে কোরোনা ভাইরাস সংক্রমণের জেরে তৈরি অপ্রত্যাশিত অনিশ্চয়তা । এই কোভিড-19 আতঙ্ক ইতিমধ্যেই ওষুধ, গাড়ি ও বৈদ্যুতিন যন্ত্র তৈরির শিল্পে কাঁচামালের অভাব এবং সরবরাহে বাধার সৃষ্টি করেছে । এতে বিশ্বজুড়ে উৎপাদন বৃদ্ধি ধাক্কা খেয়েছে ৷ যার প্রভাব নিশ্চিতভাবে পড়েছে ভারতেও । কোরোনা ভাইরাস সংক্রমণের প্রভাব আরও অন্তত কয়েকমাস থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে । এই নির্দিষ্ট ঘটনাকে ঘিরে ভবিষ্যতে গভীর অনিশ্চয়তা রয়েছে; বিশ্বজুড়ে বাজারের প্রতিক্রিয়ায় এটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে ৷ এবং এর ফলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাধা পাচ্ছে ।

বৃদ্ধির পথে দ্বিতীয় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে সরকারি খরচে কাটছাঁট । প্রতিটা অর্থবর্ষের শেষ ত্রৈমাসিকে সব সরকারই এটা করে থাকে, কিন্তু বিপুল রাজস্বের ক্ষতির জন্য এবছর এটা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ । সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, সরকার তার বিভিন্ন দপ্তর এবং মন্ত্রককে বলেছে, মার্চ মাসে 2019-20 সালের বাজেট বরাদ্দের 10 শতাংশের মধ্যে খরচ বেঁধে রাখতে । ডিসেম্বরে এই সীমা ছিল 15 শতাংশের । রাজস্ব ঘাটতি আটকাতে এই পদক্ষেপ ।

সব মিলিয়ে, স্বল্পমেয়াদী বৃদ্ধি এবং ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা এখনও বেশ গুরুতর এবং হতাশাজনক । রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক যে ব্যতিক্রমীভাবে, প্রথাবিরুদ্ধ এবং শিল্পভিত্তিক শিথিলতা দেখিয়েছে, তাতে কিছুটা আশা আছে । কম সুদের হার এবং ঋণের লভ্যতা দিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো না গেলে, সামনে প্রতিকূল পরিস্থিতিই বজায় থাকবে ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.