মালদা, 18 মে : ছেলে-বউমার অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মহকুমাশাসকের দ্বারস্থ হলেন বৃদ্ধ-বৃদ্ধা । হবিবপুরের উপনির্বাচনে ব্যস্ত থাকায় আজ মহকুমাশাসক (সদর) পার্থ চক্রবর্তী দপ্তরে ছিলেন না । তাঁর অবর্তমানে দপ্তরের এক আধিকারিকের কাছে তাঁরা অভিযোগপত্র জমা দেন ।
হবিবপুরের দক্ষিণ চাঁদমারীর গৌড়ামারী এলাকায় বাড়ি মহাবীরচন্দ্র মণ্ডল (87) ও রাধারানি মণ্ডলের (75) । তাঁদের দুই ছেলে, পাঁচ মেয়ে । সকলেই বিবাহিত । বড় ছেলে সুধাংশু মণ্ডল চাষের কাজ করে । ছোটো ছেলে গৌতম মণ্ডল চেন্নাইয়ের একটি বেসরকারি সংস্থার ইঞ্জিনিয়র । সীতা মণ্ডলের সঙ্গে সুধাংশুর বিয়ে হয় । বিয়ের পরেই মহাবীরবাবু ছেলেকে সম্পত্তির ভাগ দিয়ে দেন । কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট হয়নি সুধাংশু । অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই স্বামী-স্ত্রী মিলে মহাবীরবাবু ও তাঁর স্ত্রীয়ের উপর অত্যাচার শুরু করে । ছেলে-বউমার অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে তাঁরা চেন্নাইয়ে ছোটো ছেলের কাছে চলে যান । ১৭ বছর সেখানে ছিলেন । কিন্তু চেন্নাইয়ের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে উঠতে না পেরে ফের হবিবপুরে ফিরে আসেন । ছোটো ছেলে তাঁদের আলাদা বাড়ি করে দেন । সেই বাড়িতেই স্ত্রীকে নিয়ে থাকতে শুরু করেন মহাবীরবাবু । কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যেই বড় ছেলে ও বউমা ফের অত্যাচার শুরু করে । সম্পত্তি হাতাতে মারধরও করা হত বলে অভিযোগ । এবিষয়ে হবিবপুর থানায় একাধিকবার অভিযোগ করা হলেও কোনও লাভ হয়নি । এমন কী পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ জানিয়েও ফল মেলেনি । বাধ্য হয়েই তাঁরা আজ মহকুমাশাসকের দ্বারস্থ হয়েছেন ।
মহাবীরবাবু বলেন, "নিজের বাড়িতেও ভয়ে ভয়ে থাকতে হচ্ছে । কখন লাঠিপেটা করবে, কখন ঢিল ছুঁড়ে মারবে । বহুবার থানাতে অভিযোগ জানিয়েছি । লাভের লাভ হয়নি । শুধুমাত্র শান্তিতে বসবাস করতে চাই ।" রাধারানি বলেন, "বিয়ের পরেই বড় ছেলে ও বউমাকে সম্পত্তি ভাগ করে দিয়েছি । তা সত্ত্বেও ওরা আমাদের জমি থেকে গাছ কেটে নিচ্ছে । বাকি সম্পত্তি হাতাতে প্রতিনিয়ত গালিগালাজ করছে, মারধর করছে । বাড়িতে থাকতে ভয় পাচ্ছি । পুলিশে অভিযোগ করেও ফল মেলেনি । বাধ্য হয়ে আজ মহকুমাশাসকের কাছে এসেছি ।"
বিষয়টি নিয়ে সুধাংশু ও তার স্ত্রী মুখ খুলতে রাজি হয়নি ।