দিল্লি, 9 জুন : দুই অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে হাসপাতাল ভর্তি না নেওয়ার ঘটনায় স্বতপ্রণোদিত তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু করল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন । উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিবকে এই বিষয়ে নোটিশ পাঠিয়েছে কমিশন । চার সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়েছে যোগী সরকারকে ।
গৌতম বুদ্ধ নগরে 5 জুন এক 8 মাসের অন্তঃসত্ত্বা মারা যান । তাঁঁর স্বামীর অভিযোগ, 13 ঘণ্টা ধরে কম করে আটটি হাসপাতালে যান । কিন্তু কেউ 30 বছর বয়সি ওই মহিলাকে ভর্তি নিতে রাজি হয়নি । শেষ পর্যন্ত তিনি গ্রেটার নয়ডায় অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে মারা যান । দ্বিতীয় ঘটনায়, নয়ডার বাসিন্দা 26 বছর বয়সি এক অন্তঃসত্ত্বাকে ভর্তি নিতে মানা করে নয়ডা জেলা হাসপাতাল । দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর ওই মহিলা মেঝের উপর মৃত সন্তান প্রসব করেন । তাঁঁর পরিবারের অভিযোগ, সময়মতো চিকিৎসা পেলে শিশুটি বেঁচে যেত ।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, “এই দুই ঘটনায় সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট যদি সত্যি হয় তাহলে তা অত্যন্ত গুরুতর । মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয় এটি । রাজ্য সরকার নাগরিকদের চিকিৎসা দিতে এবং তাদের জীবন বাঁচাতে ব্যর্থ । COVID-19'এর পরিস্থিতিতে হাসপাতালগুলির ওপর চাপ বাড়ছে একথা ঠিক । চিকিৎসা ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে । কিন্তু কোনও হাসপাতাল রোগীকে ফেরাতে পারে না । যদি তা হয় তাহলে সত্যিই চিন্তার বিষয় ।” পাশাপাশি এই দুই ঘটনা সম্পর্কিত সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রকের কাছে পাঠিয়েছে মানবাধিকার কমিশন । কমিশনের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রককে এই বিষয়ে বিশেষভাবে নজর দিতে অনুরোধ করা হয়েছে । বলা হয়েছে, সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে COVID-19 সংক্রমিত ছাড়া অন্য রোগী এলে তাদের যেন ফিরিয়ে দেওয়া না হয় ।
সূত্রের খবর, প্রথম ঘটনায় অন্তঃসত্ত্বা মহিলা শিবালিক হাসপাতলে চিকিৎসা করাচ্ছিলেন । এটি বেসরকারি হাসপাতাল এবং গর্ভাবস্থায় সমস্যা সংক্রান্ত চিকিৎসা করা হয় এখানে । মৃত মহিলার স্বামীর অভিযোগ, হাসপাতালে ভরতি করতে গেলে, তাঁঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয় । এমনকী তাঁকে ESI, চাইল্ড PGI, সারদা সারদা হাসপাতাল এবং গ্রেটার নয়ডর গভর্নমেন্ট ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় । নামী বেসরকারি হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ । মৃতের স্বামী জানান, প্রত্যেক হাসপাতালে থেকে জানানো হয় রোগীর জন্য শয্যা খালি নেই । শেষে GIMS হাসপাতাল ওই মহিলাকে ভর্তি নেয় এবং তাঁঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয় । কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি । এই ঘটনায় গৌতম বুদ্ধ নগর জেলা প্রশাসন তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে ।
দ্বিতীয় ঘটনায়, অন্তঃসত্ত্বা মহিলার পরিবার প্রথমে তাঁঁকে নয়ডা জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসে । সেখান থেকে তাঁঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয় । তাঁঁর পরিবার যখন অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করছিল, সেই সময় মেঝের উপর মৃত শিশু কন্যার জন্ম দেন ওই মহিলা ।