বরেলি, 20 জুন : বয়স চারদিন । জন্মের পর থেকেই শ্বাসকষ্টে ভুগছে । হাসপাতালে ভরতি করতে চেয়ে পাগলের মতো এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেড়াচ্ছিলেন তার পরিবারের লোকেরা । কিন্তু, তাতে কোনও ভ্রূক্ষেপ ছিল না চিকিৎসকদের । বরং এক বিভাগ অন্য বিভাগের উপর দায় ঠেলছিল । এভাবেই কেটে যায় তিন ঘণ্টা । পরে বাধ্য হয়ে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার সময় হাসপাতালের সিঁড়িতেই মৃত্যু হয় শিশুটির ।
শনিবার (15 জুন) বরেলির একটি বেসরকারি হাসপাতালে জন্ম হয় উর্বশীর । জন্মের পর থেকে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা দেখা দেয় । গতকাল সকালে উর্বশীকে মহারাণা প্রতাপ জয়েন্ট হাসপাতালের পুরুষ বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয় । কিন্তু, শিশুটির শারীরিক পরীক্ষা করতে চায়নি চিকিৎসকরা । বরং ওই হাসপাতালের মহিলা বিভাগে তাকে রেফার করে দেয় । মহিলা বিভাগে যান শিশুর মা-বাবা । কিন্তু, সেখানে গিয়ে শুনতে হয়, "বেডের অভাব রয়েছে । পুরুষ বিভাগে যান । " এভাবেই কেটে যায় তিন ঘণ্টা । উর্বশীর ঠাকুমা বলেন, "আমাদের তিন ঘণ্টা ধরে দৌড় করানো হয়েছে । কারণ ওরা ভরতি করতে অস্বীকার করে । শেষ পর্যন্ত, আমরা বাড়ি নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই ।"
এর পরই শুরু হয় শিশু মৃত্যুর দায় নিয়ে টানাপোড়েন । প্রত্যক্ষদর্শী ও সাংবাদিকদের মোবাইলে রেকর্ড করা একটি ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, পুরুষ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমলেন্দ্র স্বরূপ গুপ্তা ও মহিলা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত অলকা শর্মা একে অপরের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলছেন । কমলেন্দ্র স্বরূপের দাবি, "শিশুটিকে OPD-তে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল । তাকে মহিলা বিভাগের SNCU-তে রেফার করা হয় । সেখানে সম্ভবত কিছু বলা হয়েছিল । তাই তাঁরা (শিশুর পরিবার) ঘুরতে থাকেন । যদি তাঁরা জরুরি বিভাগে যেতেন, তাহলে আমরা চিকিৎসা করতাম । " অপরদিকে, মহিলা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকের দাবি, "আমরা শিশুটির পরিবারকে পুরুষ বিভাগে যেতে বলি । আমাদের কাছে চারটি ওয়ার্মার রয়েছে । তাতে আটটি শিশু ছিল । ওয়ার্মার বেড থাকলে আমরা অবশ্যই ভরতি নিতাম । "
এভাবে শিশু মৃত্যু নিয়ে সমালোচনা শুরু হতেই টুইট করেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ । তিনি টুইটে লেখেন, 'পুরুষ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকে বহিষ্কার করা হয়েছে । মহিলা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে । "