গঙ্গারামপুর, 11 সেপ্টেম্বর : এক যুবককে পিটিয়ে ও কীটনাশক খাইয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল বিবি ও শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে । মৃত যুবকের নাম আমজাদ আলি মণ্ডল । বয়স 32 । গতরাতে গঙ্গারামপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আমজাদ । আজ দুপুরে মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে পাঠায় গঙ্গারামপুর থানার পুলিশ । এদিকে এই ঘটনায় বিবি-সহ শ্বশুরবাড়ি বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করবে বলে জানিয়েছে মৃতের পরিবার । অভিযোগ পেলে পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে গঙ্গারামপুর থানার পুলিশ ।
আমজাদ আলি মণ্ডল । বাড়ি গঙ্গারামপুরের কালদিঘিতে । পেশায় রাজমিস্ত্রি । বছর চারেক আগে নিকাহ করেন । তারপর থেকে মির্জ়াপুরের শ্বশুরবাড়িতেই ঘরজামাই হয়ে থাকতেন আমজাদ । পরে অবশ্য শ্বশুরবাড়ির লাগোয়া নিজের একটি বাড়ি বানিয়েছিলেন আমজাদ । এদিকে এখনও পর্যন্ত কোনও সন্তান ছিল না তাঁদের । দম্পতির মধ্যে সম্পর্কও খুব একটা মধুর ছিল, এমনটা বলা যাবে না । শোনা যায়, দাম্পত্যকলহ প্রায়ই লেগে থাকত । এদিকে দীর্ঘদিন শ্বশুরবাড়িতে থাকার কারণেও আমজাদকে কথা শুনতে হত প্রতিনিয়ত ।
বুধবার ভোরে ফের অশান্তি শুরু হয় আমজাদ ও তাঁর বিবির মধ্যে । বচসা ক্রমেই বাড়তে থাকে । কারণ সেই একই । দীর্ঘদিন শ্বশুরবাড়িতে থাকা । অভিযোগ, সেই সময়েই আমজাদের বিবি ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা মিলে মারধর করে আমজাদকে । কীটনাশক খাইয়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ । এরপর আমজাদ তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য শ্বশুরবাড়ির লোকেদের একাধিকবার অনুরোধ করেন । কিন্তু কেউই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যায়নি ।
আরও পড়ুন : নিকাহতে সায় ছিল না, এলোপাথারি কোপ কিশোরীর গলায়
এরপর বাধ্য হয়ে তিনি তাঁর নিজের পরিবারকে ফোন করেন । এদিকে খবর পেয়ে বুধবার সকাল ছ'টার দিকে আমজাদকে তার শ্বশুরবাড়ি থেকে অসুস্থ অবস্থায় গঙ্গারামপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভরতি করেন তাঁরা । সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রাতে তিনি মারা যান । আজ দুপুরে মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে পাঠায় গঙ্গারামপুর থানার পুলিশ ।
এবিষয়ে প্রতিবেশী মিজ়ানুর মিঞা জানান, বছর চারেক আগে আমজাদের বিয়ে হয় মির্জাপুর এলাকায়। তাঁদের কোনও সন্তান ছিল না। গত বুধবার সকালে ফোনে জানতে পারেন আমজাদ কীটনাশক খেয়ে ঘোরাফেরা করছেন । কিন্তু তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়নি । বিষয়টি জানতে পেরে তাঁরা আমজাদকে অসুস্থ অবস্থায় গঙ্গারামপুর হাসপাতালে ভরতি করান ।
মৃতের ঘাড়ে ক্ষতচিহ্ন থাকায় পরিবারের অনুমান মারধর করে কীটনাশক খাইয়ে দেওয়া হয়েছিল । এদিকে ঘটনার পর থেকে পলাতক তাঁর বিবি ও শ্বশুর বাড়ির সকলে । এনিয়ে মৃতের পরিবারের লোকেরা গঙ্গারামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করবেন বলেও জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন : বিবিকে খুন, কিশোর ছেলের অভিযোগে গ্রেপ্তার ব্যক্তি
এদিকে এনিয়ে অভিযোগ ওঠা বিবি সহ শ্বশুরবাড়ির কারোর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে এবিষয়ে গঙ্গারামপুর থানার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এখনও তাঁরা কোনো অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।