কলকাতা, 11 জুন : সন্দেশখালিতে গত শনিবার সন্ধ্যায় সংঘর্ষে 3 জনের মৃত্যুর পর আজ বিষয়টি নিয়ে প্রথম মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । আজ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি পুনঃস্থাপন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে মুখ খোলেন তিনি । বলেন, "মৃত দুই BJP কর্মীই তৃণমূল কর্মী কায়ুম মোল্লাকে মারতে গেছিল । BJP কর্মীদের মৃত্যু কীভাবে ঘটেছে তা তদন্ত সাপেক্ষ ।"
এই সংক্রান্ত খবর : বিদ্যাসাগর কলেজে 'ঈশ্বর' ফিরলেন মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে
এছাড়া রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠির সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী । বলেন, "10 জন খুন হয়েছে । কিন্তু রাজ্যপাল বলছেন 12 জন । তার মানে টার্গেট করে সেই সংখ্যাটা পূরণ করবে । আমি রাজ্যপালকে সম্মান করি । কিন্তু তাঁর রাজনৈতিক ভাষণকে সম্মান করি না । আমার সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতা রয়েছে, তাই কিছু বলছি না ।" মমতা দাবি করেন, লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে রাজ্যে 10 জনের মৃত্যু হয়েছে । তাঁদের মধ্যে 8 জন তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী । BJP -র দু'জন মারা গেলেও সেই মৃত্যু কীভাবে ঘটেছে তা তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানান তিনি ।
এই সংক্রান্ত খবর : খুনি মুখ্যমন্ত্রী বিদ্যাসাগরের মূর্তি উন্মোচন করলেন : মুকুল রায়
মমতা আরও বলেন, "বাংলার মাটিতে থাকতে হলে বাংলাকে অবজ্ঞা করা চলবে না । বাংলাকে অবজ্ঞা করলে আমার থেকে ভয়ংকর আর কেউ হবে না ।" আজ এভাবে BJP-কে হুঁশিয়ারি দেন তিনি । বলেন, "বিদ্যাসাগরের ২০০ বছর উপলক্ষে অনুষ্ঠান শুরু হবে । এটার কোনও প্রয়োজন ছিল না । কিন্তু বাধ্য হয়ে করতে হল ।
বাংলা ফেলনা নয় । গান্ধিজি গুজরাতে সম্মান পাননি । তিনি বাংলায় সম্মান পেয়েছেন । মূর্তি ভেঙে দিয়ে বর্ণ পরিচয়কে ভেঙে দেওয়া যায় না
। এটা ভাঙা নয়, আমাদের কৃষ্টিকে আঘাত করা । আমাদের সংস্কৃতিকে আঘাত করা । বাংলাকে ঘুলিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে।"
মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, "আরও চারটি বড় ব্রোঞ্জের মূর্তি গড়া হবে । কাজী নজরুল ইসলামেরও একটি মূর্তি গড়া হবে । বিদ্যাসাগর কলেজে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের নামে একটি মিউজিয়াম তৈরি হবে । তার জন্য এক কোটি টাকা দিচ্ছে রাজ্য সরকার।"
মুখ্যমন্ত্রী আক্ষেপের সুরে বলেন, "সবকিছু করার পরেও শুনতে হয় আমরা বাঙালি নই, হিন্দু নই । 34 বছর পরে ক্ষমতায় এসে আমাদের বিদ্যাসাগর, লেনিনের মূর্তি ভাঙতে হয়নি । লেনিনের মূর্তি ভেঙেছিল কে ?" BJP-কে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, "বাংলা গুজরাত নয় । গুজরাতের লোককে ভালোবাসি কিন্তু দাঙ্গাবাজদের নয় । নির্বাচনের পর থেকে 10 জন মারা গেছে । এর মধ্যে আমাদের 8 জন । কেন এমন হবে? দরকার হলে আমাকে মেরে দিন, আমি কিছু চাই না । বাংলাকে গুজরাত বানানোর চেষ্টা চলছে । তা রুখতে সবাই মিলে জোট বাঁধুন ।"