কলকাতা, 7 মে : রাজনৈতিক ময়দানে বিভিন্ন ইশুতে তরজা রোজকার ব্যাপার । কিন্তু, রাজনৈতিক শিষ্টাচার ছাড়িয়ে অনেক সময়ই বিতর্কিত মন্তব্য করতে শোনা গেছে রাজনৈতিক নেতা- নেত্রীদের । কখনও নির্বাচনী প্রচারে তো কখনও বুথে ঢুকে । দাদাগিরি দেখাতে কোনও খামতি নেই তাঁদের । কমিশনের শোকজ়কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের ঝড় উঠেছে এমন উদাহরণও কম নয় । কোথায় বাংলার সংস্কৃতি ? রাজনৈতিক ক্ষেত্র কী আগে এমনই ছিল ? এটা কি শুধুই মিডিয়ার প্রচার ? এমন সব কিছু প্রশ্নের ভিড়েও তাঁরা অবিচল । রোজ মন্তব্য আর সোশাল মিডিয়ার ট্রোলের মাঝেই দিনের পর দিন কটু মন্তব্যের পরিমাণ বেড়েছে একের পর এক । একবার দেখে নেওয়া যাক এবারের নির্বাচনে কে কী বললেন -
2 এপ্রিল পূর্ব বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলীর জামালপুরে তৃণমূলের প্রার্থী সুনীল মণ্ডলের সমর্থনে সভা করতে আসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে বলেন, "BJP-কে এই মাটিকে গণতন্ত্রের কবর দিন, গণতন্ত্রের কবর দিন আর গণতন্ত্রের কবর দিন ।"
26 এপ্রিল রানিগঞ্জে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ করে মমতা বলেন, "কাঁকর দিয়ে রসগোল্লা বানাব, খেয়ে দাঁত ভাঙবে ।"
7 মে পুরুলিয়ায় নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের বিতর্কিত মন্তব্য করেন । বলেন, "নরেন্দ্র মোদি যখন বাংলায় এসে বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তোলাবাজ, তখন আমার মনে হয় দিই ঠাসিয়ে এক গণতন্ত্রের থাপ্পড় ।"
বসিরহাট ভ্যাবলার মাঠে 26 মার্চ নির্বাচনী প্রচারে সায়ন্তন বসু বলেন, "নির্বাচনের দিন কেউ যদি বুথ দখল করতে যায় তাহলে আমি CRPF-কে বলে দেব গুলি যেন বুক লক্ষ্য করে যায় । পা লক্ষ্য করে না যায় ।"
তৃণমূলের চাকদার বিধায়ক রত্না ঘোষ কর 16 এপ্রিল দলীয় কর্মীদের সাথে একটি নির্বাচনী বৈঠকে বলেন, "আমাদের মহিলা নেতৃত্বকে বলব বুথে বুথে ঝাঁটা হাতে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে তাড়া করতে ।" যা নিয়ে বিতর্ক জোরালো হয় ।
প্রথম দফা ভোটের পর মালদা জেলার কংগ্রেস সভাপতি মোস্তাক আলম 12 এপ্রিল পুলিশকে আক্রমণ করে বলেন, "নির্বাচনের দিন কোচবিহারে যখন লুট চলছিল তখন বেঙ্গল পুলিশ হিজড়ার মতো দাঁড়িয়েছিল ।"
20 এপ্রিল রাতে বরাকর থানার IC রবীন্দ্রনাথ দলুইকে চড়া সুরে ধমক দেন বাবুল সুপ্রিয় । বলেন, "তোমার মতো নীচ, নরকের কীটের কোনও শ্রদ্ধার দরকার নেই আমার । তোমার থেকে আমি শ্রদ্ধা নেব না । কে তুমি যে শ্রদ্ধা করবে ? এতজন মহিলাকে বাড়িতে গিয়ে গালিগালাজ করে এসেছ । তোমার মাকে গিয়ে দেখাব ভিডিয়োগুলো ?"
চতুর্থ দফা নির্বাচনের পর অনুব্রত বলেন, "গেঁড়া লোক তো জয়প্রকাশ তাই মাথা কাজ করে না । মাথায় কিছু কিছু মালকড়ি কম আছে তাই ব্রেন কাজ করছে না । ওদের দলের লোকেদের ওর মাথা অপারেশন করে দেখা উচিত ওর মাথায় কী আছে ।"
13 এপ্রিল দিলীপ ঘোষকে আক্রমণ করে অনুব্রত মণ্ডল বলেন, "ও পাগল হয়ে গেছে, এবার ছেঁড়া জামা পড়ে ঘুরবে ।"
4 মে কেশপুরের আনন্দপুর থানার গাড়রবাগে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে BJP প্রার্থী ভারতী ঘোষ বলেন, "বাড়ি থেকে টেনে টেনে বের করে কুকুরের মতো মারব ।"
যার পালটা 5 মে অনুব্রত বলেন, "তোমরা কুকুরের মতো মারলে তোমাকে বিড়ালের মতো মারব ।"
4 মে দুর্গাপুরে BJP প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ বলেন, "পাঁচনের বাড়ি দিতে গেলে বদলে আমি হেলোর বাড়ি দেব ।"