ETV Bharat / briefs

ধর্মতলায় মাদ্রাসা শিক্ষকদের অবস্থানে বাধা পুলিশের, তৃণমূলকে ভোট না দেওয়ার হুঁশিয়ারি - মাদ্রাসা শিক্ষকদের অবস্থান

আজ গান্ধি মূর্তির পাদদেশে অবস্থানে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে পুলিশি বাধার মুখে পড়লেন মাদ্রাসা শিক্ষকরা ।

অবস্থানরত মাদ্রাসা শিক্ষক, protests of madrasa teachers
অবস্থানরত মাদ্রাসা শিক্ষক, protests of madrasa teachers
author img

By

Published : Sep 29, 2020, 5:17 PM IST

কলকাতা, 29 সেপ্টেম্বর: 2011 সালে ক্ষমতায় আসার পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, 10 হাজার বেসরকারি মাদ্রাসাকে সরকারি অনুমোদন দেওয়া হবে । তারপর প্রায় 9 বছর অতিক্রান্ত হয়েছে । কিন্তু, পূরণ হয়নি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে দেওয়া মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি । 2012 সাল থেকে দফায় দফায় বিক্ষোভ, অবস্থান, অনশন করে এসেছেন মাদ্রাসা শিক্ষকরা । প্রতিবারই মিলেছে নতুন করে প্রতিশ্রুতি, যা পূরণ হয়নি । আজ ফের প্রতিশ্রুতি আদায় করতে ধর্মতলায় গান্ধীমূর্তির পাদদেশে অবস্থানের ডাক দিয়েছিলেন রাজ্যের মাদ্রাসা শিক্ষকরা । কিন্তু, সেই ডাকে সারা দিয়ে কলকাতাসহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মাদ্রাসা শিক্ষকরা ধর্মতলায় পা রাখতেই পুলিশি বাধার সম্মুখীন হন ।

ক্ষমতায় আসার পর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে শিক্ষার বিস্তারে 10 হাজার মাদ্রাসাকে অনুমোদন দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী । 2012 সাল থেকে সেই প্রতিশ্রুতি যাতে পূরণ করা হয় সেই লক্ষে বহুবার আন্দোলন করা হয়েছে । রফি আহমেদ কিদোয়াই রোডে প্রথমে 11 দিন অনশনের পর ফিরহাদ হাকিমের থেকে মিলেছিল প্রতিশ্রুতি । তা পূরণ না হওয়ায় ফের রফি আহমেদ কিদোয়াই রোডে 96 দিনের অনশনের পর তখন তৃণমূলে থাকা মুকুল রায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সব দাবি মেনে নেওয়া হবে বলে । এভাবেই একের পর এক আন্দোলনের ফলে শুধুই প্রতিশ্রুতি পেয়েছিল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষরা । কিন্তু তা পূরণ হয়নি ।

এত বছরে রাজ্যে মাত্র 235টি মাদ্রাসা অনুমোদন পেয়েছে । কিন্তু, সেই মাদ্রাসাগুলিও সরকারের কাছ থেকে কোনও প্রকার সাহায্য পায় না । মাদ্রাসার উন্নতিতে একাধিক দাবি নিয়ে আজ ফের গান্ধি মূর্তির পাদদেশে অবস্থানের ডাক দিয়েছিলেন মাদ্রাসা শিক্ষকরা । ওয়েস্ট বেঙ্গল রেকগনাইজড আন-এডেড মাদ্রাসা টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের ডাকে আজ সকাল থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ধর্মতলায় আসেন মাদ্রাসা শিক্ষকরা । কিন্তু, সেখানে পা রাখতেই পুলিশি বাধার মুখে পড়েন তাঁরা । তাঁদের আসার আগে থেকেই এলাকায় প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল । সকাল 9টা থেকেই কোথাও মাদ্রাসা শিক্ষকদের দেখতে পেলেই তাঁদের পুলিশ ভ্যানে করে তুলে নিয়ে চলে যাচ্ছিল পুলিশ। এক কথায় আজ মাদ্রাসা শিক্ষকদের জমায়েত করতে দেয়নি পুলিশ । এমনকী গান্ধিমূর্তির পাদদেশের আশপাশের এলাকাতেও জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে কেউ অবস্থানে শামিল হওয়ার উদ্দেশ্যে এসেছেন জানতে পারলেই সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের তুলে নিয়ে যায় পুলিশ । শতাধিক মাদ্রাসা শিক্ষককে আজ আটক করে পুলিশ ।

পুলিশ আটক করার আগেই আজকের কর্মসূচি নিয়ে আন-এডেড মাদ্রাসা টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফে কাজি মিরাজুল ইসলাম বলেন, "আমাদের দাবি-দাওয়া তো আজকের নয় । দিদি ভালো করেই জানেন দাবি-দাওয়া কী আছে । একটা স্কুল চলতে গেলে কী প্রয়োজন হয় সেটা কি দিদি জানেন না ? দিদি যখন এসেছিলেন তখন স্টেজে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, দশ হাজার প্রতিষ্ঠান দেব । আমরা তাঁকে ভোট দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বানালাম । বানানোর পর কোথায় গেল দশ হাজার প্রতিষ্ঠান ? অনেক আবেদনের পর 235টি মাদ্রাসা দিয়েছেন । কিন্তু কোনওরকম সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়নি । খুবই দুঃখজনক যে পাশাপাশি দু'টো স্কুল আছে । একটা স্কুলের বাচ্চারা মিড-ডে-মিল, জুতো, ব্যাগ, স্কলারশিপ পাবে । আর একটা স্কুলে কিছুই পাবে না । এটা কোন ধরনের মানবিকতা ? আমাদের তো জানা ছিল না ।"

"আমরা 2012 সাল থেকে 2020 সাল পর্যন্ত একত্রিতভাবে বারবার দিদির কাছে দু'হাত জোড় করে অনুরোধ করি, দিদি আমাদের ব্যবস্থা করুন । বারবার আন্দোলন করার চেষ্টা করেছি । যখনই আন্দোলন করতে যাই তখনই ফিরহাদ হাকিম সাহেবকে আমাদের সামনে দাঁড় করিয়ে দেন । ফিরহাদ হাকিম সাহেব আমাদের সামনে সব করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমাদের তুলে দেন । 2016 সালে মুকুল রায় আমাদের বলেন, ভোটটা হয়ে যাক, 2 মাসের মধ্যে তোমাদের সব করে দেব । 2 মাসও চলে গেল, পরের ভোট চলে এল আমাদের কোনও সুরাহা হয়নি । যখনই আমরা সুরাহার কথা বলতে যাই, তখনই আমাদের সঙ্গে জন্তু-জানোয়ারের মতো ব্যবহার করা হয় । দিদি এটা কিন্তু ঠিক করছেন না আমাদের সঙ্গে । যেটা করছেন অন্যায় কাজ করছেন । যদি দাবি না মেটে তাহলে মুখ্যমন্ত্রী আগামী নির্বাচনে তাঁদের থেকে ভোট পাওয়ার আশা ছেড়ে দিতে পারেন ।" আজ এমনই হুঁশিয়ারি দেন মাদ্রাসা শিক্ষকদের একাংশ ।

কাজি মিরাজুল ইসলাম বলেন, " চিন্তা করবেন না, 2021-এর ভোট আসছে । আমাদের ভোট নিয়ে আপনি মসনদে বসেছিলেন, আমাদের ভোট নিয়ে আপনি মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন । 2012-2020 সাল পর্যন্ত অনাহারে দিন কাটছে শিক্ষকদের । তাঁদের মা-বাবারা মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন, ওষুধ কেনার পয়সা নেই। এত করুণ অবস্থা । আপনি যে এত মানবিক, আপনার মানবিকতা যদি সত্যি হত তাহলে নিশ্চিত আমাদের এই কাজটা অবশ্যই করতেন । আমরা এখন বুঝতে পারছি আপনি মানবিক নন । মুসলমানদের জন্য আপনি কোনও কাজ করেননি । একটা জাতির উন্নতির জন্য তাঁকে মূলস্রোতে নিয়ে যেতে হয়, শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হয় । মোয়াজ্জেম ভাতা, ইমাম ভাতা আর কর্মস্থান তৈরি করে জাতির উন্নতি কোনও দিন করা যায় না । আপনি সবই জানেন । কিন্তু, কেন যে করেননি আমাদের কোনও ধারণা নেই।"

কলকাতা, 29 সেপ্টেম্বর: 2011 সালে ক্ষমতায় আসার পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, 10 হাজার বেসরকারি মাদ্রাসাকে সরকারি অনুমোদন দেওয়া হবে । তারপর প্রায় 9 বছর অতিক্রান্ত হয়েছে । কিন্তু, পূরণ হয়নি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে দেওয়া মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি । 2012 সাল থেকে দফায় দফায় বিক্ষোভ, অবস্থান, অনশন করে এসেছেন মাদ্রাসা শিক্ষকরা । প্রতিবারই মিলেছে নতুন করে প্রতিশ্রুতি, যা পূরণ হয়নি । আজ ফের প্রতিশ্রুতি আদায় করতে ধর্মতলায় গান্ধীমূর্তির পাদদেশে অবস্থানের ডাক দিয়েছিলেন রাজ্যের মাদ্রাসা শিক্ষকরা । কিন্তু, সেই ডাকে সারা দিয়ে কলকাতাসহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মাদ্রাসা শিক্ষকরা ধর্মতলায় পা রাখতেই পুলিশি বাধার সম্মুখীন হন ।

ক্ষমতায় আসার পর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে শিক্ষার বিস্তারে 10 হাজার মাদ্রাসাকে অনুমোদন দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী । 2012 সাল থেকে সেই প্রতিশ্রুতি যাতে পূরণ করা হয় সেই লক্ষে বহুবার আন্দোলন করা হয়েছে । রফি আহমেদ কিদোয়াই রোডে প্রথমে 11 দিন অনশনের পর ফিরহাদ হাকিমের থেকে মিলেছিল প্রতিশ্রুতি । তা পূরণ না হওয়ায় ফের রফি আহমেদ কিদোয়াই রোডে 96 দিনের অনশনের পর তখন তৃণমূলে থাকা মুকুল রায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সব দাবি মেনে নেওয়া হবে বলে । এভাবেই একের পর এক আন্দোলনের ফলে শুধুই প্রতিশ্রুতি পেয়েছিল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষরা । কিন্তু তা পূরণ হয়নি ।

এত বছরে রাজ্যে মাত্র 235টি মাদ্রাসা অনুমোদন পেয়েছে । কিন্তু, সেই মাদ্রাসাগুলিও সরকারের কাছ থেকে কোনও প্রকার সাহায্য পায় না । মাদ্রাসার উন্নতিতে একাধিক দাবি নিয়ে আজ ফের গান্ধি মূর্তির পাদদেশে অবস্থানের ডাক দিয়েছিলেন মাদ্রাসা শিক্ষকরা । ওয়েস্ট বেঙ্গল রেকগনাইজড আন-এডেড মাদ্রাসা টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের ডাকে আজ সকাল থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ধর্মতলায় আসেন মাদ্রাসা শিক্ষকরা । কিন্তু, সেখানে পা রাখতেই পুলিশি বাধার মুখে পড়েন তাঁরা । তাঁদের আসার আগে থেকেই এলাকায় প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল । সকাল 9টা থেকেই কোথাও মাদ্রাসা শিক্ষকদের দেখতে পেলেই তাঁদের পুলিশ ভ্যানে করে তুলে নিয়ে চলে যাচ্ছিল পুলিশ। এক কথায় আজ মাদ্রাসা শিক্ষকদের জমায়েত করতে দেয়নি পুলিশ । এমনকী গান্ধিমূর্তির পাদদেশের আশপাশের এলাকাতেও জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে কেউ অবস্থানে শামিল হওয়ার উদ্দেশ্যে এসেছেন জানতে পারলেই সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের তুলে নিয়ে যায় পুলিশ । শতাধিক মাদ্রাসা শিক্ষককে আজ আটক করে পুলিশ ।

পুলিশ আটক করার আগেই আজকের কর্মসূচি নিয়ে আন-এডেড মাদ্রাসা টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফে কাজি মিরাজুল ইসলাম বলেন, "আমাদের দাবি-দাওয়া তো আজকের নয় । দিদি ভালো করেই জানেন দাবি-দাওয়া কী আছে । একটা স্কুল চলতে গেলে কী প্রয়োজন হয় সেটা কি দিদি জানেন না ? দিদি যখন এসেছিলেন তখন স্টেজে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, দশ হাজার প্রতিষ্ঠান দেব । আমরা তাঁকে ভোট দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বানালাম । বানানোর পর কোথায় গেল দশ হাজার প্রতিষ্ঠান ? অনেক আবেদনের পর 235টি মাদ্রাসা দিয়েছেন । কিন্তু কোনওরকম সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়নি । খুবই দুঃখজনক যে পাশাপাশি দু'টো স্কুল আছে । একটা স্কুলের বাচ্চারা মিড-ডে-মিল, জুতো, ব্যাগ, স্কলারশিপ পাবে । আর একটা স্কুলে কিছুই পাবে না । এটা কোন ধরনের মানবিকতা ? আমাদের তো জানা ছিল না ।"

"আমরা 2012 সাল থেকে 2020 সাল পর্যন্ত একত্রিতভাবে বারবার দিদির কাছে দু'হাত জোড় করে অনুরোধ করি, দিদি আমাদের ব্যবস্থা করুন । বারবার আন্দোলন করার চেষ্টা করেছি । যখনই আন্দোলন করতে যাই তখনই ফিরহাদ হাকিম সাহেবকে আমাদের সামনে দাঁড় করিয়ে দেন । ফিরহাদ হাকিম সাহেব আমাদের সামনে সব করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমাদের তুলে দেন । 2016 সালে মুকুল রায় আমাদের বলেন, ভোটটা হয়ে যাক, 2 মাসের মধ্যে তোমাদের সব করে দেব । 2 মাসও চলে গেল, পরের ভোট চলে এল আমাদের কোনও সুরাহা হয়নি । যখনই আমরা সুরাহার কথা বলতে যাই, তখনই আমাদের সঙ্গে জন্তু-জানোয়ারের মতো ব্যবহার করা হয় । দিদি এটা কিন্তু ঠিক করছেন না আমাদের সঙ্গে । যেটা করছেন অন্যায় কাজ করছেন । যদি দাবি না মেটে তাহলে মুখ্যমন্ত্রী আগামী নির্বাচনে তাঁদের থেকে ভোট পাওয়ার আশা ছেড়ে দিতে পারেন ।" আজ এমনই হুঁশিয়ারি দেন মাদ্রাসা শিক্ষকদের একাংশ ।

কাজি মিরাজুল ইসলাম বলেন, " চিন্তা করবেন না, 2021-এর ভোট আসছে । আমাদের ভোট নিয়ে আপনি মসনদে বসেছিলেন, আমাদের ভোট নিয়ে আপনি মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন । 2012-2020 সাল পর্যন্ত অনাহারে দিন কাটছে শিক্ষকদের । তাঁদের মা-বাবারা মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন, ওষুধ কেনার পয়সা নেই। এত করুণ অবস্থা । আপনি যে এত মানবিক, আপনার মানবিকতা যদি সত্যি হত তাহলে নিশ্চিত আমাদের এই কাজটা অবশ্যই করতেন । আমরা এখন বুঝতে পারছি আপনি মানবিক নন । মুসলমানদের জন্য আপনি কোনও কাজ করেননি । একটা জাতির উন্নতির জন্য তাঁকে মূলস্রোতে নিয়ে যেতে হয়, শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হয় । মোয়াজ্জেম ভাতা, ইমাম ভাতা আর কর্মস্থান তৈরি করে জাতির উন্নতি কোনও দিন করা যায় না । আপনি সবই জানেন । কিন্তু, কেন যে করেননি আমাদের কোনও ধারণা নেই।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.