বাঁকুড়া, 6 অগস্ট: বাঁকুড়া জেলার প্রাচীন শিল্পগুলির মধ্যে অন্যতম মৃৎশিল্প ৷ টেরাকোটার মাটির তৈরি জিনিসের খ্যাতি শুধু দেশ নয় বিশ্বজোড়া ৷ তবে করোনা প্যানডেমিকের কারণে অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই শিল্প ৷ দুর্গাপুজোর আর মাত্র দু'মাস বাকি ৷ অন্যান্য বছর এই সময় চরম ব্যস্ততার মধ্যেই কাটে শিল্পীদের ৷ তবে এবছর এখনও তেমন কোনও বড় কাজের বরাত পাননি বাঁকুড়ার 'টেরাকোটা গ্রাম' পাঁচমুড়ার মৃৎশিল্পীরা । ফলে মন ভাল নেই তাঁদের ৷
আর দু'মাস পরেই আনন্দ উৎসবে মেতে উঠবে আম-বাঙালি ৷ তবে কাজ না পেলে সেই আনন্দের লেশমাত্র পৌঁছবে না শিল্পীদের কাছে ৷ টেরাকোটার হাতি, ঘোড়া থেকে ঘর সাজানোর নানান জিনিসপত্র, এমনকি পোড়া মাটির গহনা তৈরিতেও পাঁচমুড়ার কুমোরপাড়ার শিল্পীদের ব্যাপক খ্যাতি রয়েছে । এমনকি একসময় পাঁচমুড়ার ঘোড়ার খ্যাতি ছিল আন্তর্জাতিকস্তরেও । আর এই জায়গা থেকেই মণ্ডপসজ্জা থেকে প্রতিমা সব বিষয়েই কলকাতা সহ রাজ্যজুড়ে ব্যাপক চাহিদা ছিল এখানকার শিল্পীদের । সেই সুযোগে বাড়তি কিছু রোজগার হত তাঁদের । কিন্তু করোনা প্যানডেমিক সেই আশাতেই জল ঢেলে দিয়েছে । এবছর এখনও পর্যন্ত একজন শিল্পীও প্রতিমা তৈরি থেকে মণ্ডপসজ্জার বরাত পাননি । ফলে চরম হতাশা গ্রাস করছে তাঁদের ।
আরও পড়ুন: বাঁকুড়ার গ্রামে বুনো হাতির তাণ্ডবে ভাঙল ঘর-বাড়ি, আতঙ্কে গ্রামবাসী
মৃৎশিল্পী ও শিক্ষক বিশ্বনাথ কুম্ভকার বলেন, "করোনা প্যানডেমিকে শিল্প ও শিল্পী দু'জনই ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । পুজোর অর্ডার আমরা এখনও কেউ পাইনি । এরপর পেলে বড় কাজে সমস্যা হবে । কারণ, টেরাকোটা শিল্পকর্ম ফুটিয়ে তোলা দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার । সেই সময় এখন আর হাতে নেই ৷ কারণ, পুজো প্রায় দোরগোড়ায় । এখন অর্ডার এলেও ছোটো প্রতিমা বা মণ্ডপসজ্জার কাজ সঠিক সময়ে করে ফেলতে পারব । " অন্য একশিল্পী ভূতনাথ কুম্ভকারও একই কথা বলছেন । তিনি বলেন, "করোনা সব ওলট-পালট করে দিল । পুজোর মণ্ডপসজ্জা বা প্রতিমা তৈরি করে মোটা অঙ্কের রোজগার হত । কিন্তু এবার পুজো কমিটির তরফে তেমন কোনও উৎসাহ চোখে পড়ছে না । ফলে পুজোর কাজ আদৌ পাব কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তায় আছি । "