কলকাতা, 6 জুন: দীর্ঘ প্রায় আড়াই মাস লকডাউন । ফলে রাস্তায় চলেনি গাড়ি। এবার পুনরায় গাড়ি পথে নামাতে গিয়ে দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন যান্ত্রিক ত্রুটি । এমন সময় পরিষেবা আবার চালু হলেও এহেন বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন অ্যাপ ক্যাব চালক ও মালিকরা।
লকডাউনের জেরে একটি দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ ছিল সমস্ত অ্যাপ ক্যাব। এবার গণপরিবহন আবার স্বাভাবিক হচ্ছে । তাই ফের নতুন উদ্যোগে রাস্তায় নামাতে চেয়েছিলেন ক্যাবগুলিকে। কিন্তু দীর্ঘদিন পড়ে থাকার কারণে বিকল হয়ে পড়েছে তাঁদের একমাত্র উপার্জনের মাধ্যমটি । ফলে কপালে হাত পড়েছে চালক ও মালিকদের।
এক ক্যাব চালক সুফল দাস বলেন, "আমি ফিন্যান্স সংস্থার থেকে ধার নিয়ে একটি গাড়ি কিনেছিলাম । পুরো লকডাউনের সময়টা আমার গাড়িটা বসেছিল। মাঝে কয়েকটি দিন হাসপাতালের ডিউটি করেছিলাম। বহুদিন পর গাড়ি বার করতে গিয়ে দেখি ব্যাটারি বসে গেছে । এরপর সেটা ঠিক করে গাড়ি পথে বার করে দেখি ট্রায়ারে সমস্যা দেখা দিচ্ছে । এতদিন গাড়ি চলেনি। বন্ধ ছিল উপার্জন। এত টাকা কোথা থেকে আসবে?"
গাড়ি চালাতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে কোনও গাড়ির ব্যাটারি বসে গেছে, তো কোনও গাড়ির ইঞ্জিনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। আবার কোনও গাড়ির ট্রায়ার খারাপ হলে গাছে । তাই গাড়িগুলিতে আবার পথে নামাতে গেলে কয়েক হাজার টাকার ধাক্কা বলে আশঙ্কা মালিকদের।
ওয়েস্ট বেঙ্গল অনলাইন ক্যাব অপারেটরের সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দোপাধ্যায় বলেন , "গাড়িগুলি অনেকদিন না চলার ফলে বিভিন্ন যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা যাচ্ছে । গাড়িগুলিতে পুরোনো ব্যাটারি বাতিল করে নতুন ব্যাটারি লাগাতে হবে যার ফলে খরচ হতে পারে 4000 থেকে 5000 টাকা পর্যন্ত। পাশাপাশি গাড়িগুলিতে রেডিয়েটারের সমস্যার কারণে AC ঠিক করে কাজ করছে না। এরফলে গাড়ি যথেষ্ট ঠান্ডা হচ্ছে না বলে যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন । অনেকদিন ধরে বসে থাকার ফলে ধীরে ধীরে ট্রায়ারের হওয়া কমতে থাকে ও টিউবগুলি নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়াও রয়েছে আরও বেশ কিছু ছোটো ছোটো সমস্যা দেখা দিচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই মাথায় হাত পড়েছে মালিকদের।"
তিনি আরও জানান, "COVID- 19 এর কারণে গত 70 দিন আমরা বিনা রোজগারে দিন কাটিয়েছি। ফলে সকল ক্যাব চালককে এককালীন 10,000 টাকা দেওয়ার দাবিতে আমরা সারা ভারত জুড়ে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের আয়োজন করেছি। ওলা ও উবার সংস্থা এতদিন ধরে আমাদের 25 শতাংশ কমিশন কেটেছে, বদলে আমাদের এই দুর্দিনে কোনও সাহায্য করেনি। এর প্রতিবাদে আগামী 8 জুন কলকাতার সব ক্যাব চালকরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে সামিল হতে চলেছে।"