কেরল, 15 অগস্ট: লিভ-ইন সম্পর্কে থাকলেও গার্হস্থ্য হিংসার মামলা করতে পারেন মহিলারা ৷ সম্প্রতি একটি পর্যবেক্ষণে এ কথা জানিয়েছে কেরালা হাইকোর্ট ৷ বিচারপতি অনিল কে নরেন্দ্রণ এবং পিজি অজিত কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ উল্লেখ করেছে যে, একজন মহিলা যাঁর সঙ্গে গার্হস্থ্য সম্পর্কে রয়েছেন, তাঁর হাতে যে কোনও ধরনের হিংসার শিকার হলে তিনি ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স অ্যাক্টের অধীনে মামলা করতে পারেন ।
বেঞ্চ আরও উল্লেখ করেছে যে, এই আইনটি গার্হস্থ্য সম্পর্কের সংজ্ঞায় বলেছে যে, দু'জন যখন একসঙ্গে বসবাস করেন, তা কিছু সময়ের জন্য হলেও, তাঁরা যদি বিবাহ বা সেই রকমের সম্পর্কে আবদ্ধ থাকেন ও একসঙ্গে বসবাস করেন, তাকেই গার্হস্থ্য সম্পর্ক বলা হবে ৷
আদালতের পর্যবেক্ষণ, "উপরের সংজ্ঞা থেকে এটি সম্ভব যে, একজন মহিলা একাই গার্হস্থ্য আইনের অধীনে স্বস্তি চাইছেন । বিয়ের মতো সম্পর্কের মধ্যে থাকা একজন মহিলাও ডিভি আইনের অধীনে বিচার চাওয়ার যোগ্য... এটি উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ডিভি আইনের ধারা 2(কিউ)-এ বলা আছে, বিবাহের মতোই সম্পর্কের মধ্যে থাকা একজন মহিলা, অন্য ভাবে বললে, লিভ-ইন-রিলেশনশিপে থাকা মহিলা ধারা 12-র অধীনে ডিভি আইনে আবেদন করতে পারেন ৷"
আদালত এমন একজন ব্যক্তির দায়ের করা একটি আপিল মামলার শুনানি করছিল, যিনি তাঁর বিরুদ্ধে ডিভি আইনের 12 ধারার অধীনে শুরু হওয়া এবং ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে বিচারাধীন একটি মামলাকে পারিবারিক আদালতে স্থানান্তর করতে চেয়েছিলেন ।
উল্লেখ্য, ডিভি আইনটি ভারতের সংবিধানের অধীনে গ্যারান্টিযুক্ত মহিলাদের অধিকারকে আরও কার্যকর সুরক্ষা প্রদানের জন্য প্রণীত হয়েছে ৷ কেরালা হাইকোর্ট মতামত দিয়েছে যে, মহিলাটি যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন, তাঁকে যদি একটি পরিবার আদালত বা দেওয়ানি আদালতে মামলা স্থানান্তর করার অনুমতি দেওয়া হয়, তাহলে ওই মহিলার ক্ষতি হবে ৷
আরও পড়ুন: লিভ-ইন পার্টনারকে 6 মাস ধরে কামড়ে-মারধর করে নিগ্রহ, হরিদেবপুরে গ্রেফতার অভিনেতা
আদালত আরও উল্লেখ করেছে যে, যদি ধারা 12-এর অধীনে একটি আবেদন পারিবারিক আদালতে স্থানান্তরিত হয়, তবে একটি শ্রেণিবিভাগ চলে আসবে ৷ কারণ একটি পারিবারিক আদালত শুধুমাত্র একটি বিয়ে সংক্রান্ত বিরোধ সমাধানের জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত । এটি লিভ-ইন সম্পর্কে থাকা মহিলাকে মামলার অধীনে রাখবে না ৷ এই কারণে কেরালা হাইকোর্ট বলেছে যে, ডিভি আইনের ধারা 12 এর অধীনে আবেদনটি ম্যাজিস্ট্রেট থেকে পারিবারিক আদালতে স্থানান্তর করা যাবে না । তাই আপিলটি খারিজ হয়ে যায় ।
আপিলকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী প্রভা আর মেনন এবং অরুণ স্যামুয়েল । মহিলাটির প্রতিনিধিত্ব করেন আইনজীবী সাইবি জোসে কিদাঙ্গুর, বেনি অ্যান্টনি পেরেল, অনুপ সেবাস্টিয়ান, প্রমিতা সেবাস্টিয়ান, প্রমিথা অগাস্টিন, আইরিন ম্যাথু, অদুথ্যা কিরণ ভিই, অঞ্জলি নায়ার, নাইল ফাথিমা আবদুল্লাহ এ, স্বাথি সুধীর এবং তনুশা পল ।