ভোপাল, 25 মে: কমিউনিটি সেন্টারে জনসমক্ষে সন্তান প্রসব করলেন মা ৷ সেই সময় নাকি হাসপাতালের নার্স ঘুমিয়ে ছিলেন ৷ আর চিকিৎসকরাও তাঁদের ডিউটি শেষে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন ৷ এমতাবস্থায় গর্ভবরতীর কাছে জেনারেল ওয়ার্ডে সন্তানের জন্ম দেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না ৷ এমন বেনজির ঘটনা ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের ভোপালের কোলার এলাকার একটি প্রসূতি হাসপাতালে ৷
মহিলার নাম শিখা রাজপুত ৷ তাঁর বয়স 27 ৷ তিনি জানিয়েছেন, হালকা প্রসব বেদনা অনুভব করেন ৷ তারপর হাসপাতালে চেকআপের জন্য যান ৷ সেখানেই তাঁর চিকিৎসা চলছিল ৷ শিখার অভিযোগ, হাসপাতালের চিকিৎসক তাঁকে দেখতে অস্বীকার করেন ৷ চিকিৎসক সাফ জানিয়ে দেন, হয় অন্য কোনও হাসপাতালে যেতে হবে আর নয়ত নার্সের সাহায্যে সন্তানের জন্ম দিতে হবে ৷
শিখা বলেন, "আমি হাসাপাতালের জেনারেল ওয়ার্ডে ভরতি হই ৷" শিখার স্বামী দেবেন্দ্র রাজপুর জানান, হাসপাতালের এক কর্মী তাঁকে প্রয়োজনীয় ইনজেকশ নিয়ে আসতে বলেন ৷ শিখাকে সেই ইনজেকশন দেওয়া হয় ৷ ইনজেকশন দেওয়ার পর শিখাকে রেখে নার্স তাঁর রুমে চলে যান ৷ এদিকে শিখার প্রসব যন্ত্রণা ওঠে ৷ এই অবস্থায় শিখার শারীরিক পরীক্ষার জন্য দেবেন্দ্র ও শিখার মা বারবার নার্সকে ডাকতে থাকেন ৷ শিখাকে প্রসূতি ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করার কথা জানাতে থাকেন ৷ কিন্ত কাজের কাজ হয় না।
পরিবারের অভিযোগ, তাঁদের কারও কথায় কান দেয়নি নার্স ৷ উলটে তিনি শিখার পরিবারের সদস্যদের জানান, এখনও প্রসবের সময়ের অনেকটা দেরি আছে ৷ এরপর যখন নার্স শিখাতে দেখতে আসেন, ততক্ষণে সদ্যোজাতের জন্ম দিয়েছেন শিখা ৷ শিখার শরীরে শুধুই রক্ত ৷ তবে পরিবারের কথায়, ঈশ্বরের আশীর্বাদে শিশুটি বেঁচে গিয়েছে ৷ তাদের অভিযোগ,নার্স ঘুমিয়ে ছিলেন।
হাসপাতালের চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে শিখার পরিবারের আরও অভিযোগ, চিকিৎসকরা শিখার পেটের মধ্যে খানিকটা ব্যান্ডেজ গুঁজে দিয়েছিলেন ৷ হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরে শিখার কয়েকটি অসুবিধে হয় ৷ তাঁর স্বামী দেবেন্দ্র ও অন্যরা সেই সময় তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান ৷ সেখানে চিকিৎসকরা তাঁর পেটের ভিতর থেকে ব্যান্ডেজ বের করেন ৷
শিখার স্বামী দেবেন্দ্র রাজপুত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ৷ তিনি যত দ্রুত সম্ভব অভিযুক্ত কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তুলেছেন ৷ ইটিভি ভারতের প্রতিনিধি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তারা কোনও মন্তব্য করতে চায়নি ৷ উল্লেখ্য, দেশে মাতৃত্বকালীন মৃত্যুর হারে মধ্যপ্রদেশ দ্বিতীয় ৷
আরও পড়ুন: ঠিক যেন দেবীর অবতার ! চার হাত ও চার পা নিয়ে জন্মাল শিশু