ETV Bharat / bharat

Independence Special : ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়তে রানি লক্ষ্মীবাইকে গোয়ালিরের সম্পদ দিয়েছিলেন কোষাধ্যক্ষ অমর চন্দ্র বাঠিয়া

author img

By

Published : Nov 21, 2021, 4:29 PM IST

1793 সালে রাজস্থানের বিকানিরে জন্মগ্রহণ করেন অমর চন্দ্র বাঠিয়া (Amar Chandra Banthia) ৷ শৈশব থেকে ইচ্ছে ছিল দেশের গৌরবের জন্য কিছু করবেন তিনি ৷ পৈতৃক ব্যবসায় ক্ষতির জন্য তাঁর বাবা পরিবার নিয়ে গোয়ালিয়রে চলে আসেন ৷ অর্থনৈতিক বিষয় আশয়ের উপর তাঁর দখলের জন্য তাঁকে গোয়ালিয়রের কোষাধ্যক্ষ নিয়োগ করেন রাজা জয়াজিরাও সিন্ধিয়া (Jayajirao Scindia) ৷ কিন্তু ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে রানি লক্ষ্মীবাইকে (Rani Laxmibai of Jhansi) তিনি গোয়ালিয়রের সব সম্পদ দিয়ে দেন ৷ আর তারপর...ফাঁসিকাঠে নয় গাছ থেকে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল তাঁর দেহ, 3 দিন ধরে ৷

Amar Chandra Banthia
অমর চন্দ্র বাঠিয়া

গোয়ালিয়র, 21 নভেম্বর : 1857 সাল, দেশজুড়ে ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসনের (colonial British government) বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ক্রমশ বেড়ে চলেছে ৷ তাঁর অনেক সঙ্গীই ব্রিটিশ রাজ শেষ করতে আন্দোলনে নেমেছেন ৷ আর তাঁরা এই সংগ্রামে অংশ নিতে তাঁদের বন্ধুকেও ডাক দিলেন ৷ কিন্তু এই সশস্ত্র পথ তাঁর নয় ৷ যথার্থ সময় এলে অন্য ভাবে ব্রিটিশ-বিরোধী সংগ্রামে অংশ নেবেন, সঙ্গীদের জানালেন অমর চন্দ্র বাঠিয়া (Amar Chandra Banthia) ৷ গোয়ালিয়রের (princely state of Gwalior) মসনদে তখন সিন্ধিয়ারা (Scindia dynasty) ৷ সে রাজ্যের কোষাধ্যক্ষ (treasurer) অমর চন্দ্র ৷

1793 সালে রাজস্থানের বিকানিরে জন্ম (Bikaner of Rajasthan) অমর চন্দ্র বাঠিয়ার ৷ ছোট থেকে ইচ্ছে ছিল দেশের জন্য কিছু করবেন তিনি ৷ তাঁর বাবার পৈতৃক ব্যবসা ছিল ৷ কিন্তু তাতে ক্ষতি হওয়ায় সপরিবার গোয়ালিয়রে চলে আসেন তাঁরা ৷

গোয়ালিয়রের মহারাজ আর্থিক দিক থেকে বিপর্যস্ত পরিবারটিকে আশ্রয় দেন ৷ সেখানে নতুন করে ব্যবসা শুরু করতে বলেন ৷ কঠিন পরিশ্রমের ফল পেতে দেরি হয়নি বাঠিয়া পরিবারের ৷ আর খুব দ্রুত তাঁদের সততার খবর ছড়িয়ে পড়ল গোয়ালিয়রের চুতর্দিকে ৷

আরও পড়ুন : Independence Special : আজও শহিদ ক্ষুদিরামের স্মৃতিতে বুঁদ মুজফ্ফরপুর

অর্থনৈতিক বিষয়ে অমর চন্দ্রের পারদর্শিতা বিকানিরের শাসকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল ৷ জয়াজিরাও সিন্ধিয়া (Jayajirao Scindia) তাঁকে গোয়ালিয়রের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ করলেন ৷ বিকানিরের কোষাধ্যক্ষ হওয়াটা খুব সহজ কাজ ছিল না ৷ কোষাধ্যক্ষ হিসাবে বিকানিরের সব তথ্য গোপন রাখার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ছিল তাঁর কাঁধে ৷ যা খুব কম কর্মচারীই জানতেন ৷

যাইহোক, অমর চন্দ্রের জীবনে পরিবর্তন এল ৷ আর দেশকে গৌরবান্বিত করার ইচ্ছেও পূরণ হবে এবার ৷ তিনি এই সঠিক সময়ের অপেক্ষায় ছিলেন ৷ 1857, ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাই (Rani Laxmibai of Jhansi) ব্রিটিশদের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে নামলেন ৷ ঝাঁসির আশপাশে অবস্থিত যে সব দেশিয় রাজ্যগুলি ব্রিটিশদের সঙ্গে জোট বেঁধেছে (princely states allied with the British near Jhansi), তাদের আক্রমণ করতে শুরু করলেন তিনি ৷ এবার রানি লক্ষ্মীবাই গোয়ালিয়র অধিকার করে ফেললেন ৷ কিন্তু অর্থের অভাবে তাঁর সৈন্যবাহিনী ধুঁকছিল ৷ বেশ কয়েক মাস ধরে সেনারা তাঁদের বেতন পাচ্ছিলেন না ৷ খাবার, জলও সব ফুরিয়ে আসছিল ৷

পরিস্থিতি দেখে অমর চন্দ্রের মনে হল শৈশবের ইচ্ছে পূরণের এটাই ঠিক সময় ৷ অর্থের অভাবে স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ এভাবে থেমে যেতে পারে না ৷ গোয়ালিয়রের গঙ্গাজলী ট্রেজারির (Gangajali treasury of Gwalior) সব সম্পদ রানি লক্ষ্মীবাইয়ের হাতে তুলে দিলেন তিনি ৷

আরও পড়ুন : Netaji Subhas Chandra Bose : নজরবন্দি হয়েও অপ্রতিরোধ্য নেতাজি, গোপন চিঠি পাঠাতেন পাউরুটির স্লাইসে

স্বাধীনতা আন্দোলনের জন্য যা করা দরকার, তিনি করে ফেলেছেন ৷ কিন্তু অমর চন্দ্র ভালো করেই জানতেন এর দাম দিতে হবে তাঁকে, জীবন দিয়ে ৷ ব্রিটিশরা তাঁর এই ভূমিকায় হতবাক হয়ে গিয়েছিল ৷ তারা সিদ্ধান্ত নিল অমর চন্দ্রকে এর মূল্য চোকাতে হবে ৷

এর 4দিন পর 18 জুন শহিদ হলেন রানি লক্ষ্মীবাই (Rani Lakshmibai gained martyrdom) ৷ অমর চন্দ্রকে দেশদ্রোহিতার (sedition) অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডের (sentenced to death) নির্দেশ দেওয়া হল ৷ সারাফা বাজারে (Sarafa Bazar) একটি গাছ থেকে ঝুলিয়ে দেওয়া হল তাঁকে ৷ 3 দিন ধরে ব্রিটিশরা অমর চন্দ্রের দেহ টাঙিয়ে রেখেছিল, যাতে চারপাশের লোকে আর তাদের বিরুদ্ধে মাথা তোলার সাহস না দেখাতে পারে ৷

গোয়ালিয়রের সারাফা বাজার ওরফে বুলিয়ান বাজারে (bullion market) ওই গাছটির তলায় অমর চন্দ্র বাঠিয়ার মূর্তি (statue of Amar Chandra Banthia) আজও রয়েছে ৷ মূর্তির পাশ দিয়ে চলে যাওয়া সাধারণ মানুষ মনে রাখবেন তাঁকে, স্বাধীনতা আন্দোলনে তাঁর ব্যতিক্রমী অবদানের জন্য ৷

আরও পড়ুন : Independence Day : মাস্টারদা'র সহযোগী অনুরূপ চন্দ্র সেনকে ভুলতে বসেছে বুড়ুল গ্রাম

গোয়ালিয়র, 21 নভেম্বর : 1857 সাল, দেশজুড়ে ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসনের (colonial British government) বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ক্রমশ বেড়ে চলেছে ৷ তাঁর অনেক সঙ্গীই ব্রিটিশ রাজ শেষ করতে আন্দোলনে নেমেছেন ৷ আর তাঁরা এই সংগ্রামে অংশ নিতে তাঁদের বন্ধুকেও ডাক দিলেন ৷ কিন্তু এই সশস্ত্র পথ তাঁর নয় ৷ যথার্থ সময় এলে অন্য ভাবে ব্রিটিশ-বিরোধী সংগ্রামে অংশ নেবেন, সঙ্গীদের জানালেন অমর চন্দ্র বাঠিয়া (Amar Chandra Banthia) ৷ গোয়ালিয়রের (princely state of Gwalior) মসনদে তখন সিন্ধিয়ারা (Scindia dynasty) ৷ সে রাজ্যের কোষাধ্যক্ষ (treasurer) অমর চন্দ্র ৷

1793 সালে রাজস্থানের বিকানিরে জন্ম (Bikaner of Rajasthan) অমর চন্দ্র বাঠিয়ার ৷ ছোট থেকে ইচ্ছে ছিল দেশের জন্য কিছু করবেন তিনি ৷ তাঁর বাবার পৈতৃক ব্যবসা ছিল ৷ কিন্তু তাতে ক্ষতি হওয়ায় সপরিবার গোয়ালিয়রে চলে আসেন তাঁরা ৷

গোয়ালিয়রের মহারাজ আর্থিক দিক থেকে বিপর্যস্ত পরিবারটিকে আশ্রয় দেন ৷ সেখানে নতুন করে ব্যবসা শুরু করতে বলেন ৷ কঠিন পরিশ্রমের ফল পেতে দেরি হয়নি বাঠিয়া পরিবারের ৷ আর খুব দ্রুত তাঁদের সততার খবর ছড়িয়ে পড়ল গোয়ালিয়রের চুতর্দিকে ৷

আরও পড়ুন : Independence Special : আজও শহিদ ক্ষুদিরামের স্মৃতিতে বুঁদ মুজফ্ফরপুর

অর্থনৈতিক বিষয়ে অমর চন্দ্রের পারদর্শিতা বিকানিরের শাসকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল ৷ জয়াজিরাও সিন্ধিয়া (Jayajirao Scindia) তাঁকে গোয়ালিয়রের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ করলেন ৷ বিকানিরের কোষাধ্যক্ষ হওয়াটা খুব সহজ কাজ ছিল না ৷ কোষাধ্যক্ষ হিসাবে বিকানিরের সব তথ্য গোপন রাখার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ছিল তাঁর কাঁধে ৷ যা খুব কম কর্মচারীই জানতেন ৷

যাইহোক, অমর চন্দ্রের জীবনে পরিবর্তন এল ৷ আর দেশকে গৌরবান্বিত করার ইচ্ছেও পূরণ হবে এবার ৷ তিনি এই সঠিক সময়ের অপেক্ষায় ছিলেন ৷ 1857, ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাই (Rani Laxmibai of Jhansi) ব্রিটিশদের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে নামলেন ৷ ঝাঁসির আশপাশে অবস্থিত যে সব দেশিয় রাজ্যগুলি ব্রিটিশদের সঙ্গে জোট বেঁধেছে (princely states allied with the British near Jhansi), তাদের আক্রমণ করতে শুরু করলেন তিনি ৷ এবার রানি লক্ষ্মীবাই গোয়ালিয়র অধিকার করে ফেললেন ৷ কিন্তু অর্থের অভাবে তাঁর সৈন্যবাহিনী ধুঁকছিল ৷ বেশ কয়েক মাস ধরে সেনারা তাঁদের বেতন পাচ্ছিলেন না ৷ খাবার, জলও সব ফুরিয়ে আসছিল ৷

পরিস্থিতি দেখে অমর চন্দ্রের মনে হল শৈশবের ইচ্ছে পূরণের এটাই ঠিক সময় ৷ অর্থের অভাবে স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ এভাবে থেমে যেতে পারে না ৷ গোয়ালিয়রের গঙ্গাজলী ট্রেজারির (Gangajali treasury of Gwalior) সব সম্পদ রানি লক্ষ্মীবাইয়ের হাতে তুলে দিলেন তিনি ৷

আরও পড়ুন : Netaji Subhas Chandra Bose : নজরবন্দি হয়েও অপ্রতিরোধ্য নেতাজি, গোপন চিঠি পাঠাতেন পাউরুটির স্লাইসে

স্বাধীনতা আন্দোলনের জন্য যা করা দরকার, তিনি করে ফেলেছেন ৷ কিন্তু অমর চন্দ্র ভালো করেই জানতেন এর দাম দিতে হবে তাঁকে, জীবন দিয়ে ৷ ব্রিটিশরা তাঁর এই ভূমিকায় হতবাক হয়ে গিয়েছিল ৷ তারা সিদ্ধান্ত নিল অমর চন্দ্রকে এর মূল্য চোকাতে হবে ৷

এর 4দিন পর 18 জুন শহিদ হলেন রানি লক্ষ্মীবাই (Rani Lakshmibai gained martyrdom) ৷ অমর চন্দ্রকে দেশদ্রোহিতার (sedition) অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডের (sentenced to death) নির্দেশ দেওয়া হল ৷ সারাফা বাজারে (Sarafa Bazar) একটি গাছ থেকে ঝুলিয়ে দেওয়া হল তাঁকে ৷ 3 দিন ধরে ব্রিটিশরা অমর চন্দ্রের দেহ টাঙিয়ে রেখেছিল, যাতে চারপাশের লোকে আর তাদের বিরুদ্ধে মাথা তোলার সাহস না দেখাতে পারে ৷

গোয়ালিয়রের সারাফা বাজার ওরফে বুলিয়ান বাজারে (bullion market) ওই গাছটির তলায় অমর চন্দ্র বাঠিয়ার মূর্তি (statue of Amar Chandra Banthia) আজও রয়েছে ৷ মূর্তির পাশ দিয়ে চলে যাওয়া সাধারণ মানুষ মনে রাখবেন তাঁকে, স্বাধীনতা আন্দোলনে তাঁর ব্যতিক্রমী অবদানের জন্য ৷

আরও পড়ুন : Independence Day : মাস্টারদা'র সহযোগী অনুরূপ চন্দ্র সেনকে ভুলতে বসেছে বুড়ুল গ্রাম

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.