চামোলি, 8 ফেব্রুয়ারি : 2013 সালের ক্ষততে এখনও প্রলেপ লাগেনি ৷ ধীরে ধীরে সুস্থ জীবনে ফিরছিল উত্তরাখণ্ড ৷ কিন্তু, ফের ছন্দপতন 2021-এর শুরুতেই ৷ চামোলিতে আচমকাই ভেঙে পড়ল হিমবাহ ৷ মুহূর্তে তছনছ হয়ে গেল সবকিছু ৷ এই ঘটনাকে বিজ্ঞানীদের ভাষায় 'বিরল ঘটনা' হিসেবেই বর্ণনা করা হয়েছে ৷ তবে, উত্তরাখণ্ডের এই বিপর্যয়ের পিছনে উঠে আসছে নতুন তত্ত্ব ৷ বিজ্ঞানীদের মতে, 'ওয়াটার পকেট' ফেটে যাওয়ার ফলেই বিপর্যয় নেমে আসে ৷ বিজ্ঞানীদের ভাষায় এই 'ওয়াটার পকেট' বলতে হিমবাহের মধ্যে লেকের অস্তিত্বকে বোঝানো হয় ৷
বিশেষজ্ঞদের দাবি, স্যাটেলাইট ও গুগল আর্থে ওই অঞ্চলে হিমবাহ লেকের কোনও ছবি পাওয়া যায়নি ৷ তবে, ওই অঞ্চলে 'ওয়াটার পকেট' থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা ৷ যা ফেটে যাওয়ার ফলেই এই বিপর্যয় নেমে এসেছে বলে মনে করছেন তাঁরা ৷ তবে, প্রাকৃতিক এই বিপর্যয়ের পিছনে বিশ্ব উষ্ণায়নকে দায়ী করছেন বিজ্ঞানীরা ৷ পাশাপাশি, হিমালয় অঞ্চলে লাগাতার মানুষের হস্তক্ষেপের ফলেও এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা তাঁদের ৷
আরও পড়ুন : প্রকৃতির রোষে উত্তরাখণ্ড: ভারতের পাশে বিশ্ব
চামোলির বিপর্যয়ের প্রকৃত কারণ খুঁজে পেতে এখনও বেশ কিছু সময় লাগবে বলে মনে করছেন ওয়াদিয়া ইস্টিটিউট ওফ হিমালয়ান জিওলোজির ডিরেক্টর কাঁলাচাদ সাই ৷ তাঁর মতে, প্রাকৃতিক এই বিপর্যয়ের কারণ জানার জন্য আবহওয়ার রিপোর্ট ও ডাটা খতিয়ে দেখতে হবে ৷ তারপরেই কোনও সিদ্ধান্তে আসা যাবে বলে মত তাঁর ৷ এই ঘটনাকে বিরল বলে আখ্যা দিয়ে কাঁলচাদ সাই বলেন, "হিমবাহ ফেটে যাওয়া একটি বিরল ঘটনা ৷ স্যাটেলাইট বা গুগল আর্থের ছবিতে ওই অঞ্চলে হিমবাহ লেকের দেখা পাওয়া যায়নি ৷ কিন্তু, ওই অঞ্চলে 'ওয়াটার পকেট' থাকার সম্ভাবনা রয়েছে ৷ যা ফেটেই এই বিপত্তি হতে পারে ৷ তবে এবিষয়ে এখনই কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব নয় ৷ এর জন্য আমাদের আরও বিশ্লেষণ করতে হবে ৷ আবহওয়ার রিপোর্ট ও ডাটা দেখার পরই বলা যেতে পারে যে এই ঘটনার আসল কারণ ঠিক কী ৷"
চামোলির এই প্রাকৃতিক রোষের পিছনে মানুষের হস্তক্ষেপকেও দায়ি করেছেন ওয়াদিয়া ইস্টিটিউট ওফ হিমালয়ান জিওলোজির ডিরেক্টর ৷ তাঁর মতে, হিমালয়ের স্পর্শকাতর অঞ্চলগুলিতে লাগাতার মানুষের হস্তক্ষেপের ফলেই জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে ৷ যা আরও ঝুঁকি পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি ৷ পাশাপাশি বিশ্ব উষ্ণায়ন, পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক করে তুলছে বলেও জানান তিনি ৷ তাঁর মতে, "আগে এই অঞ্চলের তাপমাত্রা -6 থেকে -20 এর মধ্যে থাকত ৷ ফলে বরফ গলার সম্ভাবনাও অনেক কম ছিল ৷ কিন্তু, বর্তমানে ওই অঞ্চলের তাপমাত্রা বেড়ে দাঁড়িয়েছে -2 ডিগ্রি সেলসিয়াসে ৷ যার ফলে সহজেই বরফ গলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকছে ৷"