নয়াদিল্লি, 20 নভেম্বর: কৃষি আইনের (Farm Laws) বিরুদ্ধে সরব হওয়াতেই ‘বেসুরো’ তকমা সেঁটে গিয়েছিল তাঁর গায়ে ৷ তার পর থেকে কৃষক আন্দোলন এবং লখিমপুর খেরি-কাণ্ডের (Lakhimpur kheri case ) সমালোচনায় লাগাতার দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলে গিয়েছেন তিনি ৷ সেই ধারা বজায় রেখেই এবার সটান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (Narendra Modi) চিঠি ধরালেন বিজেপি সাংসদ বরুণ গান্ধি (Varun Gandhi) ৷ তাতে কৃষি আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত এত দেরি করে নেওয়ার জন্য কেন্দ্রকে বিঁধেছেন তিনি ৷ তাঁর মতে, সময় থাকতে সিদ্ধান্ত নিলে, প্রাণহানি এড়ানো যেত ৷
শনিবার নেটমাধ্যমে মোদিকে লেখা নিজের চিঠি প্রকাশ করেন বরুণ ৷ তাতে ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য-সহ কৃষি সংক্রান্ত একাধিক বিষয়ে মোদির কাছে বিভিন্ন সুপারিশ জানিয়েছেন তিনি ৷ সেখানেই কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে বরুণ লেখেন, ‘কৃষি আইন প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়ে বড় মনের পরিচয় দিয়েছেন আপনি ৷ শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে নেমে 700-র বেশি কৃষক মারা গিয়েছেন ৷ আরও আগে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে, এতগুলি নিরীহ মানুষের প্রাণ যেত না ৷’ চিঠিতে মৃতদের পরিবারগুলিকে 1 কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিও তুলেছেন বরুণ ৷
আরও পড়ুন: Sonia Gandhi on farm laws repeal : কৃষকের জয়, অহঙ্কারের হার ; সোনিয়ার নিশানায় মোদি সরকার
শুধু এখানেই থামেননি বরুণ ৷ আন্দোলনকারী কৃষকদের বিরুদ্ধে দায়ের সমস্ত মামলা তুলে নেওয়ার পাশাপাশি, ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার দাবিও তুলেছেন বরুণ ৷ তাঁর যুক্তি, শুধু আইন তুলে দিলেই কৃষকদের ক্ষোভ মিটবে না ৷ বরং একটার পর একটা সমস্যা উঠে আসবেই ৷ তাই কৃষকরা যাতে ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য পান, তা সরকারকেই নিশ্চিত করতে হবে ৷
এপ্রসঙ্গে লখিমপুর খেরির ঘটনাও টেনে আনেন বরুণ ৷ তাঁর বক্তব্য, ‘সরকারের উচ্চপদে থেকে অনেক নেতা আন্দোলনকারী কৃষকদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছেন ৷ তার জেরেই কৃষক আন্দোলন ঘিরে একটা নেতিবাচক পরিবেশ গড়ে উঠেছে ৷ গত 3 অক্টোবর লখিমপুর খেরিতে এর প্রতিফলন দেখা যায়, যেখানে গাড়ির চাকায় পিষে দেওয়া হয় কৃষক ভাইদের ৷ এই হৃদয়বিদারক ঘটনা আমাদের গণতন্ত্রের ইতিহাসে চিরকাল কালো দাগ হয়ে থেকে যাবে ৷ এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর যোগসূত্র পাওয়া গিয়েছে ৷ আপনার কাছে অনুরোধ, ওঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করুন, যাতে অন্তত নিরপেক্ষ তদন্ত হয় ৷’
তবে বরুণের এই চিঠিতে বিজেপির কেউই আশ্চর্য বোধ করছেন না ৷ কারণ কোনও রাখঢাক না করে, বেশ কিছুদিন ধরেই নেটমাধ্যমে এনিয়ে সরব ছিলেন বরুণ ৷ তার জেরে দলের জাতীয় কর্মসমিতি থেকেও বাদ পড়তে হয়েছে তাঁকে ৷ লখিমপুরের ঘটনায় বিজেপির অন্যান্য নেতা-মন্ত্রীরা মুখে কুলুপ এঁটে থাকলেও, ঘটনাস্থল থেকে সামনে আসা ভিডিয়ো নিজের টুইটার হ্যান্ডলে তুলে ধরেছিলেন বরুণ ৷ কড়া পদক্ষেপের দাবি তুলেছিলেন দলের কাছে ৷ সেই নিয়ে বরুণ তো বটেই, তাঁর মা মানেকা গান্ধিও বিজেপিতে ক্রমশম কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন ৷ এমনকি বরুণ অন্য দলে যাওয়ার চিন্তাভাবনাও করছেন বলে শোনা যাচ্ছে ৷ এমন পরিস্থিতিতে বরুণের এই চিঠিতে বিজেপি নেতৃত্ব কী প্রতিক্রিয়া দেন, সেদিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল ৷