মুম্বই, 18 ফেব্রুয়ারি: শিবসেনার কর্তৃত্ব একনাথ শিন্ডের তুলে দেওয়ায় সরাসরি নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন উদ্ধব ঠাকরে (Uddhav Thackeray) ৷ নাম না করে কমিশনকে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Narendra Modi) ভৃত্য বলেও কটাক্ষ করলেন ৷ তাছাড়া প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তাঁর কটাক্ষ, মহারাষ্ট্রে আসতে গেলে মোদির এখন বালাসাহেবের মুখোশের প্রয়োজন হবে ৷ তাঁর আক্রমণের নিশানা থেকে বাদ যাননি মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীও ৷ শিন্ডের বিরুদ্ধে শিবসেনার প্রতীক তির ও ধনুক চুরি করে নেওয়ার অবিযোগ তুলেছেন তিনি ৷
শুক্রবার নির্বাচন কমিশনের তরফে শিবসেনার নাম ও প্রতীক ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয় একনাথ শিন্ডে শিবিরকে ৷ তার পর সাংবাদিক বৈঠক করে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন উদ্ধব ৷ তার পর শনিবার তিনি মাতোশ্রীতে বৈঠক করেন অনুগামীদের সঙ্গে ৷ তার পর বাইরে এসে ভাষণ দেন অনুগামীদের উদ্দেশ্যে ৷ সেখানেই তিনি কমিশন, মোদি ও শিন্ডের বিরুদ্ধে একযোগে সরব হন ৷ কিন্তু এদিন তাঁর মুখে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার বিষয়ে অবশ্য কিছু শোনা যায়নি ৷
1966 সালে শিবসেনা তৈরি করেছিলেন বালাসাহেব ঠাকরে (Bal Thackeray) ৷ দল প্রতিষ্ঠার 57 বছর পর ঠাকরে পরিবারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেল শিবসেনা ৷ এই পরিস্থিতিতে এনসিপি-র শরদ পাওয়ার (NCP Chief Sharad Pawar) থেকে কংগ্রেসের পৃথ্বিরাজ চহ্বন, সকলেই উদ্ধবকে কমিশনের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে পরবর্তী রাজনৈতিক লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ৷ অনুগামীদের সঙ্গে বৈঠকের পর উদ্ধবের কথায় সেই ইঙ্গিতই পাওয়া গিয়েছে ৷
সমর্থকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেছেন, ‘‘আমি ভেঙে পড়িনি ৷ আর আমার কাছে আপনাদের সমর্থন রয়েছে ৷ আপনারাই আমার শক্তি৷’’ তার পর জনতার দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন ৷ জানতে চেয়েছেন, ‘‘আপনারা কি ভয় পাচ্ছেন ? আমার কাছে আপনাদের দেওয়ার জন্য আর কিছুই নেই ৷’’ জনতার কাছ থেকে ইতিবাচক উত্তর পেয়ে বিরোধীদের আক্রমণের রাস্তায় হেঁটেছেন উদ্ধব ৷
তিনি বলেছেন, ‘‘আমাদের বিশ্রাম নিলে হবে না ৷ নির্বাচনেই আমরা চোরকে শিক্ষা দেব ৷ অবিলম্বে নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হোক ৷’’ প্রসঙ্গত, বৃহন্মুম্বই কর্পোরেশন বা বিএমসি (BMC)-সহ মহারাষ্ট্রে একাধিক পৌরসভার নির্বাচন বকেয়া পড়ে রয়েছে ৷ বিএমসি বরাবর শিবসেনার শক্তঘাঁটি বলে পরিচিত ৷ ফলে সেই নির্বাচনে উদ্ধব যে শক্তি প্রদর্শন করতে চান, তা তাঁর এদিনের বক্তব্যে স্পষ্ট ৷
একই সঙ্গে তাঁর দাবি, এভাবে দলের কোনও একটি অংশে প্রতীক ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া যায় না ৷ কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ভৃত্য হিসেবে কমিশন সেটাই করে দেখিয়েছে ৷ এর পুরস্কার স্বরূপ বর্তমান নির্বাচন কমিশনার হয়তো অবসরের পর কোনও রাজ্যের রাজ্যপাল পদে বসবেন ৷ কিন্তু মানুষই ঠিক করে দেবে শিবসেনা কাদের ৷ এখন দেখার এই পরিস্থিতির মোকাবিলা উদ্ধব আইনি পথে করেন, নাকি তিনি রাজনৈতিকভাবে লড়াইয়ে সামিল হন একনাথ ও বিজেপির বিরুদ্ধে !
আরও পড়ুন: পাওয়ারের মতোই কংগ্রেসও চায় উদ্ধব কমিশনের সিদ্ধান্ত মেনে ভোটে লড়াই করুন