কলকাতা, 11 এপ্রিল: রাজ্যসভার সাংসদ পথ থেকে ইস্তফা দিলেন গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফেলেইরো । গতকাল সোমবারই তৃণমূলের সর্বভারতীয় তকমা ছেঁটে ফেলেছে নির্বাচন কমিশন । এরপর মঙ্গলবার আকস্মিক ভাবেই তৃণমূলের এই সাংসদের পদত্যাগের খবর পাওয়া গেল । এই ঘটনা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল ।
প্রসঙ্গত, গোয়ায় গত বিধানসভা নির্বাচনের আগেই লুইজিনহো ফেলেইরোকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে রাজ্যসভার সাংসদ করে তৃণমূল ৷ সূত্রের খবর, কিছুদিন ধরে তৃণমূলের সঙ্গে সেভাবে যোগাযোগ রাখছিলেন না এই সাংসদ । ফলে দূরত্ব যে তৈরি হয়েছিল, সেটা স্পষ্ট ৷ কিন্তু কী কারণে সেই দূরত্ব, তা অবশ্য এখনও জানা যায়নি ৷ তৃণমূলের জাতীয় দলের তকমা হারানোর সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক আছে কি না, সেই বিষয়টি স্পষ্ট নয় ৷ তৃণমূলের বিভিন্ন মহলে কথা বলেও এই নিয়ে কোনও বিস্তারিত কোনও তথ্য মেলেনি ৷ তাই তিনি নিজেই ইস্তফা দিলেন, নাকি দল তাঁকে ইস্তফা দিতে বলেছেন, তা নিয়েও ধন্দ রয়েছে ।
প্রসঙ্গত, 2021-এর বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে কড়া টক্কর হয়েছিল তৃণমূলের ৷ কিন্তু ভোটের ফল বের হওয়ার পর দেখা যায় দুশোর বেশি আসনে জিতে বিজেপিকে কার্যত নাস্তানাবুদ করে দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের দল ৷ এর পরই জাতীয়স্তরে তৃণমূলের সংগঠন বিস্তারের বিষয়টি বাংলার শাসক দলের তরফে ঘোষণা করা হয় ৷ প্রথমে গোয়া ও তার পর ত্রিপুরায় সংগঠন বিস্তারের কাজ শুরু হয় ৷
তৃণমূলের একটি সূত্রের খবর, প্রশান্ত কিশোরের মধ্যস্থতাতেই গোয়ার একদল নেতা কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের নাম লেখান । তার পর তৃণমূলও ওই রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে জিততে তেড়েফুঁড়ে নামে ৷ কিন্তু ওই রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে ছাপ ফেলতে ব্যর্থ হয় তৃণমূল । তবে সেই সময় থেকেই রাজ্যসভার সংসদের দায়িত্ব পালন করছিলেন লুইজিনহো ফেলেইরো । কিন্তু অন্য যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের অনেকেই বহু আগে তৃণমূলের সঙ্গ ত্যাগ করেছেন ৷
গোয়ার পর ত্রিপুরায় মুখ থুবড়ে পড়ে তৃণমূল ৷ কিছুটা হলেও মুখরক্ষা হয় মেঘালয়ে ৷ কয়েকটি আসনে জেতে তৃণমূল ৷ তার পরও জাতীয় দলের তকমা হারিয়ে তৃণমূল এখন আঞ্চলিক দল ৷ এই পরিস্থিতিতে গোয়ার ফেলেইরো তৃণমূল ছাড়লেন ৷ এর পর কী আরও কেউ দল ছাড়বেন, শুরু হয়েছে রাজনৈতিক জল্পনা ৷
আরও পড়ুন: সর্বভারতীয় পার্টির তকমা হারাল তৃণমূল কংগ্রেস