নয়াদিল্লি, 26 জুলাই: চাকরি এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে এসসি, এসটি, এসইবিসি ও ইডব্লুএস-এর অধীনে নির্দিষ্ট কোটায় সংরক্ষণের সুবিধা পেতে পারেন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষেরা ৷ তবে শুধুমাত্র যদি তারা এই সংরক্ষণের বিভাগের অধীনে পড়েন ৷ সুপ্রিম কোর্টে এমনটাই জানাল কেন্দ্র ৷
শীর্ষ আদালত 2014 সালের একটি রায়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলিকে নির্দেশ দেয়, " প্রত্যেক রাজ্য তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের সামাজিক এবং শিক্ষাগতভাবে অনগ্রসর শ্রেণি হিসাবে বিবেচনা করবে এবং সরকারি চাকরি ও উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে তাদের সব ধরণের সংরক্ষণের সুবিধা দেবে ।" সামাজিক ন্যায়বিচার ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রক সুপ্রিম কোর্টে পালটা হলফনামা দায়ের করে ৷ তারা সেই হলফনামায় বলেছে, সরকার দরিদ্র এবং প্রান্তিকদের সমাজের মূলধারায় ফিরিয়ে আনার জন্য সংরক্ষণ কোটা প্রদান করে এবং শিক্ষা বা চাকরিতে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের জন্য আলাদা কোনও সংরক্ষণ কোটা নেই ।
হলফনামায় আরও বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের পরিষেবাগুলিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে এবং কেন্দ্রীয় সরকার উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভরতির ক্ষেত্রে সংরক্ষণের সুবিধাগুলি হল- তফসিলি জাতি (এসসি)- 15 শতাংশ, তফসিলি উপজাতি (এসটি) - 7.5 শতাংশ, সামাজিক ও শিক্ষাগতভাবে অনগ্রসর শ্রেণি (এসইবিসি)- 27 শতাংশ আর্থিকভাবে অনগ্রসর শ্রেণি (ইডব্লুএস)- 10 শতাংশ । সংসদ তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের জন্য অধিকার সুরক্ষা আইন পাস করেছে ৷ তবে তাদের কল্যাণের জন্য কোটা সুবিধা প্রদান করেনি । কেন্দ্র তার হলফনামায় বলেছে, "উপরের 4টি সংরক্ষণ-সহ যে কোনও সংরক্ষণের সুবিধা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ-সহ দেশের প্রান্তিক এবং ওই কোটায় যোগ্য ব্যক্তিরা পাবে ৷"
কেন্দ্র জোর দিয়েছে যে এসসি,এসটি,এসইবিসি সম্প্রদায়ের অন্তর্গত তৃতীয় লিঙ্গের মানুষেরা ইতিমধ্যেই এই সম্প্রদায়গুলির জন্য নির্ধারিত সংরক্ষণের অধিকারী । "8 লক্ষ টাকার কম পারিবারিক আয়-সহ এসসি,এসটি,এসইবিসি সম্প্রদায়ের বাইরের যে কোনও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষেরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইডব্লুএস বিভাগে অন্তর্ভুক্ত হবে ।" দেশের সমগ্র প্রান্তিক এবং যোগ্য জনসংখ্যা (তৃতীয় লিঙ্গ- সহ) বর্তমানে উপরের 4টি বিভাগের যেকোনও একটির আওতায় রয়েছে বলে হলফনামায় জানানো হয়েছে ।
আরও পড়ুন: প্রেমের তাগিদে লিঙ্গ পরিবর্তন, বিয়ের রেজিস্ট্রির আবেদন 2 বান্ধবীর
2014 সালে দেশের সর্বোচ্চ আদালত ট্রান্সজেন্ডারদের তৃতীয় লিঙ্গ হিসাবে আইনি স্বীকৃতি এবং তাদের অন্যান্য লিঙ্গের মানুষদের মতো সমানভাবে নিজেদের ইচ্ছে অনুযায়ী মর্যাদার সঙ্গে বাঁচার অধিকার দিয়েছিল । শীর্ষ আদালত কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকারগুলিকে তৃতীয় লিঙ্গের উন্নতির জন্য সামাজিক কল্যাণ প্রকল্পগুলি চালু করার নির্দেশ জারি করেছিল ৷ পাশাপাশি সংরক্ষণের সুবিধাগুলি দেওয়ার জন্য তাদের এসইবিসি হিসাবে বিবেচনা করতে বলা হয়েছিল ।
2014 সালে আদালতের জারি করা নির্দেশিকা মানা হচ্ছে না বলে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষেরা সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে ৷ সেই আবেদনের ভিত্তিতে এই বছরের মার্চ মাসে কেন্দ্রকে শোকজ নোটিশ জারি করে শীর্ষ আদালত । তার পরিপ্রেক্ষিতে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের কল্যাণের জন্য গৃহীত পদক্ষেপের বিশদ বিবরণ দিয়ে আদালতে হলফনামা জমা দেয় কেন্দ্র ৷ সেই হলফনামায় বলা হয়েছে, 21 অগস্ট 2020 সালে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের জন্য একটি জাতীয় কাউন্সিল গঠিত হয়েছে ৷ তৃতীয় লিঙ্গের বিষয়ে নীতি, কর্মসূচি, আইন এবং প্রকল্পের বিষয়ে কাউন্সিল সরকারকে পরামর্শ দেবে । এনসিইআরটি একটি প্রশিক্ষণ মডিউল তৈরি করছে ৷ যার শিরোনাম হল, স্কুল শিক্ষায় তৃতীয় লিঙ্গের শিশুদের অন্তর্ভুক্তি, উদ্বেগ এবং রোডম্যাপ ৷