কলকাতা, 15 ডিসেম্বর : রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে আগামী দু‘দিন দেশজুড়ে ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের (Bank Strike) ডাক দিলেন সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্ক আধিকারিক ও কর্মচারীরা । গোটা দেশের পাশাপাশি এরাজ্যেও 16 ও 17 ডিসেম্বর এই দু‘দিন সমস্ত ব্যাঙ্ক ও এটিএম পরিষেবা বন্ধ থাকবে । শনিবার সকাল থেকে ফের স্বাভাবিক হবে পরিষেবা ।
যদিও দু‘দিন ধর্মঘট চলাকালীন ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিং ও হাসপাতাল এলাকায় এটিএম পরিষেবা সচল থাকবে বলে জানা গিয়েছে । ধর্মঘট প্রসঙ্গে মঙ্গলবার ব্যাঙ্ক কর্মীদের সম্মিলিত সংগঠন ইউনাইটেড ফেডারেশন অফ ব্যাঙ্ক ইউনিয়নের (United Federation of Bank Union) তরফে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করা হয় কলকাতার অজিত সেন ভবনে । এই ধর্মঘট সফল করার জন্য সাধারণ মানুষকে আহ্বান জানান তাঁরা। সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, ইউএফবিইউর আহ্বায়ক গৌতম নিয়োগী । উপস্থিত ছিলেন আধিকারিক সংগঠনের নেতা সঞ্জয় দাস ও কর্মচারী সংগঠনের নেতা জয়দেব দাসগুপ্ত ।
সংগঠনের তরফে এদিন বক্তারা জানান, বৃহস্পতি ও শুক্রবার গোটা দেশের মতোই এরাজ্যেও সমস্ত সরকারি, বেসরকারি ব্যাঙ্কের প্রায় 6000 শাখা ও 12000 এটিএম বন্ধ থাকবে। ধর্মঘটের কারণ হিসেবে এদিন তাঁরা কেন্দ্রীয় সরকারের জনস্বার্থ বিরোধী নীতিকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন । তাঁদের অভিযোগ, দু‘টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককে বেসরকারিকরণ (bank privatization news) করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে কেন্দ্র সরকার ।
আরও পড়ুন : ব্য়াঙ্ক বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্তে হতাশ কর্মীরা
আগামী দিনে এই বেসরকারিকরণ চূড়ান্ত করলে শুধুমাত্র ব্যাঙ্ক কর্মচারী অথবা আধিকারিকদের ক্ষতি হবে না, বেশি ক্ষতির মুখে পড়বেন সাধারণ মানুষ । গরিব মানুষ থেকে শুরু করে কৃষকরা অল্প সুদে ঋণ পাবেন না। পড়ুয়ারাও উচ্চশিক্ষার জন্য অল্প সুদে ঋণ পাবেন না । আরও যে সমস্ত কল্যাণমূলক পরিষেবা মানুষের কাছে পৌঁছয় সেগুলিতেও ব্যাঘাত ঘটবে বলে দাবি ব্যাঙ্ক সংগঠনের । সংগঠনের কর্তারা জানান, ব্যাঙ্কে মানুষের কষ্টার্জিত আমানত আর সুরক্ষিত থাকবে না। তাই আমজনতার স্বার্থ সুরক্ষিত করতেই এই দু‘দিনব্যাপী ধর্মঘট।
যদি এই ধর্মঘট হওয়ার পরেও সরকারের হুঁশ না ফেরে তাহলে লাগাতার আন্দোলনের পথে য়াওয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছেন সংগঠনের কর্তারা। তাঁদের অভিযোগ, সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে বিপুল শূন্যপদ থাকা সত্ত্বেও কর্মী নিয়োগ করছে না। ফলে যতই আধুনিকীকরণ হোক না কেন ব্যাঙ্কিং পরিষেবায় খামতি থেকে যাচ্ছে । যার জেরে অনেক ক্ষেত্রেই গ্রাহক অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে । অসন্তোষ তৈরি করাই কেন্দ্রীয় সরকারের মূল লক্ষ্য। এই অসন্তোষকে কাজে লাগিয়ে সরকারি ব্যাঙ্কের ওপর থেকে ক্রমশ আস্থা ও বিশ্বাস কমানোর চেষ্টা করছে ।
আরও পড়ুন : Bank Privatisation : চলতি অর্থবর্ষেই বেসরকারিকরণ হতে পারে 3 রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক