আগরতলা, 15 ডিসেম্বর: ত্রিপুরায় বিজেপির নেতৃত্বে সরকারের অধীনে প্রতি মুহূর্তে লঙ্ঘিত মানবাধিকার (Tripura TMC writes to HRC)। চাকরি চাইলেই পুলিশি বর্বরতার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ । ত্রিপুরা মানবাধিকার কমিশনের (Human Right Commission) কাছে এই অভিযোগ জানাল তৃণমূল কংগ্রেস ৷ ত্রিপুরা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি পীযূষকান্তি বিশ্বাস, সাংসদ সুস্মিতা দেব-সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ত্রিপুরা মানবাধিকার কমিশনের কাছে এই মর্মে ডেপুটেশন জমা দেন (Police Atrocities Against Unemployed Youth)৷
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে কমিশনকে দেওয়া চিঠিতে পীযূষকান্তি বিশ্বাস বলেছেন, "আমি ত্রিপুরার আগরতলা শহরে মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘনের প্রতি আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি ৷ এ ব্যাপারে আপনার হস্তক্ষেপের আবেদন করছি । 2018 সালে রাজ্যে ক্ষমতায় আসা সরকার চাকরির বিষয়ে বড় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল । চাকরির জন্য তাদের প্রতিশ্রুতি পালনে সরকারের ব্যর্থতা বেকার যুবকদের উপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করেছে ।"
সম্প্রতি স্নাতক শিক্ষকদের (এসটিজিটি) পরীক্ষায় যাঁরা বসেছিলেন তাঁদের উপর পুলিশের লাঠিচার্জের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বিশ্বাস দাবি করেছেন, "পরীক্ষার বৈধতা এবং নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়ম অনুযায়ী প্রায় 6 মাসের মধ্যে সম্পন্ন করা উচিত ৷ যার মধ্যে প্রায় চার মাস শেষ হয়ে গিয়েছে এবং আরও দুই মাসে পরীক্ষা কোনও কাজে আসবে না । এই পরিস্থিতিতে অসহায় যুবক-যুবতী রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর কাছে পৌঁছে তাঁদের নিয়োগের দাবি জানিয়েছিলেন ।"
আরও পড়ুন: ত্রিপুরায় কংগ্রেসে ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান একশোরও বেশি কংগ্রেস সমর্থক পরিবারের
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে যে, 12 ডিসেম্বর তাঁরা শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল নাথের বাড়ির বাইরে শান্তিপূর্ণভাবে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখান । তবু নিরস্ত্র এসটিজিটি প্রার্থীদের উপর পুলিশ লাঠি চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি ৷ তিনি লিখেছেন, "ত্রিপুরা পুলিশ শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের উপর লাঠিচার্জের নির্দেশ দেয় এবং তাঁদের নির্দয়ভাবে মারতে শুরু করে । প্রায় 40 জনের চিকিৎসা বা হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন ছিল এবং 4 জন গুরুতর আহত হয়েছেন । সংবাদমাধ্যমে গোটা বিষয়টি প্রচার করা হয়েছে । বেশ কিছু ভিডিয়োও পাবলিক ডোমেইনে রয়েছে । আহতদের মধ্যে একজন গর্ভবতীও রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে । প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, পুলিশ নির্মম ভাবে লাঠি চালিয়েছে ৷ যাঁরা আহত হয়েছেন তাঁদের এক্স-রে এবং অন্যান্য চিকিৎসার খরচও নিজেদের দিতে হয়েছে । আহতদের চিকিৎসার জন্য, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য পুলিশ কোনও সাহায্য করেনি ৷"
ত্রিপুরা পুলিশের এই আচরণকে 'নৃশংস' বলে অভিহিত করেছেন ত্রিপুরা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি । তিনি লিখেছেন, "শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের উপর লাঠিচার্জ ও তাঁদের আহত করা অত্যন্ত নির্লজ্জ কাজ । এই ঘটনায় মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে ৷ কারণ শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের নির্দয়ভাবে মারধর করা হয়েছে, আহত করা হয়েছে ৷ স্যার, আমাদের সংবিধানের 19(1)(a) এবং 19(1)(b) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করা মানুষের অধিকার ।" এই ঘটনায় তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে ওই চিঠিতে ৷
টুইটারে এই চিঠিটি তুলে ধরে ত্রিপুরা তৃণমূল কংগ্রেস বলেছে, "সাধারণ মানুষের দাবিতে সোচ্চার আমরা । মিথ্যে প্রতিশ্রুতি, পুলিশি অত্যাচার, প্রশাসনিক গাফিলতি এবং নিপীড়িত জীবন - এইগুলোই শেষ পাঁচ বছরে ক্রমাগত পেয়েছে ত্রিপুরাবাসী ।"