ধারওয়াড় (কর্ণাটক), 18 জানুয়ারি: জলের ট্যাঙ্কের মাথায় উঠে বাসন্তীকে বিয়ের দাবি জানিয়েছিল বীরু ৷ শোলের সে দৃশ্য মনে করিয়ে দিল এক চোর ! কারণ সেও মোবাইল টাওয়ারে চড়ে বসে বিচার চেয়েছে ! দিনের ব্যস্ত সময়ে টাওয়ারে উঠে বিচারের জন্য চেঁচাচ্ছে চোর ৷ তাঁর দাবি, বিচারপতি সেখানে আসুন ৷
চোরের নাম জাভেদ ৷ সে একজন পকেটমার ৷ তখন বিকেল 4টে ৷ ভরপুর ব্যস্ত শহর ৷ স্কুল ছুটির সময়, বাড়ি ফেরার সময় ৷ কর্নাটকের ধারওয়াড়ে জুবিলি সার্কলের কাছে একটি মোবাইলের টাওয়ারের উপরে উঠে বসে পড়ে সে ৷ তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোনায়া জারি করা হয়েছে ৷ তাই টাওয়ারে উঠে খানিক হুমকির সুরে প্রতিবাদের পথ বেছে নেয় পকেটমার ৷
চোর জোর দিতে থাকে, তার বিচার চাই ৷ সে ওই বিশাল উচ্চতা থেকে চেঁচিয়ে বলতে থাকে, "যতক্ষণ না পর্যন্ত জেলা দায়রা বিচারক এখানে আসছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আমি টাওয়ার থেকে নেমে আসব না ৷" দিনের ব্য়স্ত সময় ৷ নীচ দিয়ে শুধু বাস, গাড়ি ৷ টাওয়ারের একটা সরু রডের উপর বসে রয়েছে জাভেদ ৷ এই দৃশ্য দেখলে রীতিমতো শিউরে উঠতে হয় ৷ ওই উচ্চতা থেকে একবার নীচে পড়লে চোরের প্রাণ সংশয় হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে ৷ বিচারের দাবিতে চোরের এমন কাণ্ডে রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায় শহরে ৷ স্থানীয়রা এই কাণ্ড দেখে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেয় ৷
আরও পড়ুন: নবান্নে মজেছে গ্রামবাসী, মল্লারপুরে লক্ষ্মী-মন্দিরের দান বাক্স নিয়ে পালাল দুই চোর!
ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে চোরকে নেমে আসার অনুরোধ জানায় ৷ তাকে নামিয়ে আনার জন্য পুলিশ চোরের কাছে অনেক কাকুতিমিনুতি করতে থাকে ৷ কিন্তু নাছোড় জাভেদ নামবে না ৷ এবার পুলিশ দমকলবাহিনীকে ডেকে পাঠায় ৷ দমকলকর্মীরাও অনেক ডাকাডাকি করে টাওয়ারে বসে থাকা চোরকে নামার কথা জানায় ৷
পরে, চোরকে নামিয়ে আনতে দু'টি উদ্ধারকারী দল তৈরি হয় ৷ তাঁরা প্রথমে জাভেদকে জল এবং খাবার দেয় ৷ বারেবারে তাকে নেমে আসার অনুরোধ করেন ৷ যদিও, এত সহজে মানতে নারাজ চোর জাভেদ ৷ সে প্রথমে খাবারদাবার ছুড়ে ফেলে দেয় ৷ শুধুমাত্র জলটুকু খেয়েছিল পকেটমার ৷ সঙ্গে সে এমন একটা ভাব করতে থাকে, যেন টাওয়ার থেকে এই নেমে আসছে ৷ কিন্তু না, টাওয়ারেই বসে রয়েছে জাভেদ ৷ এবার চোর একটি সিগারেট চায় উদ্ধারকারীদের কাছ থেকে ৷ এরপর বিরিয়ানির আবদার আসে ৷ চোরকে প্রথমে সিগারেট দেওয়া হয় ৷ টাওয়ারের মাথায় বসে সিগারেট খায় সে ৷ এরপর বিরিয়ানিরও কিছুটা খেয়ে বাকিটা নীচে ফেলে দেয় জাভেদ ৷
এইসব তুলকালাম কাণ্ড চলতে থাকে আর নানা উপায়ে তাকে নামিয়ে আনার চেষ্টা করতে থাকে উদ্ধারকারীরা ৷ প্রায় তিন ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পর আনুমানিক 7টা নাগাদ চোরকে জানানো হয় যে, মোবাইল টাওয়ারের নীচেই অপেক্ষা করছেন জেলা বিচারক ৷ তাতেই শেষে মাথা ঠান্ডা হয় জাভেদের ৷ উদ্ধারকারী দল তাকে নিরাপদে নীচে নামিয়ে আনে ৷ ব্যস ! সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের খপ্পরে ৷ এখন সে পুলিশি হেফাজতে এবং তাকে জেরা করছে পুলিশ ৷
আরও পড়ুন: চুরি করতে এসে নোটের বান্ডিলকে চুমু খেল চোর, সঙ্গে করল প্রণামও; দেখুন ভিডিয়ো