চেন্নাই, 22 জুলাই: তাঞ্জাভুরের (Thanjavur) মহারাজা দ্বিতীয় সরফরোজি (Maharaja Serfoji II) এবং তাঁর ছেলে দ্বিতীয় শিবাজীর (Sivaji II) একটি ছবি বহু বছর আগে তামিলনাড়ুর সরস্বতী মহল (Saraswathi Mahal) থেকে চুরি হয়ে গিয়েছিল ৷ পরবর্তীতে আমেরিকার একটি সংগ্রহশালায় পাচারের পথে সেটি খুঁজে পাওয়া যায় ৷ ঘটনাটি ঘটে 2006 সালে ৷ কিন্তু, তারপরও প্রাচীন ওই ছবিটি ভারতে ফিরিয়ে আনার কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি ! ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে আঁকা এই মহামূল্যবান চিত্রকর্মটি সম্প্রতি শনাক্ত করেছে তামিলনাড়ু পুলিশের বিশেষ বাহিনী ৷ যত দ্রুত সম্ভব ছবিটিকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে ৷ শুক্রবার একথা জানিয়েছেন, ডিজিপি কে জয়নাথ মুরলী (K Jayanth Murali) ৷
তাঞ্জাভুরের ভোঁসলে রাজ বংশের প্রতিনিধি সরফরোজির মৃত্যু হয় 1832 সালে ৷ তাঁর একমাত্র ছেলে শিবাজী 1855 সাল পর্যন্ত রাজত্ব করেন ৷ কিন্তু, তাঁর আর কোনও উত্তরসূরি ছিল না ৷ রাজার পুত্র সন্তান না থাকায় তাঁর রাজত্বের দখল নেয় শাসক ইংরেজ ৷ লর্ড ডালহৌসির নির্মম 'স্বত্ত্ববিলোপ নীতি'র শিকার হয় এই রাজ্য ৷ ঐতিহাসিকদের একাংশের অভিমত, যে চিত্রটি নিয়ে এখানে কথা বলা হচ্ছে, সেটি 1822 থেকে 1827 সালের মধ্যে আঁকা হয়েছিল ৷ তারপর সরস্বতী মহলে সংরক্ষিত করে রাখা হয়েছিল ছবিটি ৷ 1918 সালে এই প্রাসাদের গ্রন্থাগারটি সাধারণ দর্শকদের জন্য খুলে দেওয়া হয় ৷
আরও পড়ুন: Diamonds Found in Panna: পান্নায় কোটি টাকার হিরে উদ্ধার, তোলা হবে নিলামে
তামিলনাড়ু পুলিশের সংশ্লিষ্ট শাখা তাদের তদন্তে জানতে পেরেছে, উনবিংশ শতাব্দীর এই ছবিটি আমেরিকার ম্য়াসাচুসেটসের পিবডি এসেক্স মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ কিনেছিল ৷ ছবিটি তারা কিনেছিল সুবাস কাপুর নামে এক ডিলারের কাছ থেকে ৷ 2006 সালে এর জন্য সংশ্লিষ্ট মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষকে দিতে হয়েছিল 35 হাজার মার্কিন ডলার ৷ এর পাঁচ বছর পর 2011 সালে ফ্রাঙ্কফুর্ট বিমানবন্দরে সুবাসকে গ্রেফতার করা হয় ৷ তাঁর বিরুদ্ধে ভারতের প্রাচীন বহু শিল্পকর্ম বিদেশে পাচারের অভিযোগ ছিল ৷
প্রসঙ্গত, ছবিটি 2006 সালের অনেক আগেই কোনওভাবে সুবাসের হাতে চলে গিয়েছিল ৷ সুবাস সেটিকে তাঁর নিউ ইয়র্কের গ্যালারিতে ঝুলিয়ে রেখেছিলেন ৷ সেখান থেকেই মার্কিন সংগ্রহশালা সেটি কেনে ৷ তারা জানত না যে ছবিটির আসল মালিক সুবাস নন ৷ এবং সেটি আদতে চোরাই মাল ! পরবর্তীকালে স্থানীয় তদন্তকারী সংস্থার সহযোগিতায় এই ছবিটি উদ্ধার করা হয় ৷ এমনকী, সেটিকে ভারতে ফেরানোর বিষয়েও আগ্রহী ছিল তারা ৷ 2015 সালেই ছবিটি ভারতকে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল ৷ কিন্তু, তারপর ভারতের তরফে আর কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি ৷ এই প্রেক্ষাপটে এত দিন পর এই ছবিটিকে শনাক্ত করেছে তামিলনাড়ু পুলিশ ৷ দ্রুত যাতে সেটিকে ভারতে ফিরিয়ে আনা যায়, সেই প্রচেষ্টা শুরু করা হয়েছে ৷ এই উদ্যোগ সফল হলে আবারও সরস্বতী মহলেই ফিরে আসবে শতাব্দী প্রাচীন এই শিল্পকর্ম ৷