নয়াদিল্লি, 11 মার্চ: শিশু বয়সে যৌন নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল তাঁকেও ! আর যিনি তাঁর উপর এই নির্যাতন চালাতেন, তিনি আর কেউ নন, স্বয়ং তাঁর জন্মদাতা বাবা ! শনিবার এমনটাই দাবি করেছেন দিল্লি মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন (Chairperson of Delhi Commission for Women) স্বাতী মালিওয়াল (Swati Maliwal on her Sexual Harassment) ৷ তাঁর দাবি, তিনি যখন ছোট ছিলেন, তাঁর বাবা তাঁকে নিয়মিত যৌন নিগ্রহ করতেন ! কোমরের বেল্ট খুলে একরত্তি স্বাতীকে মারতেন তিনি ! যতক্ষণ না স্বাতী রক্তাক্ত হতেন, ততক্ষণ এই মার চলত ! বাবার এমন আচরণে ভয়ে সিঁটিয়ে থাকতেন স্বাতী ৷ রাতের পর রাত কাটাতেন জেগে ! স্বাতীর মুখে এই কথা শুনে তাজ্জব হয়ে গিয়েছে তমাম ভারতবাসী ৷ ইতিমধ্য়েই সংবাদমাধ্যম এবং সোশাল মিডিয়ায় এ নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে ৷
এদিন একটি পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যোগদান করেন স্বাতী ৷ সেই অনুষ্ঠানের মঞ্চে দাঁড়িয়েই স্বাতী বলেন, "আমার বাবা আমাকে নিয়মিত যৌন নিগ্রহ করতেন ৷ যখনই তিনি বাড়িতে আসতেন, আমি ভয়ে কুঁকড়ে যেতাম ৷ আমার এখনও সেই রাতগুলো মনে আছে ৷ যখন আমি ভয়ে কাঁপতাম, চাদরের নীচে নিজেকে আড়াল করতাম ৷ আমি খালি একটাই কথা ভাবতাম, কীভাবে এমন মানুষকে উচিত শিক্ষা দেওয়া যেতে পারে !"
মঞ্চে কথা বলতে গিয়ে এদিন আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন স্বাতী ৷ তিনি বলেন, "সেই দিনগুলো আমি কোনও দিন ভুলব না ৷ আমার বাবা খুব রেগে বাড়ি ফিরতেন এবং কোনও কারণ ছাড়াই আমাকে মারতে শুরু করে দিতেন ৷ তিনি আমার চুলের মুঠি ধরে আমার মাথা দেওয়ালে ঠুকে দিতেন ৷ আমি রক্তাক্ত হয়ে পড়তাম ৷ কিন্তু, তারপরও ভাবতাম, কীভাবে এই ধরনের মানুষকে আমি উচিত শিক্ষা দিতে পারি ! যদি আমার মা, কাকু, কাকিমা এবং আমার দাদু, দিদা ও ঠাকুরদা, ঠাকুমা পাশে না থাকতেন, তাহলে কোনও দিন আমি ছোটবেলার সেই ভয় থেকে বের হতে পারতাম না ৷ আমি জীবনে যা কিছু অর্জন করেছি, সেটা ওঁদের ছাড়া পারতাম না ৷"
আরও পড়ুন: 4 বছরের শিশুর উপর যৌন অত্যাচার, কাঠগড়ায় 16 বছরের কিশোর !
স্বাতী মনে করেন, যখন কোনও মানুষের উপর অত্যাচার করা হয়, আসলে সেই অত্যাচার অত্যাচারিত মানুষটির মধ্য়ে একটি আগুন জ্বালিয়ে দেয় ৷ আর যদি সেই আগুনকে সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, তাহলে একদিন সেই অত্যাচারিত মানুষটিই জীবনে অনেক কিছু অর্জন করেন ৷ এরপরই স্বাতী বলেন, "আজ যাঁরা এখানে পুরস্কার পেলেন, তাঁদের সকলেরই অতীতে একটি শক্তিশালী কাহিনি রয়েছে ৷ এঁদের প্রত্যেকের অতীতে রয়েছে এমন অনেক লড়াইয়ের গল্প ৷ এঁরা জানেন, কীভাবে সংগ্রাম করে জীবনের চ্যালেঞ্জগুলিকে পার করে যেতে হয় ৷ এঁরা এঁদের জীবন ভালোর জন্য পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছেন ৷"