নয়াদিল্লি, 13 জুলাই: সম্প্রতি বেআইনি নির্মাণের অভিযোগে একের পর এক ইমারত ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকার (Uttar Pradesh Demolition) ৷ মধ্যপ্রদেশেও একই ঘটনা ঘটেছে ৷ অন্তর্বর্তী রায় ঘোষণা করে এই ধরনের পদক্ষেপ ঠেকানো সম্ভব কিনা, এবার সেই প্রশ্নই তুলল দেশের শীর্ষ আদালত (Supreme Court) ৷ উত্তরপ্রদেশ সরকারের বুলডোজার নীতি নিয়ে ইতিমধ্যেই সারা দেশে সমালোচনা শুরু হয়েছে ৷ এ নিয়ে সুপ্রিমকোর্টে মামলা রুজু করেছে জমিয়ত-উলেমা-ই-হিন্দ (Jamiat Ulema-e-Hind) নামে একটি সংগঠন ৷ তার প্রেক্ষিতেই অন্তর্বর্তীকালীন রায় ঘোষণা সংক্রান্ত প্রশ্নটি তুলেছে আদালত ৷ আগামী 10 অগাস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি ৷
বুধবার বিচারপতি বি আর গাভাই এবং বিচারপতি পি এস নরশিমার এজলাসে মামলাটি শুনানির জন্য ওঠে ৷ বিচারপতিরা মামলার সমস্ত পক্ষকে তাদের সম্পূর্ণ সওয়াল পেশ করতে বলেছেন ৷ একইসঙ্গে জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী 10 অগস্ট মামলাটি ফের শুনবেন তাঁরা ৷ এই প্রসঙ্গেই আদালতের পর্যবেক্ষণ হল, "আইনের শাসন সর্বদাই মেনে চলতে হবে ৷ সেখানে কোনও গরমিল নেই ৷ কিন্তু, আমরা কি সর্বজনীনভাবে কোনও নির্দেশ জারি করতে পারি ? আমরা যদি তেমনটা করি, তাহলে কি আমরা প্রশাসনকে আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া থেকে বিরত করব না ?"
আরও পড়ুন: SC Notice to UP Govt : যোগী সরকারকে 'বুলডোজার' নোটিশ সুপ্রিম কোর্টের, তিন দিনের মধ্যে জবাব তলব
মামলাকারী সংগঠনের আবেদন ছিল, আগামিদিনে আর যাতে কোনও ঘটনায় কোনও অভিযুক্তের ঘর, বাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে না দেওয়া হয়, তা নিশ্চিত করতে উত্তরপ্রদেশ-সহ সংশ্লিষ্ট অন্য রাজ্যগুলিকেও নির্দেশ দিক সুপ্রিম কোর্ট ৷ মামলাকারীদের হয়ে আদালতে সওয়াল করেন প্রবীণ আইনজীবী দুষ্যন্ত দাভে (Senior Advocate Dushyant Dave) ৷ তাঁর অভিযোগ, বেআইনি নির্মাণ ভাঙার নামে আদতে একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মানুষকেই নিশানা করা হচ্ছে ৷ যার জবাবে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা (SG Tushar Mehta) বলেন, "মিস্টার দাভে, এখানে কোনও বিশেষ সম্প্রদায় নেই ৷ একটিই সম্প্রদায় আছে ৷ সেটি ভারতীয় সম্প্রদায় ৷" এমনকী, এই ঘটনাগুলি নিয়ে অহেতুক হইচই করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন সলিসিটর জেনারেল ৷
এ নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ দু'পক্ষের মধ্য়ে বাদানুবাদ চলে ৷ তা শোনার পর আদালত জানায়, আইন সকলকেই মেনে চলতে হবে ৷ এ নিয়ে কোনও দ্বিমত নেই ৷ কিন্তু, আদালত কোনও অন্তর্বর্তী রায় ঘোষণা করলে আগামী দিনে তার ফল কী হবে, সেটাও যে ভেবে দেখা দরকার, সেই বার্তাও দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট ৷ এরপরই সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিজেদের বক্তব্য পেশ করার নির্দেশ দেয় বেঞ্চ ৷ সেইসঙ্গে, শুনানির পরবর্তী দিনও জানিয়ে দেওয়া হয় ৷