নয়াদিল্লি, 27 সেপ্টেম্বর: এন চন্দ্রবাবু নাইডুর মামলা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেন সুপ্রিম কোর্টের এক বিচারপতি ৷ অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু 371 কোটি টাকার দুর্নীতি মামলায় সম্প্রতি গ্রেফতার হয়েছেন ৷ এই মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছিল 2021 সালের 8 সেপ্টেম্বর ৷
এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে পালটা মামলা করেছিলেন চন্দ্রবাবু নাইডু ৷ সেই মামলার শুনানি আজ, বুধবার বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং এসভিএন ভাট্টির সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চের সামনে হওয়ার কথা ছিল ৷ শুনানির শুরুতে বিচারপতি খান্না বলেন, "আমার ভাইয়ের (বিচারপতি ভাট্টি) বিষয়টির শুনানির বিষয়ে কিছু আপত্তি আছে... ৷"
নাইডুর হয়ে সুপ্রিম কোর্টে শুনানিতে হাজির ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী হরিশ সালভে ৷ তিনি জানান যে তিনি এই সম্পর্কে কিছু বলতে পারবেন না ৷ তিনি আদালতকে অনুরোধ করেছেন যে বিষয়টিকে অন্য বেঞ্চে পাঠানোর জন্য । বিচারপতি খান্না জানান, বিষয়টি আগামী সপ্তাহে শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত হতে পারে । সিনিয়র অ্যাডভোকেট সিদ্ধার্থ লুথরা, সুপ্রিম কোর্টে নাইডুর পক্ষে উপস্থিত হয়ে বেঞ্চকে অনুরোধ করেন যে তাঁকে ভারতের প্রধান বিচারপতির সামনে এই বিষয়টি উল্লেখ করার অনুমতি দেওয়া হোক ।
বিচারপতি খান্না বলেন, "আপনি যদি এটা করতে পারেন, তবে আপনি এটা করতে পারেন । আমরা কি এটি অন্যত্র পাঠিয়ে দেব ?" সালভে জানান, বেঞ্চ যদি এটি শুনতে আগ্রহী না হয়, তবে সেটা অন্যত্র পাঠিয়ে দেওয়া ঠিক হবে না । বিচারপতি খান্না জানান, লুথরা এই অনুরোধ করেছেন । নাইডুর আইনজীবীরা আজই অন্য একটি বেঞ্চের সামনে শুনানির চেষ্টা করছেন ।
নাইডুর আবেদনে বলা হয়েছে যে 21 মাস আগে নথিভুক্ত করা এফআইআর-এ হঠাৎ তাঁর নাম করা হয়েছিল ৷ ‘অবৈধ’ উপায়ে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণেই তাঁকে হেনস্তা করা হচ্ছে । নাইডুর অভিযোগ, অন্ধ্রপ্রদেশের বৃহত্তম বিরোধী দল তেলগু দেশম পার্টিকে কোণঠাসা করতে ওই রাজ্যের শাসক দল এই অভিযোগ সাজিয়েছে ৷ সুপ্রিম কোর্টে করা আবেদনে জানানো হয়েছে যে আবেদনকারী (চন্দ্রবাবু নাইডু) বর্তমানে বিরোধী দলনেতা, তেলেগু দেশম পার্টির (টিডিপি) জাতীয় সভাপতি এবং অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ৷ 14 বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করেছেন ৷ তাঁকে একটি এফআইআর-এ বেআইনিভাবে হেফাজতে রাখা হয়েছে এবং তদন্ত করা হচ্ছে৷ যা আইনত নিষিদ্ধ ।
আবেদনে দাবি করা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের পাশাপাশি বিভিন্ন হাইকোর্ট বলেছে যে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতীত কোনও পুলিশ অফিসার কোনও জনপ্রতিনিধির দ্বারা করা কোনও অপরাধের কোনও অনুসন্ধান বা তদন্ত করতে পারেন না, যেখানে অপরাধটি এই জাতীয় জনপ্রতিনিধির দ্বারা নেওয়া কোনও সুপারিশ বা সিদ্ধান্তের সঙ্গে সম্পর্কিত ।
আবেদনে আরও বলা হয়েছে, "...এই ধরনের অনুমোদন ব্যতীত, যে কোনও অনুসন্ধান বা তদন্ত অকার্যকর হবে... শাসকের প্রতিশোধ ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা মূলক রাজনীতির বর্তমান ছবিটাই 17-এ ধারা প্রাসঙ্গিক করে, যেখানে নিরপরাধ ব্যক্তিদের সুরক্ষা দেওয়া চায় । এই ধরনের অনুমোদন ছাড়াই তদন্তের সূচনা পুরো কার্যধারাকে বিঘ্নিত করে এবং এটি একটি এক্তিয়ারগত ত্রুটি ৷"
আবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে যে দেরিতে আবেদন করেও গত 11 সেপ্টেম্বর নাইডুকে পুলিশি হেফাজত দেওয়া হয়েছে ৷ এর থেকেই রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বিষয়টি স্পষ্ট হয় ৷ 2024 সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে বিরোধী টিডিপি কোণঠাসা করতেই এই কাজ করছে ক্ষমতাসীন দল ৷
আরও পড়ুন: 14 দিনের জেল হেফাজত চন্দ্রবাবুর, অন্ধপ্রদেশে জারি 144 ধারা