নয়াদিল্লি, 31 অক্টোবর: ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণের জন্য আর করা যাবে না 'টু ফিঙ্গার টেস্ট' (Two Finger Test) ৷ সোমবার এমনই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) ৷ এই প্রসঙ্গে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ হল, যাঁরা ধর্ষণের শিকার হন, তাঁদের আনা অভিযোগ প্রমাণ করার জন্য আজও টু ফিঙ্গার টেস্ট করা হয় ! সমাজে এখনও এই পরীক্ষার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে ! এটি সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক ৷ এরপরই আদালত কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকারগুলির উদ্দেশে নির্দেশ দেয়, আগামী দিনে আর এই পরীক্ষা করা যাবে না ৷
ঝাড়খণ্ডের একটি ধর্ষণ ও খুনের মামলা প্রসঙ্গে এই রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট ৷ বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি হিমা কোহলির বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠা এই মামলাটিতে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে প্রথমে দোষী সাব্যস্ত করে নিম্ন আদালত ৷ সেই রায়ের বিরোধিতায় ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টে পালটা মামলা রুজু করা হয় ৷ হাইকোর্ট অভিযুক্ত ব্যক্তিকে বেকসুর খালাস করে দেয় ৷ কিন্তু, সুপ্রিম কোর্ট তার পর্যবেক্ষণে জানায়, প্রাচীনপন্থী টু ফিঙ্গার টেস্টের উপর ভিত্তি করে এই রায় দিয়েছে ঝাড়খণ্ড হাইকোর্ট ৷ টু ফিঙ্গার টেস্ট যেকোনও নারীর মর্যাদা ও গোপনীয়তার অধিকারের বিরোধী এবং আক্রমণাত্মক একটি প্রক্রিয়া ৷
আরও পড়ুন: 'যৌন নিগ্রহের শিকার' নাবালিকাকে ভবিষ্যতে বিয়ের শর্তে অভিযুক্তকে জামিন
এই প্রসঙ্গে আদালতের বক্তব্য হল, আজকের সমাজেও ধর্ষণের প্রমাণ পেতে এই পরীক্ষাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয় ৷ তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ৷ তাছাড়া, যে মহিলা নিয়মিত যৌন সম্পর্ক স্থাপনে অভ্যস্থ, তাঁকে যে কখনও ধর্ষণ করা হবে না, এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই ৷ সেক্ষেত্রে টু ফিঙ্গার টেস্টের যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে আদালত ৷
এরপরই কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্যের সরকারগুলির উদ্দেশে একটি নির্দেশিকা জারি করে শীর্ষ আদালত ৷ তাতে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, এবার থেকে আর ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়ার জন্য টু ফিঙ্গার টেস্ট করা যাবে না ৷ এই নির্দেশিকার পরও যদি কোনও ব্যক্তি টু ফিঙ্গার টেস্ট করেন, তাহলে তাঁকে গ্রেফতার করা হবে এবং আইন মাফিক পদক্ষেপ করা হবে ৷
একইসঙ্গে, কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্যগুলির স্বাস্থ্যসচিবকে আরও একটি নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট ৷ তাতে বলা হয়েছে, সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি মেডিক্য়াল কলেজের পাঠ্যসূচি থেকেও টু ফিঙ্গার টেস্ট বাদ দিতে হবে ৷