মালায়াত্তুর (কেরল), 30 অক্টোবর: কেরলের কালামাসেরি বিস্ফোরণ প্রাণ কেড়েছে 12 বছরের লিবিনার ৷ এই খবর শোনার পর থেকেই তার মালায়াত্তুরের বাড়িতে ভিড় জমিয়েছেন গ্রামবাসীরা ৷ ছোট্ট লিবিনার এমন ভয়ানক পরিণতিতে গোটা গ্রাম স্তব্ধ ৷ বিস্ফোরণে মালায়াত্তুর কাতুভানকুঝির বাড়িতে বসবাসকারী তিনজন জখম হয়েছেন ৷
দুর্ঘটনার খবর জানাজানি হওয়ার পর স্থানীয় বাসিন্দারা লিবিনার বাবা প্রদীপের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি আর কোনও তথ্য দেননি । স্থানীয়রা সংবাদমাধ্যমে 12 বছর বয়সি কন্যার মৃত্যুর খবর জানতে পারে । প্রদীপ, তাঁর স্ত্রী এবং তিন সন্তানের পরিবার মালায়াত্তুরের বাড়িতে থাকতেন । প্রদীপ রান্নার কাজ করতেন ৷ জিহোভাস উইটনেসের সম্মেলনে তিনি যোগ দিতে পারেননি । তাঁর স্ত্রী স্যালি এবং তিন সন্তান কালামাসেরি সামরা সেন্টারে জিহোভাস উইটনেসের সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন । দুর্ঘটনায় তিনজন আহত হন । স্যালি ও তাঁর ছেলে কালামাসেরি মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন । তবে লিবিনাকে বাঁচানো যায়নি ৷ তার মৃত্যুর খবর তার মা বা দাদাকে জানানো হয়নি ।
স্যালি এবং তাঁর সন্তানেরা নিয়মিত জিহোভাস উইটনেসের সম্মেলন এবং প্রার্থনায় যোগদান করতেন । লিবিনা মালয়াত্তুরের কাছে এসএনডিপি স্কুল নীলেশ্বরমের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিল । শনি ও রবিবার ছুটির দিন থাকায় স্যালি তাঁর সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন । দু'দিনের ছুটির পর স্কুলে যাওয়ার কথা ছিল লিবিনার ৷ তার আগেই এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে ।
আরও পড়ুন: কেরল বিস্ফোরণের পর চর্চায় জেহভা'স উইটনেসেস ধর্মীয় গোষ্ঠী, দেখে নেওয়া যাক এদের ইতিহাস
নীলেশ্বরম স্কুলের ছাত্ররা তাদের সহপাঠীর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে শোকস্তব্ধ ৷ জানা গিয়েছে, শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে শোক জানাতে স্কুল ছুটি দেওয়া হয়েছে । প্রিয় শিক্ষার্থীকে হারিয়ে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও শোকাহত । যদিও প্রদীপ এবং তাঁর পরিবারের স্থানীয়দের সঙ্গে খুব বেশি যোগাযোগ ছিল না ৷ তবে মেয়েটির করুণ পরিণতি দেখে শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা এলাকায় ৷ মালায়াত্তুর পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিরা ছোট্ট মেয়েটিকে শেষবার দেখার জন্য জনতাদের জন্য দর্শনের ব্যবস্থা করেন ।
বিস্ফোরণে গুরুতর জখম 12 বছরের লিবিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ৷ আজ বেলা 12:40-এ তার মৃত্যু হয় । লিবিনার শরীরের 95 শতাংশ দগ্ধ হয়ে কালামাসেরি মেডিক্যাল কলেজে ভেন্টিলেশনে ছিলেন । কালামাসেরি মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, বিস্ফোরণের দশ মিনিটের মধ্যে মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে এসে চিকিৎসা শুরু করা হয়েছিল, তবু তাঁকে বাঁচানো যায়নি ।
আরও পড়ুন: কেরলের কনভেনশন সেন্টারে বিস্ফোরণে মৃত বেড়ে 2, আহত 52; তদন্তের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর
একইসঙ্গে, নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে যে, গতকাল ঘটনাস্থলে যে ব্যক্তি মারা গিয়েছেন, তিনি কারুপম্পাড়ির বাসিন্দা লায়না । এছাড়াও থুড়ুপুঝার বাসিন্দা মীনাকুমারী, যিনি 90 শতাংশ দগ্ধ হয়েছিলেন, তিনি গতকাল সন্ধ্যায় কালামাসেরি মেডিক্যাল কলেজে মারা যান । জিহোভাস উইটনেসের বার্ষিক সম্মেলনের সময় কালামাসেরি সামরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে বিস্ফোরণে মোট 52 জন আহত হয়েছেন । 16 জন আশংকাজনক অবস্থায় আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ৷