নয়াদিল্লি, 15 অগস্ট : সংসদে সদ্য সমাপ্ত বাদল অধিবেশনের সমালোচনা শোনা গেল দেশের প্রধান বিচারপতি নুথালাপতি ভেঙ্কট রামানার গলায় ৷ তাঁর কথায়, ‘‘এবারের সংসদীয় অধিবশন সরি স্টেট অব অফেয়ার্স (sorry state of affairs) ৷’’ অধিবেশনকে দুঃখজনক বলার পাশাপাশি অধিবেশনের বির্তকগুলির নিম্নমান নিয়েও মন্তব্য করেন তিনি ৷ জনজীবন পুনর্নির্মাণে আইনজীবীদের আহ্বান জানান, যাতে সংসদীয় বিতর্কে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা যায় ৷
সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে এদিন স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিচারপতি বলেন, "আইনে কোনও স্পষ্টতা নেই । আমরা জানি না, কোন উদ্দেশ্যে আইন তৈরি করা হয়েছে । এটি প্রচুর মামলা-মোকদ্দমা, অসুবিধা এবং সরকারি অর্থ অপচয়ের পাশাপাশি জনসাধারণের অসুবিধা তৈরি করছে ৷ এটা তখনই হয়, যখন কক্ষে বুদ্ধিজীবী এবং আইনজীবীদের মতো পেশাদাররা না থাকেন ৷ আগে যে ধরনের বিতর্ক সংসদে হতো সেগুলি বেশ প্রাজ্ঞ এবং গঠনমূলক ছিল ৷ যেকোনও আইন তৈরি করার সময়ই বিতর্ক হত... কিন্তু এখন অবস্থা দুঃখজনক ৷ এখন আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে অনেক ফাঁক, অস্পষ্টতা থেকে যাচ্ছে ৷"
এবারের বাদল অধিবেশন শেষ হয়েছে অপ্রত্যাশিত ভাবে ৷ পেগাসাস স্ন্যুপিং কেলেঙ্কারি, কৃষি আইন এবং অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে সরকার আলোচনার অনুমতি দিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করলে উভয় হাউসেই উত্তেজনা তৈরি হয় ৷ শুধু একটিমাত্রই বিল ঠিকমতো আলোচিত হয়েছে, তা হল 127তম সংবিধান সংশোধনী বিল, 2021 (One Hundred and Twenty-seventh Amendment) Bill, 2021) ৷ রাজ্যসভা এবং লোকসভায় ঘণ্টাখানেকের বেশি আলোচনা হয়েছে এই বিল ৷ এটা ছাড়া আর কোনও বিল নিয়েই আলোচনা ছাড়াই 11 অগস্ট সমাপ্ত হয়েছে অধিবেশন ৷
পিআরএস লেজিসলেটিভ রিসার্চ ডেটা অনুসারে, গত দুই দশক সময়ের মধ্যে এবারের লোকসভা অধিবেশন চতুর্থ সর্বনিম্ন ফলপ্রসূ অধিবেশন ৷ 19 দিন ধরে প্রতিদিন 6 ঘণ্টা করে অধিবেশন চলার কথা ৷ কিন্তু সব মিলিয়ে চলেছে মাত্র 21 ঘণ্টা, যা নির্ধারিত সময়ে মাত্র 21 শতাংশ ৷ 2016 সালের শীতকালীন অধিবেশন নির্ধারিত সময়ের মাত্র 15 শতাংশের পর এটাই সর্বনিম্ন ৷ একই ভাবে রাজ্যসভায় 19 দিন ধরে মোট 112 ঘণ্টা অধিবেশন চলা কথা ছিল ৷ তবে চলেছে মাত্র 29 ঘণ্টা, যা পূর্ব নির্ধারিত সময়ের মাত্র 29 শতাংশ ৷
প্রসঙ্গত, লোকসভা কোনও আইন-বহির্ভূত বিষয় নিয়ে বিতর্ক করেনি । পিআরএস লেজিসলেটিভ রিসার্চ ডেটা অনুসারে, 23,675 কোটি টাকার বিকল্প বাজেট নিয়ে আলোচনা এবং পাশ করার জন্য 9 মিনিট আলোচনা করা হয়েছিল । এর মধ্যেই করোনার জরুরি ব্যবস্থা এবং স্বাস্থ্যের জন্য 15,750 কোটি টাকা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে । রাজ্যসভায় কোভিড-19 নিয়ে পূর্ব সূচি অনুযায়ী একটিমাত্র বিতর্ক হয় ৷ প্রশ্নের জন্য লোকসভায় 35 শতাংশ এবং রাজ্যসভায় 25 শতাংশ সময় নির্ধারিত ছিল ৷ উভয়কক্ষেই মন্ত্রীদের কাছ থেকে মাত্র 20 শতাংশ প্রশ্নের মৌখিক উত্তর পাওয়া গিয়েছে ৷
আরও পড়ুন : Venkaiah Naidu : বিরোধীরা সংসদের পবিত্রতা নষ্ট করেছে ! কেঁদে ফেললেন বেঙ্কাইয়া নাইডু