দিল্লি, 12 জুন: 'ঘৃণামূলক বক্তৃতা এবং ইসলামফোবিয়া' নিয়ে এবার অন্তত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Prime Minister Narendra Modi) মুখ খোলা উচিত ৷ রবিবার এই দাবি তুলেছেন কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা শশী থারুর (Shashi Tharoor) ৷ পয়গম্বর বিতর্ক (Prophet Remarks Row) নিয়ে গোটা দেশে অশান্তি ছড়িয়েছে ৷ ভারত সরকারের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছে আরব দুনিয়া ৷ আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়ে গোটা ঘটনায় সমালোচনার কেন্দ্রে থাকা নূপুর শর্মা এবং নবীন কুমার জিন্দলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপও করেছে কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপি ৷ কিন্তু, তারপরও এ নিয়ে কোনও কথা বলেননি প্রধানমন্ত্রী ৷ তাঁর এই অবস্থান নিয়েই এবার প্রশ্ন তুললেন শশী ৷
এই প্রসঙ্গে শশী বলেন, ইদানিংকালে মুসলিম রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করতে বহু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করেছে ভারত সরকার ৷ কিন্তু, ঘটনায় গোটা প্রক্রিয়াটাই কার্যত বিশ বাঁও জলে চলে গিয়েছে ৷ শশী মনে করেন, যেভাবে একজনের একটি মন্তব্যকে ঘিরে চারিদিকে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে, তা থেকেই বোঝা যাচ্ছে, অবিলম্বে এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ করা দরকার ৷ কংগ্রেস নেতা বলেন, "আমার মনে হয়, আমাদের দেশে যেভাবে বারবার ঘৃণামূলক ভাষণ দেওয়া হচ্ছে এবং ইসলামফোবিয়ার বশবর্তী হয়ে একের পর এক ঘটনা ঘটে চলেছে, তা নিয়ে মুখ খোলার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে এটাই সেরা সময় ৷ কারণ, প্রধানমন্ত্রীর এই মৌনতার কেউ কেউ ভুল ব্যাখ্য়াও করতে পারেন ৷"
আরও পড়ুন: Prophet Remarks Row: পর পর এফআইআর, নূপুর-নবীনকে ডেকে পাঠাল ভিওয়ান্ডি পুলিশ
শশী থারুরের বক্তব্য হল, মোদী নিজে শক্তিশালী ভারত গঠনের কথা বলেন ৷ কিন্তু, বর্তমানে যেসব ঘটনা ঘটে চলেছে, তা প্রধানমন্ত্রীর সেই স্বপ্নের পরিপন্থী ৷ এবং মোদী নিজেও সেটা বোঝেন বলেই বিশ্বাস করেন শশী থারুর ৷ তাঁর কথায়, যে কোনও দেশের উন্নতি এবং অগ্রগতির জন্য সামজিক ঐক্য এবং জাতীয় সংহতি বাঞ্ছনীয় ৷ তাই শুধুমাত্র মুখেই 'সব কা সাথ, সব কা বিকাশ'-এর কথা বললেই হবে না ৷ মোদীকে প্রকাশ্যেই এই ধরনের অনভিপ্রেত আচরণ আটকাতে হবে ৷ এই বিষয়ে সকলকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে ৷
শশী থারুরের সুরে সুর মিলিয়েছেন আর এক কংগ্রেস নেতা তথা দেশের প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদম্বরমও (P Chidambaram) ৷ তাঁর মতে, বর্তমান প্রেক্ষাপটে অশান্তি থামাতে অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ করা উচিত এবং বিষয়টি নিয়ে তাঁর মুখ খোলা উচিত ৷ এই প্রসঙ্গে চিদম্বরম বলেন, "প্রধানমন্ত্রীর এই নীরবতা বিস্ময়কর ৷ কিন্তু, অতীতেও তিনি একই আচরণ করেছেন ৷ দুর্ভাগ্য়ের বিষয় হল, যখন বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ, সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ এবং সাধারণ নাগরিকরা এগিয়ে এসে দেশে ইসলামফোবিয়া দূর করার জন্য সরব হয়েছেন, তখন সরকার বধির হয়ে থেকেছে ৷ কিন্তু, যেই মাত্র 16টি অন্য দেশ একজোট হয়ে ঘটনার প্রতিবাদ করল, তখনই তারা চমকে উঠল !"