চেন্নাই, 20 ডিসেম্বর: লাগতার বৃষ্টির জেরে তামিলনাড়ুতে তৈরি হয়েছে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি। আর তার জেরে কমপক্ষে 10 জনের মৃত্যু হয়েছে ৷ বিগত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি হয়ে চলেছে তামিলনাড়ুতে ৷ আর এতেই জনজীবন কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে ৷ সাধারণ মানুষ বেশ কয়েকদিন ধরে ঘরবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন ৷ এমনকী বেশ কিছু জায়গায় ট্রেনও আটকে রয়েছে ৷ মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা।
সেনাবাহিনীর সাহায্যে রাজ্য সরকার বিভিন্ন জায়গায় উদ্ধারকার্য শুরু করেছে ৷ রবিবার অতিভারী বৃষ্টিতে খুব ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তিরুনেলভেলির দক্ষিণাঞ্চল এবং থুথুকুড়ি জেলা ৷ বহু গ্রাম জলের তলায় তলিয়ে গিয়েছে ৷ সেখানে পৌঁছনো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে ৷
তিরুনেলভেলি এবং আশপাশের বেশ কয়েকটি এলাকায় সড়ক যোগাযোগ ফের স্বাভাবিক হয়েছে ৷ তবে থুথুকুড়ির সঙ্গে যোগাযোগ একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে ৷ বিমানে ওঠানামা এখনও বন্ধ রাখা হয়েছে ৷ বিভিন্ন জায়গায় রেললাইনের ট্র্যাক নষ্ট হয়ে গিয়েছে ৷ অনেক জায়গায় আবার জলের তলায় ডুবে রয়েছে ৷ উদ্ধারকার্যে নেমেছে ভারতীয় বায়ু সেনার হেলিকপ্টার ৷ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে আকাশপথে খাবারের প্যাকেট, জল ফেলা হচ্ছে ৷
অনেক জায়গায় একদিনেই 40 সেমির বেশি বৃষ্টি হয়েছে ৷ কায়ালপট্টিনামে সর্বাধিক 95 সেমি বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস ৷ এছাড়া তামিরাপারানি নদীতে 1.25 লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে ৷ এর ফলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে ৷ বন্যা পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলে বহু জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ ফিরে আসবে বলে জানা গিয়েছে ৷
তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন জানিয়েছেন, খুব দ্রুত উদ্ধারকার্য চালাতে 7 হাজার 33 কোটি টাকা প্রয়োজন ৷ আর অন্যদিকে দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের জন্য 12 হাজার 659 কোটি টাকা দরকার ৷ এছাড়াও তিনি কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংকে আরও হেলিকপ্টার এবং নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েনের জন্য অনুরোধ করেছেন ৷
রাজ্যের মুখ্যসচিব শিবদাস মীনা বলেন, "পুলিশ ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী বা এসডিআরএফের 130 জন উদ্ধারকার্য সামলাচ্ছে ৷ এছাড়া আরও 168 সশস্ত্র বাহিনীর কর্মীরাও এই বিশাল যজ্ঞকাণ্ডে অংশ নিয়েছে ৷ এখনও পর্যন্ত 17 হাজার মানুষকে উদ্ধার করা গিয়েছে ৷ তাঁদের 160টি অস্থায়ী শিবিরে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে ৷ মঙ্গলবার ভারতীয় বায়ুসেনার 9টি হেলিকপ্টার 34 হাজারেরও বেশি খাবার প্যাকেট বিতরণ করেছে ৷"
আরও পড়ুন: