নয়াদিল্লি, 27 জুলাই : পেগাসাস বিতর্কে (Pegasus Spyware) এবার শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হলেন দেশের দুই প্রবীণ সাংবাদিক ৷ গোটা ঘটনায় স্বতন্ত্র তদন্তের আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা ৷ সাংবাদিক এন রাম (N Ram) এবং শশী কুমারের (Sashi Kumar) দাবি, আদালতের কোনও বর্তমান বা অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে দিয়ে এই তদন্ত করানো হোক ৷ আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে শুনানির জন্য উঠবে ৷ একইসঙ্গে মামলাকারীদের আবেদন, আদালত কেন্দ্রকে নির্দেশ দিয়ে জানাতে বলুক, সরকার বা সরকারি কোনও সংস্থার কাছে পেগাসাসের লাইসেন্স রয়েছে কি না ৷ থাকলে সেই লাইসেন্স ব্যবহার করে কোনও ব্যক্তির উপর নজরদারি চালানো হয়েছে কিনা ৷
আরও পড়ুন : Pegasus Spyware : ইজ়রায়েলি সংস্থার ভারতীয় গ্রাহক কে ? টুইটে খোঁচা চিদম্বরমের
মামলাকারীরা তাঁদের আবেদনপত্রে আদালতকে জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিকস্তরে একাধিক সংবাদমাধ্যম পেগাসাস নিয়ে তদন্ত করেছে ৷ তাতে দেখা যাচ্ছে, ভারতের অন্তত 142 জন নাগরিকের ফোনে আড়ি পাতা হয়েছে ৷ সেই তালিকায় অন্যদের পাশাপাশি সাংবাদিকরাও রয়েছেন ৷ এরপরই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ব্যবহৃত মোবাইলগুলির ফরেনসিক পরীক্ষা করানো হয় ৷ সেই পরীক্ষা করে অ্য়ামনেস্ট্রি ইন্টারন্যাশনালের সিকিউরিট ল্যাব ৷ তাতে জানা যায়, সংশ্লিষ্ট মোবাইল ফোনগুলিতে কোনও না কোনও সময়ে হানা দিয়েছিল ইজ়রায়েলি স্পাই সফটওয়্য়ার পেগাসাস ৷
সুপ্রিম কোর্টে রুজু হওয়া এই মামলায় দুই আবেদনকারী তাঁদের বয়ানে জানিয়েছেন, সেনাবাহিনীতে যে ধরনের স্পাইওয়্য়ার ব্যবহার করা হয়, এক্ষেত্রেও নজরদারি চালানোর জন্য তেমনই উচ্চমানের ব্যবস্থাপনা ব্যবহার করা হয়েছে ৷ যা কখনই গ্রহণযোগ্য নয় ৷ এই ধরনের ঘটনা ভারতীয় সংবিধানের 14 নম্বর ধারা অনুযায়ী মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী ৷ তাছাড়া, নজরদারির অভিযোগ সত্যি হলে তা বাক-স্বাধীনতা, জীবনের সুরক্ষা ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার অধিকারকেও খর্ব করেছে ৷
আরও পড়ুন : pegasus snoopgate :পেগাসাসকাণ্ডে অভিষেকের সমর্থনে টুইট কংগ্রেসের; খেলা হবে, বললেন ডেরেক
মামলাকারীদের মতে, চিকিৎসক, উকিল, সাংবাদিক, রাজনীতিক, সমাজকর্মীদের মতো ব্যক্তিত্বের ফোনে আড়ি পাতার ঘটনা আদতে ‘‘খুব গুরুতর বোঝাপড়া ও আপসের’’ ইঙ্গিত ৷ যা বাক-স্বাধীনতার উপর চরম আঘাত হানার সমান ৷ এভাবে রাষ্ট্র বা অন্য কেউ কখনও কারও উপর নজরদারি চালাতে পারে না ৷ এক্ষেত্রে গোটা ঘটনাকে অপরাধমূলক আচরণ হিসাবে গণ্য করার জন্য আদালতের কাছে আর্জি জানিয়েছেন মামলাকারীরা ৷ তথ্যপ্রযুক্তি আইন-সহ ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় একে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে বিবেচনা করারও দাবি করেছেন তাঁরা ৷
প্রসঙ্গত, এর আগে পেগাসাস কাণ্ডে আদালতের নজরদারিতে তদন্তের আবেদন জানিয়েছিলেন এক আইনজীবী ৷ তাঁর আবেদন ছিল, সিট গঠন করে গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখা হোক ৷