ETV Bharat / bharat

বৃষ্টির জল সংরক্ষণে আত্মনির্ভরতা - এমএনআরইজিএস

পাঁচ দশক আগেকার পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা করলে বৃষ্টিপাত কমে গিয়েছে 24 শতাংশ । উষ্ণায়নের জেরে জলবায়ুর খামখেয়ালীপনার প্রভাবে বিভিন্ন দেশ অপ্রত্যাশিত খরা বা বন্যা পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে । জনপ্রতি জলের লভ্যতা হু হু করে কমছে । যখন পরিবেশগত বহু চ্যালেঞ্জ দেশকে গ্রাস করছে, তখন জল সরবরাহে আত্মনির্ভর হতে কেন্দ্র, রাজ্য, স্থানীয় প্রশাসন ও নাগরিকদের একজোট হতে হবে ।

Self-reliance with rainwater conservation
বৃষ্টির জল সংরক্ষণে আত্মনির্ভরতা
author img

By

Published : Mar 24, 2021, 7:01 AM IST

জল শুধু বিশ্বের সমস্ত প্রাণীর জীবনেরই উৎস নয়, সবুজের ছড়িয়ে পড়া এবং কোনও দেশের স্থিতিশীল উন্নয়নেরও উৎস জল । যখন বিশ্বে 210 কোটি মানুষের কাছে নিরাপদ পানীয় জল নেই, যখন বিশ্বের 40 শতাংশ মানুষ জল সঙ্কটের সামনে দাঁড়িয়ে আছে, তখন রাষ্ট্রসঙ্ঘ 2018-2028-কে জলের জন্য পদক্ষেপের দশক বলে ঘোষণা করেছে ।

বিশ্বের 18 শতাংশ মানুষের এবং 15 শতাংশ জীবজন্তুর বসবাস থাকলেও, ভারতে পৃথিবীর মোট জলের উৎসর মাত্র 4 শতাংশই রয়েছে । ভারতে বছরে গড়ে 1170 মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয় । কিন্তু আমরা তার একের পাঁচ অংশও ধরে রাখতে পারি না । সব মিলিয়ে 60 কোটি মানুষ জলসঙ্কটে ভুগছেন ।

নীতি আয়োগের দেওয়া তথ্য বলছে, 2030 সালের মধ্যে জলের চাহিদা দ্বিগুণ হবে, এবং 2015 সালের মধ্যে জলের সঙ্কটের জেরে জিডিপি ছয় শতাংশ কমে যাবে । এই প্রেক্ষাপটে কেন্দ্রীয় জলশক্তি উন্নয়ন মন্ত্রক একটা অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করেছে যা এবছরের নভেম্বরের মধ্যে কার্যকর করা হবে ।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আশ্বাস দিয়েছেন, যে এমএনআরইজিএস-এর পুরো টাকাটাই, দেশের 734টি জেলার 6 লক্ষ গ্রামে বৃষ্টির জল সংরক্ষণের কাজে ব্যবহৃত হবে ।

দেখা গেছে যে 256টি জেলার 1592টি ব্লকে ভূগর্ভস্থ জলস্তর বিপজ্জনকভাবে নেমে গেছে । এই জেলা গুলো রয়েছে তামিনলাড়ু, রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, তেলাঙ্গানা ও অন্যান্য রাজ্যে । বৃষ্টির জল সংরক্ষণ, জলের উৎসগুলোর পুনরুজ্জীবন, ব্যবহৃত জলের পরিশোধন ও পুনর্ব্যবহার, বৃক্ষরোপণ ও এই সম্পর্কিত কাজ ধাপে ধাপে সম্পন্ন হওয়া উচিত । মানুষ যদি হাতে হাত মিলিয়ে শক্তিরূপে এগিয়ে চলে, তাহলে অসম্ভব বলে কিছু নেই।

আমরা সবাই ছোটবেলায় পড়েছি যে সম্রাট অশোক বহু সেচের জলাশয় নির্মাণ করিয়েছিলেন । সেটা অতীতের কথা । বর্তমানে বহু উদাহরণ রয়েছে, যেখানে ইচ্ছাকৃতভাবে বিপজ্জনক সামগ্রী ফেলে জলদূষণ ঘটানো হয় । আমরা নিজেরাই জলের উৎসগুলো নষ্ট করেছি আর সেখানকার ভূমি দখল করে বসেছি ।

ভারতে প্রায় 450টি নদী বয়ে চলে । কিন্তু তাদের অর্ধেকের বেশি জল ব্যবহারের যোগ্য নয় । জলের উৎসে ক্ষতিকর দূষণ সৃষ্টিকারী জিনিস ফেলা সরকারের একদম সহ্য করা উচিত নয় । আনুমানিক 3600 কোটি লিটার বর্জ্য আমাদের জলের উৎসগুলোর মধ্যে ফেলা হয় । যদি তেলাঙ্গানার মতো রাজ্যের সরকারগুলো যুদ্ধকালীন তৎপরতায় জলের উৎসগুলোর পুনরুজ্জীবনের সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে মানুষও সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এগিয়ে আসবে ।

পাঁচ দশক আগেকার পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা করলে বৃষ্টিপাত কমে গিয়েছে 24 শতাংশ । উষ্ণায়নের জেরে জলবায়ুর খামখেয়ালীপনার প্রভাবে বিভিন্ন দেশ অপ্রত্যাশিত খরা বা বন্যা পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে । জনপ্রতি জলের লভ্যতা হু হু করে কমছে । যখন পরিবেশগত বহু চ্যালেঞ্জ দেশকে গ্রাস করছে, তখন জল সরবরাহে আত্মনির্ভর হতে কেন্দ্র, রাজ্য, স্থানীয় প্রশাসন ও নাগরিকদের একজোট হতে হবে ।

জল সংরক্ষণের নির্দিষ্ট অর্থ খরচের ক্ষেত্রে স্বচ্ছ্বতা থাকা দরকার । দেখতে হবে, সঠিক তথ্য যেন সবার কাছে থাকে । সংশ্লিষ্ট অফিসারদের এক্ষেত্রে দায়বদ্ধ করতে হবে । ভারত সফল হতে পারে তখনই, যখন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করে দেশে 428 টিএমসি ফিট বৃষ্টিপাতের অন্তত অর্ধেক ধরে রাখা সম্ভব হবে ।

আরও পড়ুন : জল সংরক্ষণে দ্রুত পদক্ষেপ জরুরি, না হলে বড় বিপদ আসন্ন

যে প্রযুক্তির সাহায্যে সিঙ্গাপুর ও ইজ়রায়েল নিজেদের জলের উৎসগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করছে, এবং যে প্রযুক্তিতে আরব দেশগুলো তাদের বর্জ্য জলের 70 শতাংশ পুনর্ব্যবহার করছে – তাদের থেকে এই প্রযুক্তি নিয়ে ভারতও নিজের জলসম্পদকে শক্তিশালী করতে পারে ।

জল শুধু বিশ্বের সমস্ত প্রাণীর জীবনেরই উৎস নয়, সবুজের ছড়িয়ে পড়া এবং কোনও দেশের স্থিতিশীল উন্নয়নেরও উৎস জল । যখন বিশ্বে 210 কোটি মানুষের কাছে নিরাপদ পানীয় জল নেই, যখন বিশ্বের 40 শতাংশ মানুষ জল সঙ্কটের সামনে দাঁড়িয়ে আছে, তখন রাষ্ট্রসঙ্ঘ 2018-2028-কে জলের জন্য পদক্ষেপের দশক বলে ঘোষণা করেছে ।

বিশ্বের 18 শতাংশ মানুষের এবং 15 শতাংশ জীবজন্তুর বসবাস থাকলেও, ভারতে পৃথিবীর মোট জলের উৎসর মাত্র 4 শতাংশই রয়েছে । ভারতে বছরে গড়ে 1170 মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয় । কিন্তু আমরা তার একের পাঁচ অংশও ধরে রাখতে পারি না । সব মিলিয়ে 60 কোটি মানুষ জলসঙ্কটে ভুগছেন ।

নীতি আয়োগের দেওয়া তথ্য বলছে, 2030 সালের মধ্যে জলের চাহিদা দ্বিগুণ হবে, এবং 2015 সালের মধ্যে জলের সঙ্কটের জেরে জিডিপি ছয় শতাংশ কমে যাবে । এই প্রেক্ষাপটে কেন্দ্রীয় জলশক্তি উন্নয়ন মন্ত্রক একটা অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করেছে যা এবছরের নভেম্বরের মধ্যে কার্যকর করা হবে ।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আশ্বাস দিয়েছেন, যে এমএনআরইজিএস-এর পুরো টাকাটাই, দেশের 734টি জেলার 6 লক্ষ গ্রামে বৃষ্টির জল সংরক্ষণের কাজে ব্যবহৃত হবে ।

দেখা গেছে যে 256টি জেলার 1592টি ব্লকে ভূগর্ভস্থ জলস্তর বিপজ্জনকভাবে নেমে গেছে । এই জেলা গুলো রয়েছে তামিনলাড়ু, রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, তেলাঙ্গানা ও অন্যান্য রাজ্যে । বৃষ্টির জল সংরক্ষণ, জলের উৎসগুলোর পুনরুজ্জীবন, ব্যবহৃত জলের পরিশোধন ও পুনর্ব্যবহার, বৃক্ষরোপণ ও এই সম্পর্কিত কাজ ধাপে ধাপে সম্পন্ন হওয়া উচিত । মানুষ যদি হাতে হাত মিলিয়ে শক্তিরূপে এগিয়ে চলে, তাহলে অসম্ভব বলে কিছু নেই।

আমরা সবাই ছোটবেলায় পড়েছি যে সম্রাট অশোক বহু সেচের জলাশয় নির্মাণ করিয়েছিলেন । সেটা অতীতের কথা । বর্তমানে বহু উদাহরণ রয়েছে, যেখানে ইচ্ছাকৃতভাবে বিপজ্জনক সামগ্রী ফেলে জলদূষণ ঘটানো হয় । আমরা নিজেরাই জলের উৎসগুলো নষ্ট করেছি আর সেখানকার ভূমি দখল করে বসেছি ।

ভারতে প্রায় 450টি নদী বয়ে চলে । কিন্তু তাদের অর্ধেকের বেশি জল ব্যবহারের যোগ্য নয় । জলের উৎসে ক্ষতিকর দূষণ সৃষ্টিকারী জিনিস ফেলা সরকারের একদম সহ্য করা উচিত নয় । আনুমানিক 3600 কোটি লিটার বর্জ্য আমাদের জলের উৎসগুলোর মধ্যে ফেলা হয় । যদি তেলাঙ্গানার মতো রাজ্যের সরকারগুলো যুদ্ধকালীন তৎপরতায় জলের উৎসগুলোর পুনরুজ্জীবনের সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে মানুষও সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এগিয়ে আসবে ।

পাঁচ দশক আগেকার পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা করলে বৃষ্টিপাত কমে গিয়েছে 24 শতাংশ । উষ্ণায়নের জেরে জলবায়ুর খামখেয়ালীপনার প্রভাবে বিভিন্ন দেশ অপ্রত্যাশিত খরা বা বন্যা পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে । জনপ্রতি জলের লভ্যতা হু হু করে কমছে । যখন পরিবেশগত বহু চ্যালেঞ্জ দেশকে গ্রাস করছে, তখন জল সরবরাহে আত্মনির্ভর হতে কেন্দ্র, রাজ্য, স্থানীয় প্রশাসন ও নাগরিকদের একজোট হতে হবে ।

জল সংরক্ষণের নির্দিষ্ট অর্থ খরচের ক্ষেত্রে স্বচ্ছ্বতা থাকা দরকার । দেখতে হবে, সঠিক তথ্য যেন সবার কাছে থাকে । সংশ্লিষ্ট অফিসারদের এক্ষেত্রে দায়বদ্ধ করতে হবে । ভারত সফল হতে পারে তখনই, যখন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করে দেশে 428 টিএমসি ফিট বৃষ্টিপাতের অন্তত অর্ধেক ধরে রাখা সম্ভব হবে ।

আরও পড়ুন : জল সংরক্ষণে দ্রুত পদক্ষেপ জরুরি, না হলে বড় বিপদ আসন্ন

যে প্রযুক্তির সাহায্যে সিঙ্গাপুর ও ইজ়রায়েল নিজেদের জলের উৎসগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করছে, এবং যে প্রযুক্তিতে আরব দেশগুলো তাদের বর্জ্য জলের 70 শতাংশ পুনর্ব্যবহার করছে – তাদের থেকে এই প্রযুক্তি নিয়ে ভারতও নিজের জলসম্পদকে শক্তিশালী করতে পারে ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.