নয়াদিল্লি, 4 অক্টোবর: জমির বদলে চাকরি কেলেঙ্কারির মামলায় রাউজ অ্যাভিনিউ আদালত থেকে বুধবার জামিন পেলেন লালুপ্রসাদ যাদব, তাঁর স্ত্রী রাবড়ি দেবী এবং ছোট ছেলে তেজস্বী যাদব ৷ 50 হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন দেওয়া হয়েছে তাঁদের । এদিন তেজস্বী, লালু যাদব এবং রাবড়ি দেবী জামিনের জন্য রাউজ অ্যাভিনিউ আদালতে হাজির হন। সিবিআইয়ের বিশেষ বিচারক গীতাঞ্জলি গোয়েলের এজলাসে হাজিরা দেন লালুর পরিবার। আদালত এদিন লালুর পরিবার ছাড়াও এই চাকরি দুর্নীতি মামলায় সকল অভিযুক্তকেই জামিন দিয়েছে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে 16 অক্টোবর ।
প্রসঙ্গত, 3 জুলাই সিবিআইয়ের তরফে আদালতে দ্বিতীয় সাপলিমেন্টরি চার্জশিট পেশ করা হয়ছিল ৷ তার উপর ভিত্তি করে 23 সেপ্টেম্বর আদালত বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছিল এবং তাঁকে 4 অক্টোবর আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। তেজস্বী ছাড়াও আদালত লালু যাদব এবং রাবড়ি দেবী-সহ অন্যান্য 17 অভিযুক্তের বিরুদ্ধেও সমন জারি করা হয়েছিল। এর মধ্যে রেলওয়ের তিন আধিকারিকও রয়েছেন। তাঁদের সবাইকে আদালতে হাজির হয়ে জামিনও নিতে বলা হয়।
উল্লেখ্য, 22 সেপ্টেম্বর সিবিআই আদালতকে জানিয়েছিল যে এই মামলায় অভিযুক্ত তিন প্রাক্তন রেল আধিকারিকদের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে অনুমতি পেয়েছে তারা । এর আগে 12 সেপ্টেম্বর তদন্তকারী সংস্থা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদবের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদনের বিষয়টি আদালতকে জানিয়েছিল । 3 জুলাই দাখিল করা দ্বিতীয় সাপলিমেন্টরি চার্জশিটে সিবিআই লালু, তাঁর স্ত্রী রাবড়ি দেবী, ছোট ছেলে ও বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব, পশ্চিম মধ্য রেলওয়ের (ডব্লিউসিআর) তৎকালীন জিএম, দুই সিপিও-সহ 17 জনকে অভিযুক্ত করেছে ।
আরও পড়ুন: দুর্নীতি মামলায় লালুর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল ইডি
এই মামলায় দ্বিতীয় সাপ্লিমেন্টরি চার্জশিটে প্রথমবার তেজস্বীর নাম উঠে আসে । পুরো বিষয়টি 2004 থেকে 2009 সাল পর্যন্ত রেলমন্ত্রী থাকাকালীন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদব মধ্যপ্রদেশের জবলপুরের পশ্চিম-মধ্য রেলওয়ের গ্রুপ ডি নিয়োগের সঙ্গে সম্পর্কিত । লালু ও অন্যান্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রার্থীদের কাছ থেকে জমি নিয়ে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ এনেছে সিবিআই । এটিও অভিযোগ করা হয়েছিল যে জোনাল রেলওয়েতের তরফে এই ধরনের নিয়োগের জন্য কোনও বিজ্ঞাপন বা কোনও গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি ৷ তবুও নিযুক্ত ব্যক্তিরা পটনার বাসিন্দা ছিলেন । তাঁরা মুম্বই, জব্বলপুর, কলকাতা, জয়পুর এবং হাজীপুরে অবস্থিত বিভিন্ন জোনাল রেলওয়েতে ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন ।
আরও পড়ুন: 'চাকরির বদলে জমি' মামলায় দিল্লির আদালতে হাজিরা তেজস্বীর
এর আগে এই মামলায় দিল্লি ও বিহার-সহ অনেক জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়েছিল । সিবিআইয়ের দাবি, তদন্তের সময় উঠে এসেছে যে তৎকালীন রেলমন্ত্রী এমন জায়গাগুলিতে অবস্থিত জমিগুলি অধিগ্রহণ করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন যেখানে তাঁর পরিবারের ইতিমধ্যেই জমির পার্সেল বা জায়গা রয়েছে ৷ তিনি সহযোগী এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করেছিলেন এবং বিভিন্ন জমির মালিকদের রেলওয়েতে গ্রুপ ডি চাকরির প্রস্তাব দিয়ে তাদের জমি দখল করার পরিকল্পনা করেছিলেন ।