ETV Bharat / bharat

দেশের আত্মনির্ভরতার জন্য কৃষকদের উদ্ধার করতে হবে - দেশের আত্মনির্ভরতার জন্য কৃষকদের উদ্ধার করতে হবে

হাম হি কিষান ... হাম হি জওয়ান, বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ করার সময় এই স্লোগানই তুলেছেন কৃষকরা । এই তথ্য স্বীকার করতেই হবে যে একজন সৈনিক যেভাবে তাঁর দেশের সীমান্ত রক্ষা করার কাজ করেন, একই ভাবে একজন কৃষকও দেশের খাদ্যের সুরক্ষার ব্যবস্থা করেন । কৃষকের লাঙল আমাদের সভ্যতার বীজ বপনে সহায়তা করেছিল এবং কৃষিকে জাতীয় সংস্কৃতিতে পরিণত করেছিল ।

দেশের আত্মনির্ভরতার জন্য কৃষকদের উদ্ধার করতে হবে
দেশের আত্মনির্ভরতার জন্য কৃষকদের উদ্ধার করতে হবে
author img

By

Published : Feb 11, 2021, 3:13 PM IST

প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বা বাজার থেকে ঠকে যাওয়ার কারণে একজন কৃষকের যদি তাঁর কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে উৎপাদিত ফসলের ক্ষতি হয়ে যায়, তখন তিনি হয় চুপচাপ সব সহ্য করেন অথবা কীটনাশক খেয়ে নিজেকে মেরে ফেলেন । তাই কেন তিনি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের পথে নেমেছেন, তা কারও না কারও বিবেচনা করে দেখা উচিত ।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দাবি করেছিলেন যে আইনগুলি কৃষকদের সুবিধার জন্য তৈরি করা হয়েছে । তিনি তাঁর এই যুক্তি পেশের জায়গায় সঠিক যে 1971 সালে দেশের প্রায় 51 শতাংশ কৃষকের আড়াই একরেরও কম জমি ছিল এবং বর্তমানে তাঁদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে 68 শতাংশ । তিনি আরও তথ্য পেশ করতে গিয়ে জানিয়েছেন যে দেশে যে সমস্ত কৃষকের জমির পরিমাণ 2 হেক্টরের কম, তাঁদের সংখ্যা 86 শতাংশ । এই ধরনের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের উপকারের লক্ষ্যে মান্ডিগুলিতে সংস্কার করা প্রয়োজন । কারণ, সেই জায়গা মধ্যস্বত্ত্ব ভোগীদের দ্বারা সংক্রামিত হয়ে পড়েছে । সারা দেশে অভিন্ন বাজারে তৈরি হলে দরিদ্র কৃষকের কী লাভ হবে ?

কৃষকদের অবস্থার উন্নতির জন্য যথাযথ সংস্কারের দাবি করছে দেশ । কারণ, গত 25 বছর ধরে দেশে তিন লাখেরও বেশি কৃষক আত্মহত্যা করেছেন । তবে কৃষি আইন তৈরির কোনও পর্যায়ে রাজ্য সরকারগুলি ও কৃষক সংগঠনগুলির সঙ্গে পরামর্শ করেনি কেন্দ্র ৷ আর তা না করে কৃষি আইন কেন্দ্র বলবৎ করায়, তা যথাযথ সংস্কারের আওতায় আসছে না ।

কৃষকরা আশঙ্কা করছেন যে তাঁদের অস্তিত্বই এই নতুন আইনগুলির ফলে সংকটে পড়ে যেতে পারে । প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন যে যদি খারাপ কিছু ঘটে, তাহলে তার দায়িত্ব তিনি নিজের ঘাড়েই নেবেন । কিন্তু তা একেবারেই যথাযথ ব্যাপার নয় । কৃষকরা আর কোনও খারাপ জিনিস সহ্য করার মতো অবস্থায় নেই । দেশের জন্য উপকারী হবে, এমন আইন তৈরি করতে গেলে রাজ্য সরকারকে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলতে হবে । এই বিষয়কে মর্যাদার লড়াই হিসেবে দেখে অবস্থানে অনড় থাকলে চলবে না ।

দেশে সবুজ বিপ্লব তখনই সম্ভব হবে, যখন সরকার কৃষকদের কল্যাণের বিষয়টিকে নিশ্চিত করতে পারবে ৷ লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর আমলে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য দেওয়ার জন্য যে ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল, তার কারণেই দেশে সবুজ বিপ্লব হওয়া সম্ভব হয়েছিল । কৃষি মান্ডি ও এফসিআই এর খাদ্যশস্য সংগ্রহ করার বিষয়টি কৃষকদের কাছে মূল শক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছিল । আর সেই সময় সেটাই বাস্তব পরিস্থিতি হয়ে উঠেছিল । শ্বেত বিপ্লবের জনক হিসেবে খ্যাত ভার্গিজ কুরিয়ান । তিনি দেশের দুগ্ধ শিল্পকে 8 লাখ কোটি টাকার শিল্পে পরিণত করতে সহায়তা করেছিলেন । আর এই মাধ্যমে গ্রামীণ উন্নয়নে এক বিরাট অবদান রেখেছিলেন তিনি । কৃষির জন্য একই ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুসরণ করতে হবে ।

কৃষক সম্প্রদায় আশঙ্কা করছে যে নতুন আইনের ফলে কৃষি ক্ষেত্রে কর্পোরেট সংস্থাগুলির প্রবেশ করার জন্য রাজপথ তৈরি হবে । আর তার ফলে মান্ডি ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে । এফসিআই শস্য সংগ্রহ বন্ধ করে দেওয়ার পরে এমএসপি ব্যবস্থাও বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে তাঁরা আশঙ্কা করছেন । এই আন্দোলন কয়েকটি রাজ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে এবং এর মধ্যে স্বতন্ত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে, তা চিহ্নিত করার পরিবর্তে কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত এমন একটি পরিকল্পনা তৈরি করা যা দেশের কৃষিক্ষেত্রকে স্বনির্ভর করতে সহায়তা করবে ।

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী গত মে মাসে ঘোষণা করেছিলেন যে নাবার্ড আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানির আগে কৃষি ক্ষেত্রে উৎপাদিত শস্যের মূল্য সংযোজনের জন্য এক লাখ কোটি টাকার তহবিল তৈরি করবে । কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে যে কৃষক সম্মান নিধির অধীনে কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে 1.15 লাখ কোটি টাকা জমা দেওয়া হয়েছে । যদি এই পরিমাণ অর্থ হিমঘর তৈরির মতো পরিকাঠামোর মান উন্নয়নের দিকে খরচ করা যেত, তাহলে তা থেকে কৃষকরা আরও অনেক বেশি উপকৃত হতে পারতেন । দেশীয় স্তরে চাহিদা এবং আন্তর্জাতিক বাজারে সুযোগ তৈরির প্রেক্ষিতে একটি পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে । যার জন্য একটি বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া দরকার । ভারতের কৃষকদের তখনই উদ্ধার করা সম্ভব হবে, যখন ড. স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ অনুসারে এমএসপি বাড়ানোর জন্য সরকার যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করবে এবং কৃষিজাত সামগ্রী রপ্তানির মাধ্যমে এমএসপি বৃদ্ধি করার ব্যবস্থা তৈরি করতে পারবে ।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বা বাজার থেকে ঠকে যাওয়ার কারণে একজন কৃষকের যদি তাঁর কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে উৎপাদিত ফসলের ক্ষতি হয়ে যায়, তখন তিনি হয় চুপচাপ সব সহ্য করেন অথবা কীটনাশক খেয়ে নিজেকে মেরে ফেলেন । তাই কেন তিনি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের পথে নেমেছেন, তা কারও না কারও বিবেচনা করে দেখা উচিত ।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দাবি করেছিলেন যে আইনগুলি কৃষকদের সুবিধার জন্য তৈরি করা হয়েছে । তিনি তাঁর এই যুক্তি পেশের জায়গায় সঠিক যে 1971 সালে দেশের প্রায় 51 শতাংশ কৃষকের আড়াই একরেরও কম জমি ছিল এবং বর্তমানে তাঁদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে 68 শতাংশ । তিনি আরও তথ্য পেশ করতে গিয়ে জানিয়েছেন যে দেশে যে সমস্ত কৃষকের জমির পরিমাণ 2 হেক্টরের কম, তাঁদের সংখ্যা 86 শতাংশ । এই ধরনের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের উপকারের লক্ষ্যে মান্ডিগুলিতে সংস্কার করা প্রয়োজন । কারণ, সেই জায়গা মধ্যস্বত্ত্ব ভোগীদের দ্বারা সংক্রামিত হয়ে পড়েছে । সারা দেশে অভিন্ন বাজারে তৈরি হলে দরিদ্র কৃষকের কী লাভ হবে ?

কৃষকদের অবস্থার উন্নতির জন্য যথাযথ সংস্কারের দাবি করছে দেশ । কারণ, গত 25 বছর ধরে দেশে তিন লাখেরও বেশি কৃষক আত্মহত্যা করেছেন । তবে কৃষি আইন তৈরির কোনও পর্যায়ে রাজ্য সরকারগুলি ও কৃষক সংগঠনগুলির সঙ্গে পরামর্শ করেনি কেন্দ্র ৷ আর তা না করে কৃষি আইন কেন্দ্র বলবৎ করায়, তা যথাযথ সংস্কারের আওতায় আসছে না ।

কৃষকরা আশঙ্কা করছেন যে তাঁদের অস্তিত্বই এই নতুন আইনগুলির ফলে সংকটে পড়ে যেতে পারে । প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন যে যদি খারাপ কিছু ঘটে, তাহলে তার দায়িত্ব তিনি নিজের ঘাড়েই নেবেন । কিন্তু তা একেবারেই যথাযথ ব্যাপার নয় । কৃষকরা আর কোনও খারাপ জিনিস সহ্য করার মতো অবস্থায় নেই । দেশের জন্য উপকারী হবে, এমন আইন তৈরি করতে গেলে রাজ্য সরকারকে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলতে হবে । এই বিষয়কে মর্যাদার লড়াই হিসেবে দেখে অবস্থানে অনড় থাকলে চলবে না ।

দেশে সবুজ বিপ্লব তখনই সম্ভব হবে, যখন সরকার কৃষকদের কল্যাণের বিষয়টিকে নিশ্চিত করতে পারবে ৷ লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর আমলে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য দেওয়ার জন্য যে ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল, তার কারণেই দেশে সবুজ বিপ্লব হওয়া সম্ভব হয়েছিল । কৃষি মান্ডি ও এফসিআই এর খাদ্যশস্য সংগ্রহ করার বিষয়টি কৃষকদের কাছে মূল শক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছিল । আর সেই সময় সেটাই বাস্তব পরিস্থিতি হয়ে উঠেছিল । শ্বেত বিপ্লবের জনক হিসেবে খ্যাত ভার্গিজ কুরিয়ান । তিনি দেশের দুগ্ধ শিল্পকে 8 লাখ কোটি টাকার শিল্পে পরিণত করতে সহায়তা করেছিলেন । আর এই মাধ্যমে গ্রামীণ উন্নয়নে এক বিরাট অবদান রেখেছিলেন তিনি । কৃষির জন্য একই ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুসরণ করতে হবে ।

কৃষক সম্প্রদায় আশঙ্কা করছে যে নতুন আইনের ফলে কৃষি ক্ষেত্রে কর্পোরেট সংস্থাগুলির প্রবেশ করার জন্য রাজপথ তৈরি হবে । আর তার ফলে মান্ডি ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে । এফসিআই শস্য সংগ্রহ বন্ধ করে দেওয়ার পরে এমএসপি ব্যবস্থাও বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে তাঁরা আশঙ্কা করছেন । এই আন্দোলন কয়েকটি রাজ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে এবং এর মধ্যে স্বতন্ত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে, তা চিহ্নিত করার পরিবর্তে কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত এমন একটি পরিকল্পনা তৈরি করা যা দেশের কৃষিক্ষেত্রকে স্বনির্ভর করতে সহায়তা করবে ।

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী গত মে মাসে ঘোষণা করেছিলেন যে নাবার্ড আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানির আগে কৃষি ক্ষেত্রে উৎপাদিত শস্যের মূল্য সংযোজনের জন্য এক লাখ কোটি টাকার তহবিল তৈরি করবে । কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে যে কৃষক সম্মান নিধির অধীনে কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে 1.15 লাখ কোটি টাকা জমা দেওয়া হয়েছে । যদি এই পরিমাণ অর্থ হিমঘর তৈরির মতো পরিকাঠামোর মান উন্নয়নের দিকে খরচ করা যেত, তাহলে তা থেকে কৃষকরা আরও অনেক বেশি উপকৃত হতে পারতেন । দেশীয় স্তরে চাহিদা এবং আন্তর্জাতিক বাজারে সুযোগ তৈরির প্রেক্ষিতে একটি পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে । যার জন্য একটি বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া দরকার । ভারতের কৃষকদের তখনই উদ্ধার করা সম্ভব হবে, যখন ড. স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ অনুসারে এমএসপি বাড়ানোর জন্য সরকার যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করবে এবং কৃষিজাত সামগ্রী রপ্তানির মাধ্যমে এমএসপি বৃদ্ধি করার ব্যবস্থা তৈরি করতে পারবে ।

For All Latest Updates

TAGGED:

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.