নয়াদিল্লি, 6 জানুয়ারি : কেন প্রায় 20 মিনিট বিক্ষোভের মুখে আটকে রইল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কনভয় ? বুধবারের ওই ঘটনার পিছনে কারণ খুঁজতে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি তৈরি করল পঞ্জাব সরকার (Punjab Government forms High Level Committee) ৷ অন্যদিকে, এই ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় বড়সড় গাফিলতির অভিযোগ (Prime Minister Narendra Modi's Security Breach Incident) তুলে সরব হয়েছে বিজেপি ৷ উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবিতে শীর্ষ আদালতে (Supreme Court of India) মামলাও রুজু করা হয়েছে ৷ শুক্রবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে (CJI led Bench ) মামলাটির শুনানি হবে ৷ পাশাপাশি, বুধবারের ওই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দও (President Ramnath Kovind) ৷ বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন তিনি ৷
আরও পড়ুন : PM Modi Convoy Stuck: মানা হয়নি এসপিজি গাইডলাইন, পঞ্জাবে প্রধানমন্ত্রীর সফরে নিরাপত্তায় গলদ দেখছে কেন্দ্র
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, বুধবারের ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি তৈরি করছে পঞ্জাব সরকার ৷ কমিটিতে থাকছেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মেহতাব গিল, রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের প্রধান সচিব এবং বিচারপতি অনুরাগ বর্মা ৷ সরকারের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘‘তিনদিনের মধ্যেই এই কমিটি তার তদন্ত রিপোর্ট পেশ করবে ৷’’
প্রসঙ্গত, বুধবার পঞ্জাবের ফিরোজপুরে একটি নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রীর ৷ তার আগে হুসেনিওয়ালায় জাতীয় শহিদ স্মৃতিশৌধেও যাওয়ার কথা ছিল তাঁর ৷ প্রথমে ঠিক ছিল, হেলিকপ্টারে গন্তব্যে পৌঁছবেন তিনি ৷ কিন্তু, আবহাওয়া খারাপ থাকায় পরে সড়কপথে প্রধানমন্ত্রীকে সেখানে পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ৷ কিন্তু, মাঝপথেই আটকে পড়ে মোদির কনভয় ৷ কৃষক বিক্ষোভের জেরে পঞ্জাব হাইওয়ের একটি উড়ালপুলের উপর প্রায় 20 মিনিট আটকে থাকতে হয় দেশের প্রশাসনিক প্রধানকে ৷
গেরুয়া শিবিরের দাবি, পঞ্জাবের কংগ্রেসী সরকারের ষড়যন্ত্রেই প্রধানমন্ত্রীকে মাঝপথে এভাবে আটকে থাকতে হয়েছে ৷ প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে পঞ্জাব সরকারকে কাঠগড়ায় তোলে তারা ৷ আর কংগ্রেসের বক্তব্য হল, সভায় জন সমাগম হবে না বুঝেই কর্মসূচি বাতিল করেন মোদি ৷ পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চান্নিও (Punjab CM Charanjit Singh Channi) বিজেপির তোলা যাবতীয় অভিযোগ ইতিমধ্যেই খারিজ করে দিয়েছেন ৷ কৃষকদের অবস্থান বিক্ষোভকে প্রধানমন্ত্রী নিরাপত্তায় ‘গাফিলতি’ বলে মানতে রাজি নন তিনি ৷
এই প্রসঙ্গ চরণজিৎ বলেন, ‘‘এটা গণতন্ত্র ৷ এখানে সব মানুষেরই বিক্ষোভ দেখানোর অধিকার রয়েছে ৷ তাই মানুষ প্রতিবাদ করে ৷ বিজেপি নেতারা সাংবাদিক বৈঠক করে বিষয়টিকে অন্যদিকে ঘোরানোর চেষ্টা করছেন ৷ কিন্তু, আদতে এর মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই ৷ মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন ৷ সেখানে প্রধানমন্ত্রীর প্রাণ সংশয়ের মতো কোনও ঘটনাই ঘটেনি ৷ অথচ সেটাকেই প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় গাফিলতির তকমা দেওয়া হচ্ছে ৷ আমরা আগেই জানিয়েছিলাম, আবহাওয়া ভাল নয় ৷ তাই প্রধানমন্ত্রীর সফর প্রয়োজনে স্থগিত করা হোক ৷ কিন্তু, ওঁরা সড়কপথে আসার সিদ্ধান্ত নেন ৷’’ পাশাপাশি, মুখ্যমন্ত্রী এটাও মনে করিয়ে দেন, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় স্থানীয় পুলিশের এক্তিয়ার আগেই কমিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ গোটা বিষয়টাই কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি দেখে ৷ তবে চান্নি যাই বলুন না কেন, বুধবারের ঘটনার জেরে তাঁর পদত্যাগের দাবিতে সরব হয়েছে বিজেপি ৷
আরও পড়ুন : Narendra Modi's Security Lapse : নিরাপত্তা ইস্যুতে কর্মসূচি বাতিল করে ভাটিন্ডায় ফিরল মোদির কনভয়
এদিকে, ঘটনার রেশ গড়িয়েছে দিল্লি পর্যন্ত ৷ প্রবীণ আইনজীবী মণীন্দর সিং (Maninder Singh) এই প্রসঙ্গে বলেন, জেলাশাসক পর্যায়ের কাউকে দিয়ে বুধবারের ঘটনার তদন্ত করানো উচিত ৷ যাতে ভবিষ্যতে কখনও এমন ঘটনা না ঘটে ৷ বিষয়টি শীর্ষ আদালতের গোচরে আনা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন মণীন্দর ৷ সুপ্রিম কোর্টে রুজু হয়েছে মামলা ৷ শুক্রবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে মামলাটি শুনানির জন্য উঠবে ৷ অন্যদিকে, বুধবারের ঘটনা জানার পরই প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ৷ বৃহস্পতিবার সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন তিনি ৷ প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকেই শুনে নেন সেই 20 মিনিটের অভিজ্ঞতা ৷